মুক্তকথা।। সম্প্রতি মৌলভীবাজারের কুরুঞ্জি চা-বাগান এলাকা থেকে প্রায় ৪লাখ টাকা মূল্যের একটি কষ্টি পাথরের মূর্তি উদ্ধার করা হয়েছে। এই কুরুঞ্জি চা-বাগান, কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী কুরমা চা-বাগানের ভেতরেই একটি শাখা চা-বাগান। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ কুরমা বিওপি’র সদস্যরা, চা-বাগানের জগদীশ রাজধর নামের একজন চা-শ্রমিকের বসতঘর থেকে এ মূর্তি উদ্ধার করে। এ নিয়ে বিজিবি’র পক্ষ থেকে কমলগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সীমান্তের মূল সীমারেখা খুটি ১৯০৬/১০এস হতে এই কুরুঞ্জি বাগান এলাকা ৪ কিলোমিটার অভ্যন্তরে অবস্থিত।
জানা যায়, অনুচর সূত্রে বিজিবি খবর পায় যে বাগানের একজন জগদিশ রাজধরের বাড়ীতে একটি মূর্তি বিক্রির দরকষাকষি চলছে। এ খবরে বিজিবি ওই বাড়ীতে অভিযান চালিয়ে বাড়ীর বসত ঘর থেকে কালো পলিথিনে মোড়া মূর্তিটি উদ্ধার করে। বিজিপি’র উপস্থিতি টের পেয়ে উভয় পক্ষ পালিয়ে যায়। মূর্তিটির উচ্চতা ১২.০৫ইঞ্চি এবং প্রস্থ ৫.৫ইঞ্চি। ওজন ৩.৮৫০কেজি। মূর্তির বর্তমান বাজারমূল্য অনুমান ৪লাখ টাকা।
বিজিবি শ্রীমঙ্গলের ৪৬ ব্যাটেলিয়ন ও কমলগঞ্জ থানা সংবাদমাধ্যমের কাছে ঘটনার সত্যতা প্রকাশ করেছেন।
পুরানো হলেও এ খবরটি নিয়ে কিছু জানা ও বুঝার প্রয়োজন রয়েছে। প্রথমতঃ চলমান আইনে মূর্তিবিক্রির এ কাজটি অপরাধ নিঃসন্দেহে। তবে কোন কোন ঘটনার পেছনে জাতীয় বা স্থানীয় সামষ্টিক স্বার্থ লুকিয়ে আছে কি-না তা খুঁজে দেখারও বিষয় বটে। একটি অপরাধের জন্য দোষীকে ধরে শুধু শাস্তি দেওয়াই শেষ কাজ নয়। এ ঘটনার খুব ভেতরে গিয়ে দেখা খুবই প্রয়োজনীয় স্থানীয় তথা জাতীয় স্বার্থিক কোনরূপ উপাদান এ মূর্তির সাথে জড়িত আছে কি-না।
পলিথিনে মোড়ানো মূর্তিটি রাজধরের হাতে আসলো কোত্থেকে? কোথা থেকে কে বা কারা সীমান্তের এই বাড়ীটিতে মূর্তি পৌছে দিলেন? মূর্তিটি কমলগঞ্জেরই কোন এলাকার ভূগর্ভ থেকে পাওয়া না-কি অন্যস্থান থেকে শুধুমাত্র বিক্রির জন্য এখানে আনা হয়েছে। কমলগঞ্জের বহু প্রাচীন ইতিহাস রয়েছে। এমন মূর্তি কমলগঞ্জের কোন কোন হিন্দু পরিবারের নিজস্ব সম্পত্তি হলে হতেও পারে। প্রয়োজনের তাগিদে কোন পরিবার বিক্রির চেষ্টা করলে করতেওতো পারেন। এ মূহুর্তে অগুরুত্বপূর্ণ মনে করলেও বিজিবি ও পুলিশ ঘটনাটির এমন খুঁজাখুঁজির পথে এগিয়ে আসবেন এমন অনুরোধ রাখতে চাই এবং আশা করি এগিয়ে আসবেন। মূর্তিটি কমলগঞ্জের হয়ে থাকলে এখানে প্রত্নতাত্বিক খুঁজাখুঁজির অনেক কিছু আছে।