1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
নুসরাত হত্যাকাণ্ড: মামলা তদন্তের দায়ীত্ব পিবিআই'র হাতে - মুক্তকথা
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৩:৪৮ অপরাহ্ন

নুসরাত হত্যাকাণ্ড: মামলা তদন্তের দায়ীত্ব পিবিআই’র হাতে

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : শুক্রবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৯
  • ৩০৯ পড়া হয়েছে

মুক্তকথা সংবাদ।। মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত হত্যা ঘটনা এখন দেশের সকল মহলে প্রবলভাবে আলোচিত হচ্ছে। সংবাদমাধ্যম ও গণমাধ্যমেরতো মূলতঃ কাজই এটা। সুতরাং সেখানেতো লেখা-লেখি চলছেই।

  • মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার প্রধান আসামি সিরাজউদ্দৌলার পক্ষে উকালতি করা আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট কাজী বুলবুল সোহাগকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
  • মাদ্রাসাছাত্রী রাফিকে পুড়িয়ে মারার অন্যতম আসামি সেই নূর গ্রেফতার হয়েছে। গ্রেপ্তার হয়েছে মামলার অন্যতম আসামি মুকছুদসহ ২জন।
  • বোরকা পরে নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়া হয়েছিল।
  • যৌন হয়রানির ঘটনাকে নাটক বানাতে চেয়েছিলেন ওসি?
  • সোনাগাজী থানার ওসি প্রত্যাহার।
  • সহপাঠি দুই বান্ধবীর উদ্দেশ্যে চিঠি লিখেছিলো নুসরাত জাহান রাফি। পুলিশ ও সংবাদ মাধ্যমের কাছে চিঠি পৌঁছেছে এবং সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।
  • নুসরাতকে হত্যার মামলা ‘পুলিশ ব্যুরো অব ইনটেলিজেন্স’ (পিবিআই)এর হাতে নেয়া হয়েছে।
  • দৈনিক ষ্টার লিখেছে নুসরাত জাহান রফি হ্ত্যা পরিকল্পিত ছিল।
  • মির্জা ফখরুল ইসলামের কথায়-শাসকগোষ্ঠীর দুঃশাসন গোটা দেশটাকেই গ্রাস করেছে?

শুরু থেকে এ পর্যন্ত এ নরকতূল্য হত্যা ঘটনায় প্রান গিয়েছে নুসরাত জাহান রাফির আর এই নারকীয় ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে কয়েকজনকে পশু, দূর্বৃত্ত-দুরাচার বিবেচনায় পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। অভিযুক্ত পুলিশদের বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে মামলার মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনা হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস। আগুন দিয়ে পুড়িয়ে একজন কিশোরী ছাত্রীর প্রান নেয়া হলো, এর চেয়ে জঘন্য অপরাধ আর কি হতে পারে। একজন মানুষকে প্রকাশ্য দিবালোকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে এটিতো অস্বীকারের কোন প্রশ্নই উঠেনা। অতএব এর পেছনে যে যে নরপশুরা যেভাবেই জড়িত তাদের সকলকে আইনের কাঠগড়ায় তুলে কঠিন সাজা দেয়া না গেলে ‘আইনের শাসন’ কথা সমাজ থেকে উঠে যাওয়ার সামিল। অবশ্য বিচারের কাজ সকল দিকে থেকেই এখনো সক্রিয় রয়েছে। এটিই একটি শক্ত ভরসা।
মেয়েকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মামলা করেন নুসরাত জাহানের মা। সেই থেকে বর্বরতার শুরু হয়েছিল। সেই মামলায় গত ২৭ মার্চ ভন্ড ধার্মিক অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়। এরপরই নারকীয়তার সূচনা। প্রথম থেকেই মামলা প্রত্যাহারের চাপ দেওয়া হয়েছিল। অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজউদ্দৌলাকে মুক্তি দেয়ার লক্ষ্যে ছাত্রলীগের নামধারী কিছু দুর্বৃত্ত মিছিল করে। চলতে থাকে দুর্বৃত্তায়ন। অবশেষে নুসরাতকে বশে আনতে ব্যর্থ হয়ে সিরাজউদ্দৌলার 
চার দুর্বৃত্ত বোরকা পরে এসে আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহানের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। বোরকা পড়া থাকায় চারজনের কাউকেই চিনতে পারেনি নুসরাত। সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা যায়, বোরকা পরা চারজনের মধ্যে একজনের নারীকণ্ঠ ছিল। নুসরাত তার ভাইয়ের কাছে এসব কথা বলে গেছে।
গত শনিবার ৬ই এপ্রিল এ ঘটনা ঘটেছিল। ওই দিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নুসরাত জাহান আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা দিতে মাদ্রাসায় যায়। পরে সে প্রকৃতির ডাকে বাথরুমে যায়। সেখানে থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাদ্রাসার পাষণ্ড অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজউদ্দৌলার অনুগত কয়েক দুর্বৃত্ত তাকে ছাদে নিয়ে যায়। সেখানে তার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। তার আর্তচিৎকারে শিক্ষকরা এসে তাকে উদ্ধার করে। এ সময়ের মধ্যেই তার শরীরের ৭৫ভাগ পুড়ে যায় বলে ডাক্তাররা বলেছেন।
ইতিপূর্বে ওই ছাত্রীর মা শিরিনা আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় অভিযোগ করেন। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজউদ্দৌলা সবসময় তার মেয়ে নুসরাত জাহানকে যৌন হয়রানির চেষ্টা করতেন বলে।

