হারুনূর রশীদ।।
একই গল্পের বহু নমুনায় বর্ণনার রীতি মনে হয় আদিকাল থেকেই চলে আসছে। ছোটবেলায় ওয়াজ শুনেছি অগনিত। ওই সময় আমাদের এলাকায় কিশোর বয়সিদের নিষ্কলুষ আমোদ-প্রমোদের কোন ব্যবস্থাই ছিলনা। শুধুমাত্র ফুটবল ছিল, কিন্তু সে ছিল শুধু বড়দের জন্য। আমরা ছোটরা আমার মামাদের বীজচারাতে ‘ননদাইর’ ও ‘গাইয়াগুটি’ খেলে অবসরের বিনোদনে সময় কাটাতাম। আমাদের বাড়ীর একেবারে কাছ দিয়েই পাহাড়ীকন্যা মনু প্রবাহিত। মনুর সেই যৌবন আমরা দেখেছি যা আজ আর নেই। সে আরেক কাহিনী বলতে গেলে। এই মনুতীরে নদীর ঘাট ছিল। সে ঘাটে কত না দূর দেশ থেকে এসে নৌকা ভিড়তো। মৌসুমের কোন কোন সময় একসাথে ৮-১০খানা নৌকাকে ঘাটে নোঙ্গর করে মাসের মত সময় বসে থাকতে দেখেছি। জানা অজানা দূরের কত দেশ-গাঁ থেকে মাটির বাসন-কোসন নিয়ে নৌকায় দলবেঁধে নাইয়ে ব্যবসায়ী বা ছোট সওদাগরেরা আসতো। গাঁয়ে গাঁয়ে বাড়ী বাড়ী হেঁটে এসব বিক্রি করতো। আরেক পক্ষ নাইয়েরা আসতে দেখেছি যারা ধান কিনে নিতো। মনুর এ ঘাটের জৌলুসের সেদিন আজ আর নেই। এখন আর সেখানে কোন নায়ের হাট বসেনা। ঘাটই নেই বরং গড়ে উঠেছে মাথাছোঁয়া নদীর বন্যা বাঁধ। অতীতের পাকিস্তানী আমল থেকে শুরু করে বাংলাদেশ আমল পর্যন্ত সরকারগুলোর দায়ীত্বহীনতা নদীভাঙ্গনকে এতই তরান্বিত করেছে যে কয়েক কেদার জমির পরে থাকা বৃটিশদের তৈরী বড় সড়ক ভেঙ্গে নদীতে বিলীন হয়েগেছে। কত বাড়ী-ঘর গ্রাম নদীগর্ভে জীবনের মত হারিয়ে গেছে, কত পরিবারকে পথে বসিয়েছে, সে খুবই দুঃখভরা করুন ইতিহাস। বাঁধ দেখে কেউ কল্পনাও করতে পারবে না যে এখানে একসময় বিস্তীর্ণ খোলা ক্ষেতের মাঠ ছিল। মাঠের পেছনেই বাড়ী-ঘর ছিল। মানুষের কল-কাকলিতে মুখরিত থাকতো সকাল-বিকেল-সন্ধ্যে। মৌসুমের সময় প্রতিনিয়ত নৌকার আনা-গোনা থাকতো।
সেই ছোটবেলায় মাঝে মাঝে আমাদের নদীর পাড়ে গাছ-গাছালির ছায়ার নিচে ‘টুপা-টুপি’ খেলতাম। ‘টুপা-টুপি’ আধুনিক বন-ভোজনেরই গ্রামীন রূপ। আর এসব আয়োজনের নেতা ছিলেন আমার একমাত্র ফুফুতো ভাই আব্দুল মালিক (যিনি এখন আমেরিকায় আছেন) ও তারই ঘনিষ্ট বন্ধু আমার সম্পর্কিত মামাতো ভাই মরহুম বশির উদ্দীন খাঁ(বশির উদ্দীন খাঁ লন্ডনে প্রয়াত)।
