শিক্ষানুরাগী কলিমুর রাজা চৌধুরী(জিতু মিয়া) স্মরণে লন্ডনে
শোকসভা ও প্রার্থনানুষ্ঠান
বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের নয়াবন্দর দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের প্রতিষ্টাকালীন অন্যতম সদস্য সমাজসেবী সদ্য প্রয়াত একলিমুর রাজা চৌধুরী (জিতু মিয়া) স্মরণে লন্ডনে বসবাসরত বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে শোকসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (৭ জুলাই) বিকেলে পূর্ব লন্ডনের একটি রেষ্টুরেন্টে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত সুনামগন্জ জেলার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ নয়াবন্দর দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আয়োজিত শোকসভা ও দোয়া মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী, কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব কবি সাদিক উল্লাহ। সাবেক শিক্ষার্থী আনোয়ারুল হক চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওত করেন বিদ্যালয়ের সাবেক কৃতি ছাত্র আকতার খান।
শোকসভায় সদ্য প্রয়াত একলিমুর রাজা চৌধুরী (জিতু মিয়া)‘র জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন- সাবেক অধ্যাপক রফিক আহমেদ, সাবেক শিক্ষক আরবাব হোসেন কামালী, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট জাহাঙ্গীর কামালী, মিছবাহ উদ্দিন চৌধুরী, শাহ দবির কামালী, মানিক মিয়া কামালী, মহিম আহমেদ, রেদওয়ান খান, ফয়জুর রহমান চৌধুরী ফজলু, রনক আহমেদ, সাবেক অধ্যক্ষ মুহাম্মদ শাহেদ রাহমান, মিজান চৌধুরী, শেখ মোফাজ্জল হোসেন, শেখ মাহবুব আলম ও রাজিব আহমেদ খান প্রমুখ।
শোকসভা ও দোয়া মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- শিক্ষানুরাগী রতন কামালী, গোলাব মিয়া, আব্দুর রব, ইলিয়াস কামাল শাফি, জিয়াউল হক, মিজান চৌধুরী, মোস্তাক চৌধুরী, আখতার খান, আব্দুল হক কবিরী, আব্দুল রকিব রুনু, জিলু মিয়া, আবু জাফর চৌধুরী সুমন, আসতাক আহমেদ, হাবিবুর রহমান চৌধুরী, আনহার আহমদ সহ আরো অনেকে।
বক্তারা বলেন একলিমুর রাজা চৌধুরী (জিতু মিয়া) ছিলেন একজন মহৎ মানুষ, এলাকার শিক্ষা বিস্তার থেকে শুরু প্রতিটি ভাল কাছে ছিল উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা। তার বাড়ি থেকেই প্রথম এই প্রতিষ্টানটির যাত্রা শুরু হয়। যদিও তিনি আজ আর আমাদের মধ্যে নেই, জীবদ্দশায় করে যাওয়া তার মহৎ কাজ গুলোর মাঝেই তিনি বেঁচে থাকবেন চিরকাল। আমরা তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি সেই সাথে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সস্যদের সমবেদনা জানাচ্ছি। আলোচনা শেষে প্রয়াতের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনায় অনুষ্ঠিত হয় দোয়া মাহফিল।
শাহাব উদ্দিন বেলাল ছিলেন ‘বিপন্ন মানুষের বন্ধু’
প্রয়াত সাংবাদিক শাহাব উদ্দিন বেলাল স্মরণ ও স্মারক প্রকাশনা অনুষ্ঠানে সুধীজন তাকে ‘একজন বিপন্ন মানুষের বন্ধু ছিলেন’ আখ্যায়িত করে বলেন, শাহাব উদ্দিন বেলাল নিজের কথা নিয়ে না-ভেবে পরের কথা নিয়ে ভাবতেন এবং পরোপকার করাই ছিল তার অন্যতম ব্রত। বিরল এই মানুষটি বহুদিন বেঁেচ থাকবেন পূর্ব লন্ডনের বাঙালির মনে। তিনি প্রাণ দিয়ে মানুষকে ভালোবাসতেন, সংকটে মানুষের পাশে দাঁড়াতেন ছাড়াও তিনি ছিলেন একজন প্রতিবাদী সামাজিক ও রাজনীতিক ব্যক্তি।