ঘটনাটির সূচনা হয়েছিল গত ২৭শে মার্চ। এ অভিযোগে গত ২৭শে মার্চ অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়। খুঁজে দেখার বিষয় যতদূর বুঝা যায়, এখান থেকে-
নুসরাত যখন নালিশ নিয়ে পুলিশের কাছে লিপিবদ্ধ করাতে গিয়েছিলেন তখন পুলিশ নালিশকারীর কোন আইনজীবী ছাড়াই তার বক্তব্য ভিডিও রেকর্ড করতে থাকেন। সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা যায়, ভিডিও করার সময় নুসরাত অঝোরে কাঁদছিলেন এবং তার মুখ দু’হাতে ঢেকে রেখেছিলেন। এই মুখ ঢেকে রাখাতেও ছিল ওসির আপত্তি। বারবারই ‘মুখ থেকে হাত সরাও, কান্না থামাও’ বলার পাশাপাশি ওসি এও বলেন, ‘এমন কিছু হয়নি যে এখনও তোমাকে কাঁদতে হবে।’
কোন ভরসায় ওসি সেদিন এমন অপরাধমূলক সাহসী ভূমিকা রেখেছিলেন। নিজের আইন না জানা না-কি অন্যকিছু। এসবের জবাব দিতে হবে ওসিকে। দায়ীত্ব থেকে অপসারনই বড় কথা নয়।
ভিডিওতে আরো দেখা যায়, ‘থানার ভেতরে নুসরাতকে জেরা করা হচ্ছে- ‘কিসে পড়? ক্লাস ছিল?’ ঘটনা জানাতে গিয়ে নুসরাত বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন। সে সময় তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় ‘কারে কারে জানাইসো বিষয়টা?” নুসরাত যখন জানায় তাকে অধ্যক্ষ ডেকে নিয়ে গিয়েছিল, তখন প্রশ্ন করা হয় ‘ডেকেছিল, নাকি তুমি ওখানে গেছিলা?’ পিয়নের মাধ্যমে ডেকেছিল বলে নুসরাত জানালে প্রশ্ন করা হয় ‘পিয়নের মাধ্যমে ডেকেছিল? পিয়নের নাম কী?’ নুসরাত সে সময় পিয়নের নাম বলেন ‘নূর আলম।’ পুরো ভিডিও’তে নুসরাত কাঁদছিলেন। একসময় ভিডিওধারণকারী তাকে ধমকের সুরে বলেন ‘কাঁদলে আমি বুঝবো কী করে, তোমাকে বলতে হবে। এমন কিছু হয়নি যে তোমাকে কাঁদতে হবে।’ পুলিশ কোত্থেকে জানলো যে এমন কিছু হয়নি?
ভিডিওর শেষে নুসরাতের কথা বলা শেষ হলে ধারণকারী বলেন ‘এইটুকুই?’ আরও কিছু অশালীন উক্তির পাশাপাশি তাকে উদ্দেশ করে ওই ব্যক্তি বলেন ‘এটা কিছু না, কেউ লিখবেও না তোমার কথা। আমি আইনগত ব্যবস্থা নেবো। কিছু হয়নি। রাখো। তুমি বসো।’
ওসি বা পুলিশতো কোন নালিশের বিচারক নয়। ওসি বা যেকোন পুলিশের এমনকি কোন উকীলেরও নালিশকারীর নালিশ বানিয়ে দেয়ার বা নালিশ নথিভুক্ত করার সময় নালিশের উপর কোন ধরনের মন্তব্য করার কোন অধিকার- আইন, দুনিয়ার কোন দেশ বা  কোন সমাজ তাদের দেয়নি। কিসের বলে(?) বা পাক-আমলের সংবাদের ভাষায় ‘কোন খুটীর জোরে’ পুলিশ ভিডিও করেন? নালিশকারীর নালিশ সংশোধন বা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালান? পুলিশকে এমন সাহস কারা দিয়েছে? অবশ্যই ন্যায় বিচারের স্বার্থে এসব তথ্য বের করতে হবে।
ওসির এ ধরনের আচরণের বিষয়ে পুলিশ কর্তৃপক্ষ সংবাদ মাধ্যমকে অবশ্য বলেছেন, আইন না মেনে অভিযোগ করতে যাওয়া কারোর ভিডিও করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে। হয়তো তাই, দায়িত্বে অবহেলার দায়ে গত ৯ এপ্রিল ফেনীর সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
পুলিশের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) মো. সোহেল রানা সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘যদি কোনও রূঢ় অশালীন উপায়ে সুনির্দিষ্ট আইনিপন্থা না মেনে এ ধরনের কোনও ভিডিও করা হয়ে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে। এটি তার ব্যক্তিগত বিচ্যুতি।’ যৌন হয়রানির অভিযোগ করার সময় ওসির ভিডিও ধারণের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা করার সুযোগ রয়েছে নুসরাতের পরিবারের।
কিন্তু ওসি মোয়াজ্জেমকে প্রত্যাহার অবশ্যই যথেষ্ট নয়। পুলিশের দায়ীত্বহীনতার কারণে ঘটনা যে মৃত্যু পর্যন্ত গড়িয়েছে, একটি পরিবারের মানুষের জীবন হৃদয় বিদারক ভয়াল এক দুঃস্বপ্নের জীবনে পরিনত  হয়েছে পুলিশকে মর্ম মর্মে তা উপলব্দি করতে হবে। অনুভব করতে হবে অন্তর থেকে সুশীল মন নিয়ে।

আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট কাজী বুলবুল সোহাগকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে
অ্যাডভোকেট কাজী বুলবুল সোহাগ ফেনীর কাজীরবাগ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান। বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফেনী জেলা আওয়ামী লীগ। বৃহস্পতিবার তিনি গণমাধ্যমকে জানান, কেন্দ্রের নির্দেশে বুলবুলকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সিরাজউদ্দৌলাকে আইননি সহায়তা দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি বুলবুলকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র থেকে বুলবুলকে বহিষ্কারের চিঠি দেওয়া হয়েছে।
৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি। তার বান্ধবী নিশাতকে মাদ্রাসার ছাদে মারধর করা হচ্ছে বলে একজন এসে তাকে জানায়। এমন সংবাদে তিনি ছাদে যান। সেখানে বোরকা পরা চারজন তাকে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে করা যৌন নিপীড়নের মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। এসময় নুসরাত বলেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমি শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত লড়ব। এরপর তার হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় অধ্যক্ষের অনুসারীরা।

১০৮ ঘণ্টা আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় মারা যান অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করা নুসরাত। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মৃত্যুর আগে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।
এ ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা ও পৌর কাউন্সিলর মুকছুদ আলমসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান। আর এই মামলায় আসামিদের আইনি সহায়তা দেন আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা বুলবুল।

সোনাগাজী থানার ওসি প্রত্যাহার, নুসরাতকে হত্যাচেষ্টার মামলা পিবিআইতে
হত্যাচেষ্টার শিকার মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের প্রতি অনাস্থা প্রকাশের পর ফেনীর সোনাগাজী থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। সেই সাথে আলোচিত হত্যাচেষ্টার মামলা তদন্তের জন্য পিবিআইতে স্থানান্তরও করা হয়েছে। এর আগে নুসরাত জাহান রাফির শরীরের অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অভিযুক্ত শম্পার গ্রেফতার হওয়া না হওয়া নিয়ে পুলিশের পৃথক মন্তব্যের পর ওই ছাত্রীর পরিবার পুলিশের কার্যক্রমে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

