লন্ডন: সোমবার, ৩ বৈশাখ ১৪২৪।। তখন বেশ জমজমাটি নাইট ক্লাব। নাচে-গানে এবং রকমারি পানীয়ে মেতে ক্লাবের সদস্যেরা। তার মধ্যেই কিছু একটা যেন উড়ে এসে গায়ে পড়ল। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তীব্র জ্বালায় হাত-মুখ চেপে ছটফট করতে লাগলেন অনেকেই।
কী হয়েছে? প্রথমে বুঝে উঠতে পারছিলেন না ক্লাবের সদস্যেরা। কিছু পরেই সবটা পরিষ্কার হয় তাঁদের কাছে। ভিড়ের মধ্যেই কেউ তাঁদের উপরে অ্যাসিড ছুড়ে দিয়েছে।
রবিবার স্থানীয় সময় রাত ১০টা নাগাদ লন্ডনের হেকনি এলাকার ম্যাঙ্গল নামে নাইট ক্লাবে এই হামলা চালানো হয়। তবে এই হামলার সঙ্গে সন্ত্রাসের কোনও যোগ নেই বলে প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে। কে বা কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, কোন বিদ্বেষ থেকে এই হামলা, তা এখনও জানতে পারেনি পুলিশ।
লন্ডন পুলিশের এক কর্তা জানান, ওই সময় প্রায় ৬০০ জন লোক ক্লাবের ভিতরে ছিলেন। তখনই এই হামলা হয়। এই ঘটনায় কেউ মারা যাননি। তবে ১২ জন গুরুতর জখম হয়েছেন। তাঁরা নিকটবর্তী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জখমদের মধ্যে এক মহিলার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁর একটি হাত এবং মুখের একটা অংশ সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছে।
ওই রাতে এই হামলার খবর পেয়েই পুলিশের একটি বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ক্লাবটি তৎক্ষণাৎ ফাঁকা করে দেওয়া হয়। আশেপাশের এলাকা ঘিরে ফেলা হয়। কিন্তু তল্লাশি চালিয়েও আততায়ীর খোঁজ পায়নি পুলিশ। ক্লাব থেকে ওই তরলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেই এটাকে অ্যাসিড হামলা বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়।
লন্ডন পুলিশ সূত্রে খবর, সাম্প্রতিক কালে অ্যাসিড হামলা লন্ডনে ভীষণ বেড়ে গিয়েছে। ২০১৫ সালে ২৬১ জন অ্যাসিড হামলার শিকার হন। ঠিক তার পরের বছর অর্থাৎ ২০১৬ সালে এই সংখ্যাটা দ্বিগুণ বেড়ে যায়। ৪৫৪ জনের উপর অ্যাসিড নিয়ে হামলার খবর পায় পুলিশ। চলতি মাসেও তিন সদস্যের এক পরিবারের উপরে অ্যাসিড হামলা হয়েছিল।
তদন্তকারীদের মতে, ছুরি বা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে চলাফেরা করলে ধরা পড়ার সুযোগ অনেক বেশি। তাই তার বদলে হয়তো এখন অ্যাসিডকেই হাতিয়ার করছে অপরাধীরা