তারা তখন হাইস্কুলের ছাত্র। বশির ভাই শহরের স্কুলে গিয়ে পড়েন। মালিকভাই যতদূর মনেপড়ে আজমনি হাইস্কুলে গিয়ে পড়তেন। তাদের দেখলে আমার মনে ভিন্ন এক ভাব আসতো। ভাবতাম, তারা কতকিছু জানেন, দেখেন। কত জাতের খেলা খেলেন ও দেখেন। এসব নানা রংগের খেলার কত গল্প তাদের কাছেই শুনতাম। গ্রামে আমরা কতিপয় ছোটদের নিয়ে এসবের চর্চ্চা করতেন তারা দু’জন। আমার ছোট ভাই কয়ছর রশীদ পিরুন(লন্ডনে প্রয়াত) ফুটবলে খুব উৎসাহী ছিল। আমরা দু’জনের উৎসাহ দেখে আমাদের ছোট মামা মরহুম মোছাব্বির মিয়া একটি ফুটবল কিনে দেন। আমাদের পুরো গ্রামে তখন কোন ফুটবল ছিল না। আমরা জাম্বুরা দিয়ে ফুটবল খেলতাম। সেই ফুটবল পাওয়ার পর মালিকভাই ও বশির ভাইয়ের কাছে আমাদের কদর একটু বেড়ে যায়। তারাও ফুটবলের পাগল ছিলেন।
আমার আজো মনে আছে, বশির উদ্দীন খান ও আব্দুল মালিক ভাই দু’জনই আমাদের ‘টুপা-টুপি’ খাওয়াকে হাতে-কলমে দেখিয়ে দিয়েছিলেন। সারাসকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আমরা সকলে মিলে ছোট্ট একখানা ঘর বানালাম। সেই ঘর নির্মাণের মিস্ত্রী ছিলেন বশির ভাই ও মালিক ভাই। ঘর তৈরীর পর পাক-শাকও তারা করে দিয়েছিলেন। বাকী আমরা সকলে মিলে কেউ ঘর থেকে ডিম আনলাম, কেউ আনলাম ডাল-চাল, কেউ আবার উরি বা সিম। এভাবে বেশ কিছু আনাজ-পাতি সংগ্রহ করে তাদের কাছে দিলাম। তারা দু’জনে মিলে খিচুরী পাকালেন। নদীর তীরে গাছের ছায়ায় ঘর বানিয়ে, বাজার করে এনে পাকশাক করে সকলে মিলে একসাথে মাটিতে বসে খাওয়া; এ ছিল আমাদের কাছে স্বপ্নের কল্পনা। আমার জীবনে এই ছিল প্রথম বনভোজন বা টুপা-টুপি খাওয়া। সে কি আনন্দ!
মরহুম বশির ভাইয়ের বড় গনিভাই(লন্ডনে প্রয়াত) তখন স্কুলে সর্বোচ্চ শ্রেণীতে পড়েন। বাড়ী থেকে আসা-যাওয়া করেন। তিনি তাদের বাড়ীর টঙ্গিঘরে থাকেন। তার পড়ার টেবিলের উপর একটি বড় গ্লাসের বোতলে ছোট্ট দু’টি মাগুর কিংবা শিং মাছের পোনা ছিল। আমার সেই ছোটবেলায় এই প্রথম এভাবে মাছের পোনা পালন দেখেছিলাম। গনিভাইকে ভাবতাম বিশাল বিজ্ঞানী। তার কাছে চুপচাপ বসে শুনতাম মন্ত্রমুগ্ধের মত, মাছের পোনা পালনের কাহিনী। কিছুই বুঝতাম না। কিন্তু শুনতাম। শুধু আমি নই, আমার মত আরো দু’একজন ছিল। আমার এক ভাগনেয় মরহুম এনামূল হকও আমার সাথে প্রায়ই থাকতো। আরো থাকতো গনিভাইয়েরই ছোটভাই আজমল খান(বর্তমানে আমেরিকায়)। গনিভাই আমাদের খুব স্নেহ করে এসব দেখাতেন শিখানোর উদ্দেশ্যে। তিনি বুঝতেন গ্রামের আমরা কয়েকজন তার এসব কাজ ভালপাই। এজন্য দেখতে আসি। তিনি আরো বুঝতেন যে আমাদের বিনোদনের কোন ভাল সুযোগ গ্রামে নেই। সম্ভবতঃ এ বোধ থেকেই তিনি আমাদের সময় দিতেন। গনিভাইয়ের ছোটবোন আমার সমবয়সি বেদানা(লন্ডনে) মাঝে মাঝে আমাদের সাথে সঙ্গ দিত। তাদের আরেক বড়বোন আমাদের বেগম আপা। তিনি সঙ্গ দিতেন না তবে আড়ালে দাঁড়িয়ে দেখতেন। অসাধারণ এক ব্যক্তিত্ব ছিলেন গনিভাই। কোনদিন আমাদের কারো প্রতি গনিভাইকে বিরক্ত হতে দেখিনি।
