লন্ডন: বৃহস্পতিবার, ২৯শে অগ্রহায়ণ ১৪২৩।। একাত্তুরের যুদ্ধদিনের সেই ভয়ঙ্কর সময়ের মিটেকড়া কাহিনী শুনানোর এক মনপোড়ানি আসর বসেছিল ঢাকার কুর্মিটোলায় আর্মি গলফ কোর্সের পামভিউ রেস্টুরেন্টে।
বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে আসা ভারতীয় মিত্র বাহিনীর ২৮ সেনাকর্তা আর তাঁদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ রেখে যুদ্ধ করা এই দেশের সেনাদের উপস্থিতিতে সে ছিল মনোমুগ্ধকর এক হাসি-বেদনার পরিবেশ। খুব রসিয়ে লিখেছেন অঞ্জন রায়, আনন্দবাজারে।
তিনি লিখেছেন, “এ যেন এরিক মারিয়া রেমার্কের অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট। সৈনিকের যুদ্ধদিনের কথা। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নয়, রণাঙ্গণ একাত্তর ফিরে ফিরে এল ঢাকায়। বাংলাদেশ আর ভারতের সেই যুদ্ধদিনের সৈনিকরা শোনালেন, যা শোনা হয়েছে কিংবা যা শোনা হয়নি, সেই ইতিহাস।”
বাংলাদেশের একটি ২৪ ঘন্টার নিউজ চ্যানেল এবং ঢাকার ভারতীয় হাই কমিশনের যৌথ আয়োজনে রাজধানীতে এই আসর বসেছিল। দীর্ঘ নয় মাস মুক্তির সংগ্রাম করে যে বিজয় অর্জন তার গল্প এখন অনেকেরই জানা। কিন্তু অজস্র ঘটনার মধ্যে থেকে গেছে আরও অনেক অজানা গল্প।
“রেঙ্গুন থেকে আসা প্লেন আকাশ থেকেই ফিরে যায়….
জিপি ক্যাম্পেন হেমন্ত সরদেশাই ছিলেন ৪নং সেক্টরে। ভারতের গুয়াহাটি থেকে তিনি যুদ্ধে গিয়েছিলেন। বাংলাদেশে তাঁর সেরা যুদ্ধ ছিল ঢাকার কুর্মিটোলায়। তবে তাকে আজও যে স্মৃতি শিহরিত করে তা হচ্ছে, তিনি ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন পাকিস্তানের জেনারেল নিয়াজির পলায়ন।
হেমন্ত সরদেশাই বলেন, রাতেই খবর এলো রেঙ্গুন থেকে একটি প্লেন এসে জেনারেল নিয়াজিকে নিয়ে যাবে। সেটি অবতরণ করবে তেজগাঁও বিমানবন্দরের রানওয়েতে। তাঁর দায়িত্ব হল নিয়াজি যাতে কোনও ভাবেই পালাতে না পারেন। সে লক্ষ্যে দায়িত্ব নিয়ে হেমন্তের নেতৃত্বে সকাল থেকেই শুরু হয় বোমা হামলা।
হেমন্ত বলেন, ছোট্ট রানওয়ে, ঘন কুয়াশা। তার মধ্যে এই হামলা ছিলো খুবই বিপজ্জনক। কিন্ত তাঁরা পিছপা হননি। একের পর এক বোমা ফেলতে থাকেন রানওয়ের ওপর। ফলে রেঙ্গুন থেকে আসা প্লেন আকাশ থেকেই ফিরে যায়।”