মৌলভীবাজার অফিস।। মৌলভীবাজারে ৪৮তম বিজয় দিবস পালিত হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর ভোরে সুর্যোদয়ের সাথে সাথে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা করা হয়। পরে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিনের কর্মসুচি শুরু হয়।
মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের কেন্দ্রিয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে বীর শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা জানান, মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য নেছার আহমদ, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন, জেলা প্রশাসক বেগম নাজিয়া শিরীন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান, পুলিশ সুপার মোঃ ফারুক আহমেদ পিপিএম(বার), জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মিছবাউর রহমান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল হোসেন, পৌরসভা মেয়র মোঃ ফজলুর রহমান, আওয়ামীলীগ নেতা ও শিক্ষানুরাগী এম এ রহিম সিআইপি, আ’লীগ নেতা আব্দুল মালিক তরফদার ভিপি সোয়েব। এছাড়াও বিএনপিসহ রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নানা শ্রেনী পেশার মানুষ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
জেলা বিএনপি’র আয়োজনে সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক পৌরসভা মেয়র ফয়জুল করিম ময়ুন, সহ-সভাপতি এম এ মুকিত, সহ-সভাপতি আশিক মোশাররফ, প্রথম যুগ্মসম্পাদক মো.হেলু মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক বকসী মিসবাউর রহমানসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা শ্রদ্ধা জানান।
এছাড়াও মৌলভীবাজার পৌরসভার আয়োজনে পৌর মিলনায়তনে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদানসহ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সন্ধ্যায় এম সাইফুর রহমান অডিটোরিয়ামে আলোচনাসভা, পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জেলা প্রশাসক বেগম নাজিয়া শিরীন’র সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য নেছার আহমদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান, পুলিশ সুপার মোঃ ফারুক আহমেদ পিপিএম(বার) প্রমূখ।
“বিজয়ের সুফল চাই, বিভেদ নয় ঐক্য চাই” এই স্লোগানে ১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে মৌলভীবাজারে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করেছে মৌলভীবাজার ছাত্রশিবির। ১৬ ডিসেম্বর সকালে মৌলভীবাজার শহরের সিলেট সড়ক এলাকা থেকে তাদের শোভাযাত্রাটি শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে পশ্চিমবাজার এলাকায় এসে সমাবেশে মিলিত হয়। শোভাযাত্রা পরবর্তী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ছাত্রশিবির মৌলভীবাজার শহর শাখা সভাপতি আব্দুল মুমিত।
এসময় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবির মৌলভীবাজার সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। সমাবেশে শহর শিবিরের সভাপতি আব্দুল মুমিত বলেন, ‘১৯৭১ সালে ৯মাসের রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে আমরা একটি সোনার বাংলাদেশ পেয়েছি। পৃথিবীর মানচিত্রে আমাদের পরিচয় হয়েছে। আমরা যে শিক্ষার অধিকার নিয়ে স্বাধীন হয়েছি, সেই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। আজ সকল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে সকল প্রতিষ্ঠানে গুন্ডা বাহিনী পালন করা হয়েছে। আজ যখন ছাত্ররা তাদের অধিকার নিয়ে কথা বলে তখন তাদেরকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে স্তব্ধ করে দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। দেশে উন্নয়নের নামে বালিশ কান্ড ঘটিয়ে শাসক গোষ্ঠিরা দেশের সম্পদকে তাদের নিজস্ব সম্পদে পরিনত করছে।
তিনি বলেন, ইসলামী ছাত্র শিবিবের কার্যক্রম বন্ধ করতে শাষকগোষ্ঠি জুলুম-নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মৌলভীবাজার পৌর এলাকার বড়কাপনে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী ষাঁড়ের লড়াই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে মৌলভীবাজার পৌরসভার কাউন্সিলর মাসুদ আহমদের আয়োজনে হাজারো দর্শক উপস্থিত থেকে লড়াই উপভোগ করেন। লড়াইয়ে বর্ণিল রঙের ষাঁড়ের উপস্থিতি দর্শকদের আনন্দ বাড়িয়ে তুলে এক উৎসবে পরিনত হয়।
প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণকারী ষাঁড়দের বিভিন্ন বিচিত্র নামে ডাকা হয়। প্রতিযোগীতায় হিরালাল, স্বপ্নের সেতু, বাংলাভাই, ফাটা কৃষ্ণ, নেওয়াজ পাগলা, দয়াল, কলঙ্কের ফুল, বিকটসহ নানা নামের ষাড় অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগীতা শেষে বিজয়ী ষাড়ের মালিকদের হাতে পুরষ্কার তোলে দেন পৌর মেয়র মোঃ ফজলুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আয়োজক ও পৌর কাউন্সিলর মাসুদ আহমদ, কাউন্সিলর ফয়ছল আহমদ, কৃষক দলের জেলা সভাপতি জমসেদ মিয়া সহ অন্যান্যরা।
এ প্রতিযোগিতায় মোট ৩৪টি ষাঁড় অংশ নেয়।
১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন মৌলভীবাজার এবং মৌলভীবাজার পৌরসভা দুটি আলাদা আয়োজনের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদান করে।