মৌলভীবাজার থেকে বিশেষ সংবাদদাতা।। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সুস্থ পশু সনাক্ত করতে না পারাতে এন্টিবায়োটিক প্রয়োগকৃত অসুস্থ গবাদীপশু হাঁস-মোরগ হর-হামেশা বিক্রি হয় জেলা শহর মৌলভীবাজার ও উপজেলা সদরের বাজারগুলোতে। পবিত্র মাহে রমজানে গরু ও খাশীর ব্যাপক চাহিদা থাকায় সাধারণ ভোক্তারা চোখ বুঝে কিনে নেন এসব পশুর মাংস। কিন্তু পশুর মাংস মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ঝুঁকি হতে পারে তা অনেকেই জানেন না। আর যারা জানেন তাদের করার কিছুই থাকেনা।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ এবি এম সাইফুজ্জামানের সাথে। তিনি এ সংবাদদাতাকে বলেন, দেশে এন্টিবায়োটিক প্রয়োগকৃত কিংবা অসুস্থ পশু সনাক্ত করতে ঢাকায় একটি ল্যাবরেটরি তৈরি হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে বছর দুই-এক পর এটি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হবে।
তিনি বলেন, সাভারে তৈরি হতে যাওয়া এ ল্যাবরেটরি যখন সনাক্তকরনের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত হবে তখন মৌলভীবাজার থেকে সন্দেহজনক গবাদী পশুর মাংস প্যাকেট করে সাভারে পাঠিয়ে নিশ্চত হওয়া যাবে এটি কতটুকু স্বাস্থ্য সম্মত। পরীক্ষায় যদি ধরা পড়ে এটাতে ভেজাল আছে তবেই আমরা ওইসকল বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারবো।
তিনি আরো বলেন, ভ্রাম্যমান আদালতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যখন আমরা মাংসের দোকানে অভিযান চালাই। তখন দোকানীরা বলে এ মাংসে এন্টিবায়োটিক অথবা ভেজাল নেই। তখন পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ না থাকায় আমাদেরও কিছুই করার থাকেনা।
তিনি জানান, তার বিভাগের “ব্যাটেনারী সার্জারী” পদে ডাক্তার শুধু সদর ও কুলাউড়া উপজেলায় রয়েছেন। বাকি ৫টি উপজেলায় এ পদ শুন্য। তাছাড়া তাদের মাঠ কর্মী বলতে গেলে একেবারেই নাই। এছাড়াও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ের সাথে তাদের সমন্বয়ের অভাব রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু আমলাতান্ত্রিক মোবাইল কোর্ট দিয়ে কিছুই করা যাবেনা, জনসচেতনার প্রয়োজন খুব বেশী। তার মতে বিদেশে সংসদ সদস্যরা “সেইভ ফুডে” কাজ করে থাকেন।
উল্যেখ্য, মাহে রমজানে প্রতিনিয়ত ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের আয়োজনে জেলা শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন দোকানে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা গেলেও গবাদী পশুর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কিছুই করতে পারছেনা।
ভোক্তা’র মৌলভীবাজার কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মোঃ আল আমিন এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, গবাদি পশু পরীক্ষা-নিরীক্ষার ক্ষেত্রে আমরা কিছুই করতে পারিনা। এটা সংশ্লিষ্ট প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তারা দেখবেন।
জেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ২ হাজার ৭শ ৯৯ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে মৌলভীবাজার জেলা। জেলার ৭টি উপজেলায় ৬৭টি ইউনিয়নে ২হাজার ১৫টি গ্রামে ১৯লাখ ১৯হাজার ৬২জন ভোক্তা বাস করেন। এ জেলায় ৭২হাজার ৯শ ৭৭টি মহিষ, ১লাখ ৮৮হাজার ৫শ ১৪টি ছাগল, ২৫হাজার ৬শ ১২টি ভেড়া, ২১লাখ ৯২হাজার ৫৩টি মোরগ -মোরগী ও ৪লাখ ৮১হাজার ৬শ ৩টি হাঁস রয়েছে। এ বিপুল পরিমাণ প্রাণীসম্পদের দেখবাল করতে চোখে পড়ার মত কর্মীবাহিনীরও প্রয়োজন।