মা খোদেজা বেগমের বিলাপ-“আমি এখন কি নিয়ে বাঁচবো?”
নিখোঁজের ১১ ঘন্টা পর খায়েরের
ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ১১ঘন্টা নিখোঁজ থাকার পর আবুল খায়ের(৩১) নামে এক মিশুক চালকের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করেছে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ।
সোমবার(১৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় খবর পেয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালিঘাট চা বাগানের ১১নং সেকশন এলাকা থেকে চালকের মরদেহ উদ্ধার করে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ। নিহত আবুল খায়ের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ৬নং আশিদ্রোন ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের গাজিপুর এলাকার মৃত মোঃ আনছর আলীর ছেলে।
আবুল খায়েরের বড় বোন ইয়াসমিন জানান, “গতকাল রাত ১১টা থেকে আবুল খায়েরের কোন খোঁজ খবর আমরা পাইনি। পরে ভোররাত পর্যন্ত পরিবারের সদস্যরা কালিঘাট রোডসহ আশপাশের বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিয়েও ভাইয়ের কোন সন্ধান মিলেনি।”
আবুল খায়ের শ্রীমঙ্গল শহরতলীর রামনগর এলাকায় প্রবাসী আব্দুল হান্নানের বাসায় থাকতেন। গত চার মাস আগে আবুল খায়েরের বাবা স্ট্রোকে মারা যান। এরপর থেকে খায়েরের পরিবারে নেমে আসে দুঃখ দুর্দশা। তার পরিবারের এ দুরবস্থা দেখে প্রবাসী হান্নান আবুল খায়ের এর জীবিকা নির্বাহের জন্য এক মাস আগে একটি মিশুক কিনে দেন। আবুল খায়ের এটি চালিয়ে কোনোরকম সংসার চালাতেন। উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারানোর হতাশা ঘিরে ধরেছে নিহতের পরিবারকে।
নিহত আবুল খায়েরের বোন ইয়াসমিন বলেন, আমার ভাইকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে ঘাতকরা হত্যা করেছে। ছোট ভাইয়ের আয়ে পরিবার চলতো। আমরা ভাইয়ের খুনের সাথে জড়িত সবার উপযুক্ত বিচার চাই। নিহতের স্ত্রী সুমনা আক্তার বলেন, আমি আমার স্বামীর হত্যার সাথে জড়িত সবার বিচার চাই। পুলিশ তাদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনুক। ছেলে হারিয়ে মা খোদেজা বেগম বিলাপ করে বলেন, আমার সব শেষ হয়ে গেছে, আমি এখন কি নিয়ে বাঁচবো?
শ্রীমঙ্গল থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, টমটম চালকের গলাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমরা মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মৌলভীবাজার পাঠিয়েছি। ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি। এ বিষয়ে তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।
২০ কেজি গাঁজা উদ্ধার
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে পুলিশের অভিযানে ২০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। শহরের মৌলভীবাজার রোডস্থ সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস অফিসে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে এই গাঁজা জব্দ করে। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গাঁজা রেখে মাদক পাচারকারীরা পালিয়ে যায়।
গতকাল (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে মাদক পাচার হচ্ছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ এই অভিযান পরিচালনা করে।
থানা সুত্রে জানা যায়, মাদক কারবারিরা চা পাতা পাঠানোর নাম করে হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট থানা এলাকা থেকে গাঁজা নিয়ে এসে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে শেরপুর ও পটুয়াখালী জেলায় পাচারের চেষ্টা করছিল।
শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আমিনুল ইসলাম জানান, কুরিয়ার সার্ভিসের বুকিং মেমো থেকে প্রাপক এবং প্রেরকের নাম, ঠিকানা এবং মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে চারজনের বিরুদ্ধে মাদক আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এর আগে গত সোমবার রাতে শ্রীমঙ্গল শহরের মৌলভীবাজার রোডের এ জে আর কুরিয়ার সার্ভিস অফিস থেকে চোরাই পথে আসা ২৪’শ পিস এলসিডি ভারতীয় মোবাইল ডিসপ্লে উদ্ধার করে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ। যার বাজার মূল্য ৩৬ লক্ষ টাকা উল্লেখ করে গত বুধবার রাতে পুলিশ ৩ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়।