মুক্তকথা সংবাদ।। ২০১৭সালের আগষ্টে মায়ানমারের(ব্রহ্মদেশ বা বার্মা) উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে মায়ানমার সামরিক বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত ৯,৩২০০০ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয়প্রার্থী হয়ে বাংলাদেশের আশ্রয় কেন্দ্রে বসবাস করছে। প্রথম দিকে প্রায় ৭,০০০০০ রোহিঙ্গা জীবন নিয়ে পালিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়।
অভাবনীয় এ সংকট শুরু হওয়ার আগ থেকেই বাংলাদেশ নিজেদের সমস্যা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছিল। ঠিক এমনই দূর্যোগময় সময়ে বর্মী সামরিক বাহিনী ও বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর অমানবিক বিভিন্ন হিংসাত্মক কাজ, হত্যা, লন্ঠনের ফলে ২লাখ ১২হাজার রোহিঙ্গা এসে উঠেছিল বাংলাদেশে। এর পর থেকে যে অত্যাচারিত রোহিঙ্গাদের পালিয়ে আসার ঢেউ উঠে, ৩মাসের মধ্যে এদের সংখ্যা দাড়ালো ২লাখ ১২হাজার থেকে ৯লাখ ৩২হাজারে।
সংখ্যার দিক থেকে এ পরিমান বিশ্বের কোন দেশে আশ্রয় নেয়ার রেকর্ড তৈরী করা পরিমাণ। এ রকম বিপুল পরিমান মানুষ দীর্ঘসময় একটি ভূমিতে অবস্থান করলে খুব স্বাভাবিকভাবেই সে জমির উপর নেতিবাচক প্রভাব কল্পনার অতীত। ‘বিশ্ব রিফিউজি কাউন্সিল’এর সারা ডিয়ারডর্ফ মিলার’এর গবেষণায় পাওয়া গেছে এক ভয়াবহ চিত্র। যা খুবই সাধারণ জ্ঞানের কথা। ডেবরা লিখেছন, ছোট্ট এলাকায় বিপুল মানুষের আনাগোনা ও বিভিন্নমুখী কাজের ফলে এলাকায় শুরু হয় বন-জঙ্গল ধ্বংস, শাকসব্জির অভাব, মাটিধ্বস, বিশুদ্ধ পানি দূষিতকরণ, বেআইনী পশুপক্ষী হত্যা ও মাছ শিকার। ফলে অতিদ্রুত পুরো এলাকা বিরান ভূমিতে পরিনত হয়। কোন কোন সময় আশ্রয়প্রার্থীদের থাকার সুবিধার জন্য এলাকার সাধারণ মানুষকে তাদের নিজস্ব এলাকা কিছু সময়ের জন্য হলেও ছেড়ে দিতে হয়। ঘরবাড়ী, পায়খানা, রান্নার রসদ ও জ্বালানীর ব্যবহার, ঔষুধপত্রসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য সামগ্রী পৌঁছে দেয়ার জন্য রাস্তা নির্মাণ এসব মিলিয়ে ছোট্ট এলাকার পরিবেশকে নরকের মত করে তুলে।
বলতে গেলে অনেকটা তাই হয়েছে কুতুপালং শ্মরণার্থী কেন্দ্র। কক্সবাজারের কুতুপালং শ্মরণার্থী কেন্দ্র এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় শ্মরণার্থী কেন্দ্র। জানা যায, ‘কক্সবাজারের কুতুপালং শিবিরে বর্তমানে ৮ লাখ ৮৬ হাজার ৭৭৮ জন শরণার্থী বসবাস করছেন।
রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের মুসলিম জনগোষ্ঠি। রাখাইনে দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছিলেন তারা। ২০১৭ সালের আগস্টে সেনা বাহিনী নারকীয় হত্যাযজ্ঞ, অগ্নিসংযোগ শুরু করলে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।’