 
																
								
                                    
									
                                 
							
							 
                    পরিবার পরিজন নিয়ে প্রবাসে বসবাস আমাদের অনেকের কাছেই ছিলো স্বপ্নের মতো। আজ তা বাস্তব হলেও বিষয়টির এখানেই শেষ নয়। জন্মভূমিকে পিছনে ফেলে রেখে আমরা যারা পরদেশকে আপন করে নেয়ার অভিনয় করছি মোটকথা আমরা সবাই এখন অস্তিত্বের লড়াইয়ে উপনীত।
প্রতিটি জাতীরই নিজস্ব পরিচয় থাকে। আমরাও তার থেকে আলাদা নই। আমাদের ভৌগলিক , ধর্ম, ভাষা ও সাংস্কৃতিক পরিচয় আছে। এদেশে কবে থেকে আমাদের আগমন শুরু তা সুনির্দিষ্ট ভাবে বলতে না পারলেও যতোটুকু জানা যায় তা ছিলো ১৯শতকের প্রথমাংশ।এবং তারই ধারাবাহিকতায় আজ এখানে বাংলাদেশ নামটি সুপরিচিত হয়ে উঠেছে। গ্লোবেল ভিলেজ হিসেবে একদেশের নাগরিক অন্য দেশে বসবাস এখন নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়। কিন্তু আমরা যে বিষয়টিতে আটকা পড়ে গিয়েছি তা হলো আমাদের নুতন প্রজন্মকে বাংলা ভাষাতে অন্তত প্রাথমিক শিক্ষা দান করার বিষয়টি।
ফেব্রুয়ারী মাস আসলে আমরা অনেকেই বাংলা নিয়ে অনেক কিছুই লিখি। আমিও এর আওতাধীন একজন। তবে এর অবশ্য একটা অনস্বীকার্য যুক্তি আছে বলে মনেকরি। তা’হলো নিজ চোখে যা অবলোকন করা হয় তা চাইলেও অস্বীকার করা যায় না। এখানে আমাদের ছেলে-মেয়েরা স্কুল কলেজের বাধ্যতামুলক শিক্ষার পাশাপাশি পরিবার থেকে ধর্মীয় শিক্ষা অর্জনে প্রতি সপ্তাহে যথেষ্ট পরিমাণ সময় দিয়ে থাকে। তাই এমতাবস্থায় বাংলা শিক্ষা দানের জন্য অবিভাবকদের সচেতনতার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাস্তব অর্থে দেখা যায় এখানে কিছু কিছু পরিবারে ছেলে-মেয়েরা ভালই বাংলা বলছে তবে বিপরীতে অনেক পরিবারে এর ভিন্নতাও দুঃখজনকভাবে প্রতিয়মান। মূল কথা হলো এক্ষেত্রে শিক্ষা দান এবং পারিবারিক ভাবে নিজেদের মধ্যে বাংলায় কথা বলার বিষয়টি সীমাহীন গুরুত্ব বহন করে।
বৃটেনে নুতন প্রজন্মের কাছে আমাদের মায়ের ভাষা শিক্ষা দানের বিষয়টি নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। খবর নিয়ে দেখা যায় কোন কোন শহরে সপ্তাহ শেষে শনি-রবিবার কমিউনিটি বাংলা স্কুল সফলতার সাথে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, আবার কোথাও কোথাও অতীতে স্কুল চালু ছিলো তবে এখন তাহা অবহেলায় হয়েছে বেহাল দশা।
এখানে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংবাদিক, কবি, সাহিত্যিকদের অনেক সংগঠন আছে। যারা মূলত বাংলা ভাষা কেন্দ্রীক। কিন্তু কথা হলো অনাগত ভবিষ্যতে যদি বাংলাই বেঁচে না থাকলো তখন এসকল সংগঠনই তো বিলীন হবার সম্ভাবন প্রচুর। তাই সংগঠন, পদবী এসকলকে গুরুত্ব না দিয়ে নুতন প্রজন্মের কাছে কিভাবে বাংলা ভাষার প্রাথমিক শিক্ষা পৌঁছানো যায় সেদিকটা নিয়ে ভাবুন। তখন আশা করা যায় এখানে আমাদের বাংলা টিকে থাকবে, টিকে থাকবে আছে যতো সংগঠন।