মুক্তকথা: লন্ডন।। মামুলি স্বার্থ হাসিলের আদিমতায় হত্যা করা হয়েছে একজন বনরক্ষীকে আদমপুরের রাঙ্গিটল্লা এলাকায়। বনদস্যুরা কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে ফারুক আলী (শহীদ)(৩০) নামের ওই বনরক্ষীকে। তিনি কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী ইসলামপুর ইউনিয়নের আদমপুর বনবিটের কর্মি ছিলেন। ছিলেন ওই সামাজিক বনায়ণে ভিলেজারের দায়িত্বে। সৎ ও সহজ সরল লোক হিসেবে পরিচিত ফারুককে বনরক্ষীর দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা অবস্থায় হত্যা করা হয়। ঘটনাটি গত ২২ শে ফেব্রুয়ারীর। ‘কমলকুড়ি.কম’ এ খবর প্রকাশ করেছিল। অনলাইনটি থেকে জানা যায়, বিকালের কোন এক সময়ে তাকে ৬নং হেক্টরের ২০০৭/২০০৮ রাঙ্গিঠিল্লা নামক সামাজিক বনায়ণের নির্জন স্হানে বনদস্যুরা হত্যা করে লাশ ফেলে যায়।
রাতে বাড়িতে না আসায় খোঁজ নিতে গিয়ে পরের দিন ২৩ শে ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার ভোর ৬ টার দিকে সামাজিক বনায়নের ৬নং হেক্টরের ২০০৭/২০০৮ আকাশ মনি বাগানে তার ক্ষত-বিক্ষত নিথর দেহটি পাওয়া যায়। নিহতের পরিবার ও গ্রামে চলছে শোকের মাতম বলে অনলাইনটি মন্তব্য করে ঘটনার বিবরণ লিখেছে- ‘রাজকান্দী রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ অফিসার আং আহাদ চৌধুরী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ফারুক আলী এবং তার পিতা নূর মোহাম্মদ দীর্ঘদিন ধরে বন বিভাগের রাঙ্গাঠিল্লা এলাকায় ভিলেজারের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন, আমরা এ বিষয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
হত্যাকান্ডের এ খবরে কমলগঞ্জ থানার তদন্ত ওসি নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ রাঙ্গাঠিল্লা সামাজিক বনায়ণে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরন করেছেন এবং এ ব্যপারে কমলগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে ‘কমলকুড়ি’ বিবরণে উল্লেখ করেছে।
নিশ্চয়ই ইতিমধ্যেই আইনানুগ মামলা দায়ের হয়েছে এবং ঘাতককে গ্রেপ্তারের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। আমাদের বনায়ন ও বন সংরক্ষনের সাথে বনকর্মীর নিরাপত্তার বিষয় পেট-পিটের মতই নিবিড়ভাবে জড়িত। একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটির উন্নয়নতো দূরের কথা টিকে থাকার বিষয়টি কল্পনার অতীত। আমাদের দেশে বনরক্ষীদের জীবন খুবই ঝুঁকিময়। প্রায়ই বিভিন্ন নমুনার হতাহতের খবর পাওয়া যায়। তাই বনরক্ষীরা যাতে নিরাপদে তাদের দায়ীত্ব পালন করতে পারে সে ব্যবস্থাতো বনবিভাগকেই দেখতে হবে। রক্ষীর জীবন বিপন্ন রেখে কোনভাবেই বনাঞ্চল সংরক্ষন বা উন্নয়ন কোনটাই সম্ভব নয়।
বিগত ১০ বছর ফারুখ বনরক্ষী হিসেবে কাজে নিয়োজিত ছিলেন। তার একটি কন্যা সন্তান, স্ত্রী ও পিতা-মাতা এমনকি ভাইবোনও থাকতেই পারে। জয়দর আলী বলে তার এক বড় ভাই আছেন। আমাদের আশা বনবিভাগের কর্তৃপক্ষ সে অবস্থা বিবেচনায় এনে খুন হয়ে যাওয়া ফারুখের পরিবার-পরিজনের যাতে দু’টো খেয়ে পড়ে বাঁচার সুযোগ হয় তার একটি বিহীত করবেন এবং আগামীতে এভাবে যাতে কোন বনকর্মীকে প্রাণ দিতে না হয় সে দিকে খেয়াল রেখে কিছু সুনির্দিষ্ট বিহীত করবেন।