কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ পৌরসভার উদ্যোগে পৌর এলাকার ব্রাহ্মণ, পুরোহিত ও ৭টি পূজামন্ডপ কমিটিকে নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। ৭টি পূজামন্ডপে নগদ অর্থসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ করা হয়। বুধবার (২১ অক্টোবর) বিকাল ৪টায় কমলগঞ্জ পৌরসভা মিলনায়তনে এ অর্থ নগদে ও স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ করা হয়।
কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো: জুয়েল আহমেদের সভাপতিত্বে ও পৌর কাউন্সিলর মো: আনোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পূজা উযাপন পরিষদের সভাপতি শংকর লাল সাহা। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পূজা উযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল চন্দ্র দাস, কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম রুহেল, দেওয়ান আব্দুর রহিম মুহিন, আয়েশা সিদ্দিকা, মুসলিমা বেগম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন নিখিল চন্দ্র কর, শিবদাস দেব শিবু, সুনীল মালাকার, বিষ্ণুকান্ত পাল, নিখিল মালাকার প্রমুখ। এসময় পৌর এলাকার ব্রাহ্মণ, পুরোহিত, পৌরসভার ৭টি পূজামন্ডপের সভাপতি-সম্পাদক, সাংবাদিকবৃন্দ ও এলাকার গণ্যমাণ্য ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
শারদীয় দুর্গপূজায় কমলগঞ্জে তৈরী হয়েছে ১৩৯টি পূজামন্ডপ
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় শারদীয় দুর্গাপূজায় প্রস্তুত হয়েছে ১৩৯টি সার্বজনীর পূজামন্ডপ। বৃহস্পতিবার রাতে মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সনাতনী ধর্মালম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজা। চারিদিকে পূজাপূজা গন্ধ। চলমান করোনাভাইরাস মহামারিতে দূর্গাপূজাকে ঘিরে আগের সেই উৎসবের আমেজ না থাকলেও দুর্গাপূজাকে পরিপূর্ণ রূপ দিতে মন্ডপগুলোতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। ইতিমধ্যে উপজেলার অধিকাংশ পূজামন্ডপে শেষ হয়েছে প্রতিমা তৈরির কাজ। এখন রঙ তুলির আঁচড়ে সৌন্দর্য বর্ধণের কাজ চলছে। মাটিরকাজ শেষ করে রং তুলির খেলায় প্রতিমাকে সজ্জিত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মন্ডপগুলোর মৃৎশিল্পীরা।
এদিকে এবার করোনায় পূজার আয়োজন সীমিত করতে বলা হয়েছে। আয়োজকদের ২৬টি নির্দেশনা অনুসরণ ও প্রতিপালনের কথা বলেছে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ। এরমধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মহালয়ার অনুষ্ঠান সীমিত করা, নিচুশব্দে ভক্তিমূলক সংগীত ছাড়া অন্য সংগীত বাজানো থেকে বিরত থাকা এবং সব ধরনের সাজসজ্জা ও মেলার আয়োজন বন্ধ রাখা, আরতি প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিহার।
এবারের পূজার প্রতিমায় ব্যতিক্রম আনার চেষ্টা করেছেন বেশ কয়েকটি পূজামান্ডপ। তবে মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে এবার মন্ডপগুলোতে তেমন আলোকসজ্জা দেখা যাবেনা। সরকারি নির্দেশনা মেনে সাজানো হচ্ছে মন্ডপগুলো। তবে পূজামন্ডপগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি বিভিন্ন নির্দেশনা মানতে অন্যান্য বছরের তুলনায় খরচ অনেকটা বেড়ে গেছে। বিগত বছরের তুলনায় এ বছর ভিন্ননির্দেশনা থাকায় অনেকটা হিমশিম খাচ্ছেন আয়োজকরা। এবারের পূজোয় থাকছেনা ঝাক-ঝমকপূর্ণ কোন অনুষ্ঠান। এরপরও থেমে নেই কোনকাজ। সরকারি নির্দেশনা মেনে সাজানো হচ্ছে মন্ডপ ও তার আশপাশ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাত-দিন চলছে পূজার প্রস্তুতি।
কমলগঞ্জ উপজেলায় মোট সার্বজনীন পূজামন্ডপের সংখ্যা ১৩৯ টি। তার মধ্যে কমলগঞ্জ পৌরসভায় ৭টি, রহিমপুর ইউনিয়নে ১৯ টি, পতনউষার ইউনিয়নে ১৬টি, মুন্সীবাজার ইউনিয়নে ১৫টি, শমসেরনগর ইউনিয়নে ১৪টি, কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নে ৭টি, আলীনগর ইউনিয়নে ২০টি, আদমপুর ইউনিয়নে ১৩টি, মাধবপুর ইউনিয়নে ১৮টি ও ইসলামপুর ইউনিয়নে ১০টি পূজামন্ডপ রয়েছে এবং ১১টি ব্যাক্তিগত পূজামন্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল চন্দ্র দাস বলেন, শারদীয় দূর্গাপূজা আনন্দঘন ও শান্তিপূর্ণভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে উদযাপনের লক্ষ্যে আমরা সর্বপ্রকার সর্তকতা অবলম্বন করছি। সার্বিকভাবে পূজা করার জন্য মন্ডপকমিটিগুলোকে অভিহিত করেছি। আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর পাশাপাশি অধিকতর নিরাপত্তা জোরদারের জন্য প্রত্যেক মন্ডপে মন্ডপকমিটির নিজ উদ্যোগে অধিকসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক রাখার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে আয়োজকদেরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আরিফুর রহমান জানান, কমলগঞ্জের ১৩৯টি সার্বজনীন পূজামন্ডপে শান্তিপূর্ণ ভাবে পূজা উদযাপনের লক্ষ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সবকটি পূজামন্ডপ এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা জোরদার করা হয়েছে। পূজামন্ডপগুলোর নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশের ১০টি মোবাইল টিম পূজাচলাকালিন সময়ে সার্বক্ষণিক কাজ করবে।
কমলগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপনের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারি স্বাস্থবিধি সম্পর্কিত গাইডলাইন মেনে দূর্গাপূজা উদযাপনের জন্য কমলগঞ্জ উপজেলার প্রত্যেকটি পূজামন্ডপকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।