মুক্তকথা, লন্ডন: সামাতা উল্লাহ। ৩৪ বছরের এক বাঙ্গালী যুবক। থাকেন ইংল্যান্ডের কার্ডিফে। জন্মগত ‘ওটিজম’এর রোগী। দেখতে নিরীহ গো-বেচারা! ‘ওটিজম’ রোগীরা সাধারণতঃ অন্যদের সাথে সহজেই যোগাযোগ করতে পারে না। কিন্তু হলে কি হবে, ইংল্যান্ডের মেট্রোপলিটান পুলিশ কমান্ডার ডিন হেডনের কাছে সামাতা এক ভয়ঙ্কর ব্যক্তি! কমান্ডার হেডনের ব্যাখ্যায়, সামাতা স্বশিক্ষিত একজন কম্পিউটার কারিগর। সে নিজে থেকেই কম্পিউটারের বিভিন্ন অত্যাধুনিক কারিগরী আর কলা-কৌশল রপ্ত করেছে। শোবার ঘর থেকেই সে কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকে। তার শোবার ঘরই বিভিন্ন কারিগরীর অনলাইন এক পাঠাগার আর এক ‘ওয়ানস্টপ’ দোকানের মত। কম্পিউটার ‘সফ্টওয়ার’ ব্যবহার করে নির্মিত তার ওই পাঠাগার থেকে নিরাপত্তার বিভিন্ন কলাকৌশল শিখতো ‘সন্ত্রাসীরা’! সে নিজে থেকেই দুনিয়ার সন্ত্রাসীদের জন্য এই অনলাইন পাঠাগারটি নির্মাণ করেছিল এবং তার শোবার ঘরে বসেই তা পরিচালনা করতো! এটি ছিল ‘নিজে দেখে নিজেকে সাহায্য কর(selp-help)’ ধর্মী বিশ্ব সন্ত্রাসীদের কাজে আসে এমন একটি অনলাইন পাঠাগার! সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো সে গোপন ব্যবহারের জন্য সার্টের ‘কফলিন’ ইউএসবি ব্যবহার করতো! শুনতে খুবই অশ্চর্য্য শুনালেও এমনটি ঘটেছে বৃটেনে। বৃটেনের ‘ওল্ড বেইলী’ আদালতের ফরমান, সামাতা উল্লাহ এ সময়ের এক নতুন ও ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী প্রজন্মের মানুষ! একজন সাইবার সন্ত্রাসী।
তার ওই অনলাইন পাঠাগারে গিয়ে সহজেই নির্দেশ পাওয়া যেতো কিকরে নিরাপত্ত্বা সেবার লোকজন ও পুলিশের সন্দেহ থেকে নিরাপদ দূরত্বে ও একধাপ আগে থেকে কাজ করা যায়। শুধু কি তাই, তার ওই পাঠাগারে প্রশিক্ষন পাওয়া যেতো ‘মিসাইল নিক্ষেপন’ পদ্বতির উপর। আর সন্ত্রাসীদের প্রয়োজনীয় গুজবে ভরপুর ছিল তার সেই পাঠাগার! কমান্ডার হেডন বলেন এই প্রথম আমরা এমন ধরনের অস্বাভাবিক মাত্রার সন্ত্রাসী কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করলাম। সামাতা তার স্বশিক্ষায় অর্জিত কম্পিউটার জ্ঞান সন্ত্রাসবাদকে এগিয়ে নিয়ে যাবার কাজে ব্যবহার করেছে এবং সে সুনির্দিষ্ট ইসলামিক স্টেট’এর সাথে শুধুই যে নামকোয়াস্তে জড়িত তা’নয় সে খুব জেনে-শুনেই বিশ্ব সন্ত্রাসীদের অনুমোদীত আদর্শিক সদস্য। সে স্বজ্ঞানে জেনে-বুঝে এসব কাজ করেছে এবং নিরাপদ থাকার চিন্তা থেকেই সে তার শোবার ঘর ব্যবহার করেছে। ওল্ড বেইলী তার ৮বছরের জেল দিয়েছেন এবং জেল খেটে বের হয়ে আসার পর আরও ৫ বছর তাকে পুলিশী নজরে থাকতে হবে।