পুর্ব লন্ডনে অবস্থিত সাপ্তাহিক পত্রিকা অফিসে গত ১১ জুলাই অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বর্ষিয়ান রাজনীতিক সুলতান মাহমুদ শরীফ। ড. আনসার আহমদ উল্লাহর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সমাজকর্মী, সাংবাদিক লেখক ও সুহৃদজন। স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন শাহাব উদ্দিন আহমেদ বেলালের সহধর্মিণী ও তার পুত্রকন্যারাও।
বক্তব্য রাখেন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মোহাম্মদ বেলাল আহমেদ, পত্রিকার সম্পাদক মোহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরী, মানবাধিকার নেতা আবদুল আহাদ চৌধুরী, চলচ্চিত্রশিল্পী স্বাধীন খসরু, প্রেসক্লাবের সহসভাপতি ব্যরিস্টার তারেক চৌধুরী, চ্যানেল এস এর হেড অব নিউজ কামাল মেহেদী, প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ সালেহ আহমেদ, সাবেক কাউন্সিলারদের মধ্যে নূরউদ্দিন আহমেদ ও সেলিম উল্লাহ, রেইনবোর কর্ণধার মোস্তফা কামাল, প্রেসক্লাবের সাবেক ট্রেজারার আস ম মাসুম, কমিউনিটি নেতা সিরাজুল ইসলাম, আবদুল মালিক খোকন । সাংবাদিকদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন ছাব্বিশে টিভির জামাল আহেমেদ খান, ইউকে বাংলা রিপোর্টার্স ইউনিটির শাহেদ রহমান, হাসনাত চৌধুরী, মোহাম্মদ হাসনাত এ খান, বিশ্ববাংলার শাহ মুস্তাফিজুর রহমান বেলাল, কবি কাউয়ূম আবদুল্লাহ ও রানার টিভির সাংবাদিক রুমানা রাখি।
পরিবারের পক্ষে বক্তব্য রাখেন সহধর্মিণী আয়েসা আহমেদ, কন্যা মহিমা আহমেদ, পুত্র হাসনাত আহমেদ, খায়ের আহমেদ, মুহিত আহমেদ, আজাদ আহমেদ, ভ্রাতুষ্পুত্র আমানুর রহমান ও শ্যালক শাহাজান আলী।
বক্তাদের স্মৃতিতর্পনে উঠে আসে শাহাব উদ্দিন বেলালের কর্মময় জীবনের নানা ঘটনার কথা। তিনি যে বিপন্ন মানুষের বন্ধু ছিলেন তা ধ্বনিত হয় সবার কণ্ঠে। সমাজকর্ম, সাংবাদিকতা ও রাজনীতির অঙ্গনে একজন সোচ্চার ব্যক্তি হিসাবে তার অবস্থান ছিল প্রশ্নাতীত।
উল্লেখ্য, শাহাব উদ্দিন বেলাল ১৯৭৫ সালের শেষাংশে বিলাতে এসেই জড়িয়ে পড়েন বাঙালি কমিউনিটির বর্ণবাদ বিরোধী সংগ্রামে, সামাজিক কল্যাণমূলক কাজে সক্রিয় ভূমিকা রাখাসহ টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলে দুইদফা কাউন্সিলার নির্বাচিত হন। বাঙালির আবাসিক সমস্যা মোকাবিলায় তিনি স্মরণীয় ভূমিকা রাখেন। তিনি ছিলেন যুক্তরাজ্য যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক। ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটির নেতা । বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারি শাহাব উদ্দিন বেলাল ২০১৮ সালে ২৬ জানুয়ারি প্রয়াত হন।
অনুষ্ঠানে শাহাব উদ্দিন বেলাল স্মরণে প্রকাশিত স্মারক বিতরণ করা হয়। এটি সম্পাদনা করেছেন সাংবাদিক ড. আনসার আহমদ উল্লাহ ও আস ম মাসুম। সম্পাদনা পরিষদে রয়েছেন বর্ষিয়ান নেতা সুলতান শরীফ, এক্টিভিস্ট রাজনউদ্দিন জালাল, সাংবাদিক সাঈম চৌধুরী, যুবনেতা জামাল আহমেদ খান, সাংবাদিক জুয়েল রাজ, অপু রায় ও সারওয়ার কবির। এতে শাহাব উদ্দিন বেলালকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন সাংবাদিক লেখক ও কমিউনিটির বিশিষ্টজন। সম্প্রতি এ স্মারকটি প্রকাশিত হয়েছে।