সহপাঠি দুই বান্ধবীর উদ্দেশ্যে চিঠি লিখেছিলো নুসরাত জাহান রাফি

ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদরাসার লম্পট অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার হাতে যৌন হয়রানির পর সহপাঠি দুই বান্ধবীর উদ্দেশ্যে চিঠি লিখেছিলো নুসরাত জাহান রাফি। সেই লেখা চিঠি তার খাতা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে বাড়ি থেকে এগুলো উদ্ধার করেছে সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশ। চিঠিতে দিন-তারিখ লেখা না থাকলেও বিষয়বস্তু বিবেচনায় যৌন হয়রানির মামলা করার কিছুদিন পর এবং দগ্ধ হওয়ার কয়েকদিন আগের লেখা বলে মনে করছে তদন্তকারীরা।
ওই সূত্র জানায়, তার পড়ার টেবিলে খাতায় দুই পাতার ওই চিঠিতে তামান্না ও সাথী নামের দুই বান্ধবীকে উদ্দেশ্য করে লেখা হয়েছে। গত ২৭শে মার্চ ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনাও দিয়েছে রাফি। ওই চিঠিতে রাফি আত্মহত্যা করবেনা বলেও উল্লেখ করে সে। তবে যৌন হয়রানির ঘটনার পর সিরাজ উদদৌলাহ গ্রেফতার হলে তার মুক্তির দাবীতে বান্ধবীদের অংশগ্রহণে ক্ষোভ প্রকাশ করে রাফি। তাকে নিয়ে বান্ধবীদের বিভিন্ন কটুক্তিতেও তার মর্মাহত কথা উল্লেখ করা হয় চিঠিতে।
মাদ্রাসার পিয়ন নুরুল আমিন সংবাদ মাধ্যমকে জানান, শতাব্দী প্রাচীন মাদ্রাসাটিতে নীচতলায় ছিলো অধ্যক্ষের কক্ষ। তিন-চার বছর আগে অধ্যক্ষের কক্ষটি মাদ্রাসার একটি নির্জন কক্ষে স্থানান্তরিত করা হয়। দরজা বন্ধ করে রেখে সেখানেই ছাত্রীদের সঙ্গে অপকর্ম করতো অধ্যক্ষ সিরাজুদ্দৌলা। ঘটনার দিন সেই কক্ষে আরেক পিয়ন দিয়ে নুসরাতকে ডেকে আনা হয়।

মাদ্রাসাছাত্রী রাফিকে পুড়িয়ে মারার অন্যতম আসামি সেই নূর গ্রেফতার

আজ ১২ই এপ্রিল শুক্রবার সংবাদ মাধ্যমের খবর, ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় অন্যতম আসামি নূর উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ভালুকার সিডস্টোর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। নুর এ মামলার দুই নম্বর আসামি। নূর উদ্দিনকে গ্রেফতার করে পিবিআই কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি অভিযুক্ত অধ্যক্ষ এ এস এম সিরাজ উদদৌলার মুক্তি দাবিতে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

নুসরাত হত্যা মামলার অন্যতম আসামি মুকছুদসহ গ্রেফতার ২

ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির শ্লীলতাহানি ও পুড়িয়ে হত্যা মামলার অন্যতম আসামি পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর মুকছুদ আলমকে ঢাকা থেকে এবং তার সহযোগী মো. জাবেদকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বৃহস্পতিবার রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন পিবিআইয়ের ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. মনিরুজ্জামান। তিনি গণমাধ্যমকে জানান, আটক দুই জনকে ফেনীতে আনা হচ্ছে এ বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

যৌন হয়রানির ঘটনাকে নাটক বানাতে চেয়েছিলেন ওসি

শরীরে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে হত্যার আগেই যৌন হয়রানির অভিযোগ করতে গিয়ে ফেনীর সোনাগাজী থানার ওসির কক্ষে আরেক দফা হয়রানির শিকার হতে হয়েছিল ছাত্রী নুসরাতকে। ওসি নিয়ম ভেঙে জেরা করতে করতেই নুসরাতের বক্তব্য ভিডিও করেন। মৌখিক অভিযোগ নেওয়ার সময় দুই পুরুষের কণ্ঠ শোনা গেলেও সেখানে নুসরাত ছাড়া অন্য কোনো নারী বা তার আইনজীবী ছিলেন না।

বোরকা পরে নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়া হয়

চার দুর্বৃত্ত বোরকা পরে এসে আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহানের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। ফলে চারজনের কাউকেই চিনতে পারেনি নুসরাত। শনিবার রাতে নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান সংবাদ মাধ্যমের এক অনলাইনকে এ তথ্য দেন। বোরকা পরা চারজনের মধ্যে একজনের নারীকণ্ঠ ছিল।

শাসকগোষ্ঠীর দুঃশাসন গোটা দেশটাকেই গ্রাস করেছে: বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম

অবৈধভাবে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর দুঃশাসনের ভয়াল রূপ সামাজিক অনাচারের মাত্রা সীমাহীন করার পাশাপাশি গোটা দেশটাকেই গ্রাস করে ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মুখোশধারীদের দেয়া আগুনে ফেনীর সোনাগাজীতে আলিম পরীক্ষার্থী মাদরাদাশিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফির অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল এমন মন্তব্য করেন।
বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) রাতে বিএপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ফেনীর সোনাগাজীতে আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফীর শরীরে যেসব পাষণ্ডরা কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে হত্যা করলো তাদের প্রতি তীব্র ধিক্কার জানাই।’
বর্তমান রাষ্ট্রব্যবস্থার সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আইনের শাসনের ভয়াবহ অবনতি এবং দেশে ন্যায়বিচার তিরোহিত হয়ে গেছে। এজন্য বর্তমানে মানুষের বেঁচে থাকার ন্যূনতম নিশ্চয়তাটুকও নেই।’
বিবৃতিতে ফখরুল আরও বলেন, ‘বিভীষিকাময় ও দুর্বিনীত দুঃশাসনের এক ভয়াল রূপ গোটা দেশকেই গ্রাস করে ফেলেছে। এখন দুষ্কৃতিকারীরা আইন হাতে তুলে নিয়েছে। ফেনীর সোনাগাজীতে মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে কেরোসিন দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে পৈশাচিক কায়দায় হত্যার চেষ্টা এবং পরবর্তীতে রাফির মৃত্যুতে সারা দেশের মানুষ শোকে-দুঃখে-ক্ষোভে ফেটে পড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘মায়া-মমতাহীন মানুষ নামের পশুদের পাশবিকতায় নুসরাতের মর্মান্তিক ও হৃদয়বিদারক মৃত্যুতে গোটা দেশবাসী আজ শোকে-দুঃখে স্তম্ভিত ও বিমূঢ়। দেশবাসী আশা করে এই অমানুষদের নজিরবিহীন শাস্তি হোক।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি নুসরাতের হৃদয়বিদারক মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ এবং বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গ, আত্মীয়স্বজন, গুণগ্রাহী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি জানাচ্ছি গভীর সহমর্মিতা। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নুসরাতকে বেহেশত নসীব করুন- এই দোয়া করি।’
এদিকে বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে সোনাগাজী মো. সাবের সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে নুসরাতের দাফন সম্পন্ন হয়। এসময় সর্বস্তরের মানুষ জানাজায় অংশ নেয়। গ্রামের বাড়িতে শোকের মাতম ও কান্নার রোল পড়ে। সবাই হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শান্তির দাবি করেন।
এর আগে গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতলের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে প্রায় ৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে মারা যান নুসরাত।
উল্লেখ্য, ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে (১৮) গত ৬ এপ্রিল মাদরাসার ছাদে মুখোশধারী ৪ জন আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করে।
এ ঘটনায় মাদরাসার যৌন নিপীড়নকারী মাদরাসাটির অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাকে ৭ দিন ও তার দুই সহযোগী মাদরাসার ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক নূরুল আফসার উদ্দিন ও ছাত্র আরিফুল ইসলামকে ৫ দিন করে রিমান্ডে পাঠিয়েছে সোনাগাজী উপজেলা আমলি আদালত। গত ৮ এপ্রিল নুসরাতের ভাই মাহমদুল হাসান নোমানের করা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলায় এখন পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সিরাজ উদ্দৌলা শিক্ষক নামের কলঙ্ক: আল্লামা বাবুনগরী

ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে শ্লীলতাহানি ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দুই শিক্ষকের এমপিও (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) স্থগিত করেছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতর। বৃহস্পতিবার অধিদফতর থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এমপিও স্থগিত হওয়া শিক্ষকরা হলেন- সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলা ও ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আফসার উদ্দিন।
আদেশে বলা হয়, সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে শ্লীলতাহানির মামলা (নম্বর-২৪, তারিখ- ২৭/০৩/২০১৯) ও হত্যা মামলায় (নম্বর-১০, তারিখ- ০৮/০৪/২০১৯) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এ এস এম সিরাজ উদ্দৌলা এবং একই মাদ্রাসার ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আফসার উদ্দিন গ্রেফতার হওয়ায় তাদের এমপিও স্থগিত করা হলো।
এ বিষয়ে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক শফিউদ্দিন বলেন, ‘অধ্যক্ষ ও ইংরেজি বিভাগের প্রভাষকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি ও হত্যা মামলা দায়ের এবং তারা গ্রেফতার হওয়ায় আইন অনুযায়ী তাদের এমপিও স্থগিত করা হয়েছে। ওই দুই শিক্ষকের সব ডাটা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) ইএমআইএস (ইলেকট্রনিক ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম) সেলে থাকায় মাউশি মহাপরিচালককে চিঠি দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তথ্য সূত্র: ইত্তেফাক, ব্রেকিং নিউজ.কম, বাংলাদেশ স্ট্যাটাস.কম ও বাংলাস্ট্যাটাস.কম

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT