মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের কালেঞ্জী খাসিয়া পুঞ্জির জুম থেকে পান চুরির প্রতিবাদ করায় ও থানায় সাধারণ ডায়েরী(জিডি) করায় প্রতিহিংসায় এক খাসিয়া যুবককে একা পেয়ে বেধড়কভাবে পেটাল পান চোর দুই ভাই। আহত খাসিয়া যুবকের নাম সোহেল ডিখার(৩৪)। মারপিটে তার পা ভেঙ্গে সে এখন মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। গত রোববার(৬ মার্চ) বিকেলে আদমপুর ইউনিয়নের কাউয়ারগলা গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।
কালেঞ্জী খাসিয়া পুঞ্জি সুত্রে জানা যায়, কালেঞ্জী খাসিয়া পুঞ্জি সংলগ্ন কাউয়ারগলা গ্রামের শরফুদ্দীন চৌধুরী ওরফে রক্তনের ছেলে এরফান চৌধুরী (২৮) বেশ কিছু দিন আগে এ পুঞ্জির জুম থেকে কিছু পান চুরি করেছিল। এ ঘটনায় খাসিয়া পুঞ্জির পক্ষে কমলগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করা হয়েছিল। পরে গ্রামে সামাজিক বৈঠকে ঘটনার সত্যতা পেলে তাকে সামান্য জরিমানা করে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোস্তফা কামালের জিম্মায় অভিযুক্ত এরফান চৌধুরীকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
গত ৬ মার্চ হবিগঞ্জের আলিয়াছড়া খাসিয়া পুঞ্জির একটি ধর্মীয় সভায় কালেঞ্জী পুঞ্জির অধিকাংশ লোকজন চলে যান। এ দিন বিকেলে কালেঞ্জী পুঞ্জির যুবক সোহেল ডিখার একা বাজারে আসার পথে কাউয়ারগলা গ্রামে পান চোর এরফান মিয়া (২৮) ও তার ভাই সোহান মিয়া (২৬) খাসিয়া যুবক সোহেল ডিখারের পথরোধ করে বেধড়কভাবে পেটায়। খাসিয়া যুবক অনেকটা অচেতন হয়ে পড়লে হামলাকারীরা তাকে রাস্তায় ফেলে যায়। এরপর এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে রোববার সন্ধ্যায় কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন। সোমবার বেলা ২টায় আহত খাসিয়া যুবককে কমলগঞ্জ থেকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সাথে সাথে রাতে কমলগঞ্জ থানায় আহত খাসিয়া যুবক সোহেল ডিখার বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করে।
আদমপুর ইউপি সদস্য মোস্তফা কামাল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এর আগেও অভিযুক্ত এরফান কালেঞ্জী পুঞ্জির মান্ত্রীকে নাজেহাল করেছিল। পান চুরির অভিযোগে থানায় জিডি হলে তারা গ্রাম্য সামাজিক বৈঠক করে ভবিষ্যতে এ ধরণের কাজ আর করবে না মর্মে মুচলেখা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। এখন আবার সে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে খাসিয়া যুবককে মারপিট করেছে।
অভিযোগ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করে অভিযুক্ত এরফান চৌধুরী ও তার ভাই সোহান চৌধুরীকে পাওয়া যায়নি। আদমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদাল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, হামলাকারী পরিবারের লোকজন বিষয়টি সামাজিক বিচারে সমাধান করে দিতে চেয়ারম্যান হিসেবে তার কাছে আসছেন। তিনি তাদের বলেছেন আগে আহত খাসিয়া যুবকের খোঁজ খবর নেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কমলগঞ্জ থানার ওসি ইয়ারদৌস হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় সোমবার রাতে একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। তদন্তক্রমে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।