সে অনেকদিন পরের কথা। আমি তখন শহরে গিয়ে সরকারী স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ি। স্কুল মাঠে স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতা চলছে। আমি পাড়ি না পাড়ি স্কুলের এসব প্রতিযোগীতায় সবসময় অংশ নিতাম। গনিভাই আরো বেশ কিছু মানুষের সাথে দাড়িয়ে ক্রীড়া প্রতিযোগীতা উপভোগ করছিলেন। এমন সময় আমাদের ডাক পড়লো “আই কিউ টেস্ট” প্রতিযোগীতায় অংশ নিতে। আমার সাথে কোন কলম নেই। গনিভাই নিজের সুলেখা কলমটি আমাকে নিজে থেকে দিলেন। উৎসাহী হয়ে আমাকে বললেন, যা, তারাতারি যা, শুরু হয়ে যাচ্ছে। প্রতিযোগীতার পরে ফিরে এসে দেখি গনিভাই চলে গেছেন। পরে মাঠে খেলার দৌড়াদৌড়ির মাঝে কলমটি কোথায় যে হারিয়ে ফেলি আর খুঁজে পাইনি। কলম হারিয়ে আমার অবস্থাতো একেবারে লেজে-গোবরে! ভাবছি, কালতো গনিভাই নিশ্চয়ই বাসায় আসবে কলমের জন্য। কি উত্তর দেবো। কি বলবো তাকে। কোথা থেকে তার কলম দেবো। আর হারিয়ে ফেলেছি তাকেই বলি কিভাবে আর বাসায় মামাকেই বলি কিভাবে। মা তখন বাড়ীতে। আমার জীবনের পথদেখিয়ে যিনি মায়ের চেয়েও বেশী করেছেন সেই নানীই একমাত্র সহায়। কেঁদেকুটে নানীকে বললাম। গনিভাইয়ের কলম হারানোর কথা। নানী একটু বিরক্তি প্রকাশ করলেন। বললেন, ইস্কুলে সাবধান থাকতে বলি, তাতো শুনবে না। এখন দেখ অসাবধানে কি ঘটে। আমার বিমর্ষ চেহারা দেখে এর পরই আদর করে বললেন- কাঁদছিস কেনো, গনি আসলে আমি তার কলমের ব্যবস্থা করে দেবো। কিচ্ছু ভাবিস নাতো। যা পড়তে বস গিয়ে। হায়রে নানী। এমন মানুষ তোমাকে কি আর কোন দিন কোথায়ও পাবো নানী! যেখানেই থাকো ভালই থাকো। পরের দিন ঠিকই গনিভাই কলমের জন্য আসলেন। নানী মামাকে বলে নতুন একটি সুলেখা কলম আনিয়ে রেখেছিলেন। গনিভাই আসার পর তাকে সেটি দিলেন। গনিভাই নতুন সুলেখা দেখেতো হতবাক। এ কি করে হতে পারে। নানী তাকে পুরো ঘটনা খুলে বললেন। গনিভাই একটু লজ্জা প্রকাশ করে বললেন, তার জন্য একটি নতুন কলম কিনতে হবে কেনো। কলমটি তাকেই দিয়ে দেই যদি আপনি কিছু মনে না করেন। নানী আরো বিনয় প্রকাশ করে গনিভাইকে কলমটি নেয়ার জন্য বললেন। অবশেষে ইচ্ছে না থাকলেও নানীর কথা রাখতে গিয়ে তিনি কলমটি নিয়েছিলেন।
আমার সুবিধে ছিল একটু ভিন্ন। আমাদের বাড়ীর রাস্তার একেবারে লাগোয়া ছিল আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়। একই ভাবে দু’বাড়ী দক্ষিনে আমার মামাদের বাড়ির প্রখ্যাত লিচুগাছ দু’টির দক্ষিনে একটি টিন সেডের ঘরে চলতো ছোটদের বালিকা স্কুল। আমার মামী নুরুন্নেছা খানম ছিলেন ওই স্কুলের একমাত্র শিক্ষিকা। আমার মা রহিমুন্নেছা খাতুন আর নানী নূরজাহান খানম ছিলেন আমার জীবন গড়ার কারিগর। মা আর নানীর পরে যার কাছে বর্ণশিক্ষা নিয়েছি তিনি হলেন আমার ওই মামী। এমনিতেই মামাবাড়ীতে থাকতাম বেশী। স্কুলের বন্ধের সময় পুরোটাই থাকা হতো নানীর সাথে মামাবাড়ীতে। আমাদের আশ-পাশের দু’তিন বাড়ীর আমরা কয়েকজন মিলে মামাবাড়ীর লিচু গাছের ডালে চড়ে ‘ডাং ডাং’ খেলতাম। প্রতি বছর শহরে ফুটবল খেলা শুরু হলে মামা তার সাইকেলের ‘কেরিয়ারে’ বসিয়ে আমাকে খেলা দেখতে শহরে নিয়ে আসতেন।
আমাদের কাছে বড় একমাত্র বিনোদন ছিল পার্শ্ববর্তি গাঁয়ের মাদ্রাসার বার্ষিক ওয়াজ। সারা রাত ছেঁড়া শামিয়ানার নিচে খড়ের উপর বসে ওয়াজ শুনতাম। সেই ওয়াজে একই গল্পকে কত নমুনায় রস মিশিয়ে মৌলানা সাহেবগন বলতেন আজ যখন কোন কারণে মনে পড়ে তখন একা একাই হাসি। একটু বড় হবার পর শহরের রাজনৈতিক ওয়াজেও সেই একই ধরনের রীতি আমি লক্ষ্য করি। একবার ওয়াজে এক মৌলানা সাহেব অপর এক মৌলানা সাহেবের ওয়াজের গল্প বলছিলেন-‘এক মৌলানা সাহেব তার ওয়াজ করে যাচ্ছেন। হঠাৎই ওয়াজের এক পর্যায়ে জোরে চিৎকার করে বলে উঠলেন,’এই সাবধান আর যাসনে…।’ পাশের বাড়ীর গৃহিনী ঘরে বসে ওয়াজ শুনছিলেন আর ভাল কিছু খাবার পাক করছিলেন ওই মৌলানাসাহেবকে খাওয়ানোর জন্য। তার স্বামী মৌলানা সাহেবকে আনার জন্য ওয়াজের মাহফিলে গিয়েছেন। স্বামী ভদ্রলোক মৌলানা সাহেবের ওয়াজ শুনে কিছু বুঝতে পারলেননা। ঘরে নিয়ে আসার পর স্ত্রীকে খাবার প্রস্তুত করার কথা বলে মৌলানাসাহেবের সাথে আলাপে বসলেন। আলাপের ফাঁকে জানতে চাইলেন, ওয়াজের সময় মৌলনাসাহেব চিৎকার করে কাকে কি কারণে ধমক দিলেন। মৌলানা সাহেব হেসে উত্তর দিলেন। বললনে, না- হঠাৎ দেখি মক্কার পাবিত্রঘরে শয়তান ঢুকে পড়ছে। তাই শয়তান তাড়ালাম। গৃহিনী দরজার আড়ালে থেকে শুনেতো অবাক। মৌলানা সাহেব এতো ক্ষমতাশালী!
কিছুক্ষন পর তিনি খাবার এনে টেবিলে দিয়ে স্বামী ও মৌলানা সাহেবকে শুরু করতে বললেন। মৌলানা সাহেব আর স্বামী পাতের ঢাকনা সরিয়ে দেখেন শুধু সাদাভাত দেয়া আছে। বুঝলেন বধু তার, তরকারী নিয়ে আসছে। অনেকক্ষন হাত ধুয়ে বসে আছেন আর কিছু আসে না। তখন স্বামী বললেন- কি হলো, তরকারী দাও। গৃহিনী বললেন শুরু কর আমি আনছি। আরো কতক্ষন পর কিছুই আসছে না দেখে একটু বিরক্তি প্রকাশ করে মৌলানা সাহেব নিজেই এবার বললেন-, মোহতারেমা, তরকারীতো কিছুই দেননি, শুরু করবো কি দিয়ে! গৃহিনী মাংসের বাটি হাতে নিয়ে এসে দেখেন তারা খেতে শুরু করেননি। মহিলা একটু অবাক হয়েই বললেন- ‘হাজার হাজার মাইল দূরের মক্কার ঘরে শয়তান ঢুকে গেলে আপনি এখান থেকে দেখতে পান, তাড়ায়ে দিতেও পারেন। আর ভাতের নিচে যে ভাঁজা মাছ রয়েছে তা দেখতে পাননি, মৌলানা সাহেব? ‘ওই একই গল্প অন্য ওয়াজে অন্য মৌলানা সাহেবের মুখে একটু ভিন্নভাবে শুনেছি। ওখানে ছিল, মৌলানা সাহেবের ওয়াজে শয়তান তাড়ানোর কাহিনী সত্য না গলাবাজি তা পরীক্ষা করার জন্য এক গৃহিনী তার স্বামীকে দিয়ে মৌলানা সাহেবকে দাওয়াত করে ঘরে আনে। এই ছোট্ট একটু রদবদল।
কি এক বই পড়তে গিয়ে হিটলারের গল্প পড়েছিলাম যে, পোল্যন্ড দখলের পর হিটলার না-কি একবার বুদাপেস্ট শহরে একটি পাগলাগারদ পরিদর্শনে যান। সেখানে সব রোগীকে আগে থেকে শিখিয়ে রাখা হয়েছিল যেন হিটলার ঢোকামাত্রই সবাই একসাথে ‘হেইল হিটলার’ বলে অভিবাদন জানায়। যেমন শিখিয়ে রাখা তেমনি কাজ।
হিটলার আসা মাত্রই লাইন দিয়ে দাঁড়ানো রোগীরা হাত তুলে স্যালুট দিল। হঠাৎ হিটলারের চোখে পড়ে যে একজন স্যালুট দেয়নি। তিনি তাকে কারণ জিজ্ঞেস করাতে সে বললো-‘স্যার, আমি তো পাগল নই, আমি এই হাসপাতালের ওয়ার্ডেন’। সেদিন কার ফেইচবুকে অনুরূপ একটি গল্প প্রয়াত মুসলিম লীগ নেতা মোনায়েম খাঁকে নিয়ে দেখলাম। লিখেছেন- মোনায়েম খাঁ একবার পাবনা পাগলা গারদ পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। সেখানে গেলে পরে পাবনার হেমায়েতপুর পাগলা গারদের ডাক্তার ও কর্তাব্যক্তিরা একটু ভাল হবার পথে এমন কিছু পাগলদের সারি দিয়ে লাইন করে গভর্নরকে একটু খোশ আমদেদ জানানোর জন্য ঠিক করে রাখা হয়।
সময়মত গভর্নর মোনায়েম সেখানে পৌঁছে পাগলদের সাথে হাত মিলিয়ে তাদের খবরা খবর নিচ্ছিলেন। তিনি তাদের সাথে পরিচিত হতে গিয়ে বলছিলেন যে তিনিই পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর। দু’একজন কিছু না বললেও এক পাগল বলে উঠলো-“জি এখানে প্রথম প্রথম যারা আসে তারা সকলেই নিজেকে রাজা-বাদশাহ-গভর্নর ভাবে।’