1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
—- নবীনের কাছে যাই —- মুক্তকথা
বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৪ পূর্বাহ্ন

—- নবীনের কাছে যাই —-

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : শুক্রবার, ২ মার্চ, ২০১৮
  • ৮৩৬ পড়া হয়েছে

-শামসুল হোসেন চৌধুরী

সকাল হইতে কেশের পক্কতা লুকানোর অভিপ্রায়ে ব্যাপৃত রহিয়াছি।
কেশ বলিতে যৎসামান্য যা এখনো অবশিষ্ট রহিয়াছে। তাহারা বোধকরি এ মস্তকে একদা স্বগৌরবে বিচরণরত ছিল, এই কথার সাক্ষ্য স্বরূপ এখনো নদী চরে শরতের কাশবনের ন্যায় শিকড় আকড়াইয়া শুভ্রতা ছড়াইতেছে, তাহা না হইলে কবেই এ মস্তকে ষোলকলা পুর্ন চন্দ্রের উদয় হইত, কিন্তু না এখনো তাহা হয় নাই আবার রক্ষাও হয় নাই; উজাড় হইয়া যাওয়া বনভূমির মত রূপ লইয়াছে বলা যায়। যাহা হউক, সকলেই বলিবেন এই বয়সে চুলতো পাকিবেই অতি সাধারণ ঘটনা ইহা লুকাইবার এত কি প্রয়োজন হইল, হৃদয়ে অন্যরূপ কোন বাসনা উঁকি দিতেছে কী দাদা?
আহারে হৃদয়! আহারে বাসনা! বাসনারতো শেষ নাই তবে হৃদয় বাসনা তাহাতো অনেক কাল পূর্বেই লোপ পাইয়াছে, যদিও হৃদয়ের ‘বৃদ্ধ বসন্ত ‘সাপ মরিবার পূর্বে যেভাবে মোচড় দিয়া থাকে সেই রূপে নিজে জীবীত প্রমানের জন্য মোচড় দিয়া যাইতেছে মরিতেছেনা আবার প্রবল বিক্রমে ফনাও তুলিতে পারিতেছ না, একে একে সকল পাপড়ি ঝরিয়াছে, নতুন বৃষ্টির দেখা না মিলায় নতুন পাপড়িও যোগ হয় নাই। শুধু বোঁটাটুকু বৃন্তের সহিত ঝুলিয়া থাকিয়া পতন অপেক্ষাকরিতেছে। এই হৃদয়ে কি বাসনার জন্ম হয়? এ হৃদয় দিয়া ফুল পাখি প্রজাপতি দেখা যায় বটে কিন্তু নিবেদন? নৈব নৈবচ।
তাহা হইলে বৃদ্ধ কালে কেন এই যুবা সাজের ব্যার্থ প্রয়াস?

ইহা প্রশ্ন বটে, সে কথাই বলিতেছি—

আমার ‘নাতি’ তাহার দুই বৎসর চলিতেছে। হাটিয়া চলিয়া বেড়ায়। আমার সাথে এখনো তেমন সখ্য গড়িয়া উঠে নাই। কোলে নিতে চাহিলে সে ক্ষনিক চাহিয়া লয় তারপর কখনো আসে কখনো আসেনা। সেদিন সকালে রাতের পোষাকেই কাছের দোকানে যাইব বলিয়া বাহির হইতেছি। তখনই তাহাকে দেখিলাম তার মা’ এর কোলে, আমি নিতে চাহিলাম কিন্তু সে তাৎক্ষনিক মায়ের বুকে মুখ লুকাইল, কিছুতেই আর ফিরিল না স্পর্শ করিতে গেলে কাঁদিয়া উঠিল।
ভাবিলাম তাহার রাতের ঘুম শুদ্ধমত এখনো কাটে নাই তাই আর টানা টানি করিলাম না, একই দিন অপরাহ্নে আমি যখন কোট প্যান্ট পরিধান করিয়া বাহির হইতেছি দেখিলাম তাহাকে সাজ পোষাক করিয়া বাবা মায়ের সহিত কোথাও যাইবার জন্য প্রস্তুত হইতেছে। আমি হাত বাড়াইলাম দেখিলাম কাল বিলম্ব না করিয়া কোলে আসিল, আদর চাহিলে মুখ খানা বাড়াইয়া দিল। সব কথার প্রতিউত্তরে কেবল হ্যাঁ এবং না বলিল। ভাষা, এ পর্যন্তই সে আয়ত্ব করিতে পারিয়াছে। দোকানে যাইবে কি না জিজ্ঞাসা করিলে অপার আনন্দে তার চোখ মুখ নাচিয়া উঠিল এবং সিঁড়ির দিকে ঈশারা করিল। তাকে লইয়া দোকানে গেলাম।
ছোট্ট আঙ্গুলি দিয়া শো’কেসের অভ্যন্তরে সাজানো চকলেটের সারি হইতে একটি দেখাইয়া দিল আর ঝুলন্ত চিপস হইতে একটা চিপস দেখাইল, ওগুলো তাহাকে কিনিয়া দিলাম। খুশীতে তাহার উদ্বেলিত মুখোমন্ডল,
হাসিয়া গলিয়া এমন ভাব করিল যে, যেন তার কৃতজ্ঞতার সীমা নাই। কোলে করিয়াই গৃহে ফিরিলাম। এবারে সে কোল হইতে নামিয়া গেল, দুই হাতে দুটি জিনিস লইয়া পৃথিবীর সকল আনন্দ যেন সে মুষ্ঠিবদ্ধ করিয়াছে, ওয়ার্ল্ড কাপ এ গোল করা খেলায়ারের মত হাটিয়া দৌড়াইয়া ছুটিয়া আসিয়া মা – বাবার কোলে ঝাপাইয়া পড়িল। মুখে শুধু কহিল দাদা, দাদা। মানে দাদা দিয়াছেন।
নিজ আনন্দ ছাড়াইয়া তাহার আনন্দে আমি অতিশয় আনন্দিত হইলাম, আপ্লুত হইলাম। তখন সকালের বিষয়টি ভাবিত করিল, ক্ষনিক ভাবিলাম। আর বুঝিতে দেরী হইল না যে ঢিলে ঢালা বৃদ্ধ মানুষ তাহার পছন্দ নয়। তাই আমি নিজেকে ফিটফাট করার প্রয়াশ নিয়াছি ‘নবীন ও প্রবীন’ এর মাঝে সেতুবন্ধ রচনা করার পায়তারা বলিতে পারেন। সেই উদ্দেশ্যে নিজেকে ফিট করিতে গিয়া কতযে নাকানি চুবানি খাইলাম আর বিরূপ অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ হইলাম তাহা এক্ষনে গোপন করিয়া গেলাম কারন তাহাতে লিখার কলেবর বৃদ্ধি পায় ইহা পাঠকের ধৈর্যের সহিত এক প্রকার আপোষ রফা যাহা মাঝে মধ্যে করিতে হয়। তবে বলিয়া রাখি আমার ফিটফাট মন্ত্র কাজে আসিয়াছে। ‘দাদুটি’ এখন অনায়াশে আমার কাছে আসে। নিজের ভাষায় অনেক কথা বলে, অনেক কথা কহিতে চায়। সমস্যা হইল আমরা নিজেদের ছায়ায় শিশুদের নিরাপদে নির্বঘ্নে বড় করিতে চাই, যাহা অত্যন্ত বাস্তব সন্দেহ নাই কিন্তু আমাদের ছায়া জাগতিক জন্জালের অনুপ্রবেশে এতটাই সংকীর্ন হইয়াছে যে শিশুদের বিকাশের জন্যে তাহা বড়ই অপ্রতুল, তাহারা হাপাইয়া যায়। তাহাদের জন্যে চাই খোলা আকাশ, খোলা বাতাস, সংস্কার মুক্ত উদার বিশাল ছায়া।
তবেই না নিস্পাপ শিশু হৃদয়, স্ফটিকের ন্যায় স্বচ্ছ মস্তিস্ক চারিদিক হইতে বিকাশ লাভ করিবে, নুতন জ্ঞ্যানের স্বাদ পাইবে পৃথিবী, হাটিবে স্বচ্ছতার পথে। হৃদয় বাসনার কথা উঠিয়াছিল তার উত্তরে বলি আমার এমত এক বিশাল ছায়া হইবার বাসনা রহিয়াই গেল।

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT