আব্দুর রহমান শাহীন, জুড়ী।। আগামী ২৮ডিসেম্বর জুড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী ফুলতলা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। নির্বাচনী এলাকা ফুলতলার পাশাপাশি এর ধামামা বইছে পুরো উপজেলা জুড়ে। সর্বত্রই চায়ের চুমুকে চুমুকেই চলছে নির্বাচনী আলাপ আলোচনা। আর নিরবে শ্রোতার ভূমিকায় ও চায়ের অর্ডারের অপেক্ষায় কান পেতে আছেন দোকানীরা। তবে অবস্থাবুঝে মাঝেমধ্যে নির্বাচনী আলাপে তারাও শরিক হয়ে রসদ যোগাচ্ছেন। আলাপ আলোচনার মধ্যে একাধিকবার চলছে চা, বিস্কুটসহ হরেক রকমের বেকারী খাবারের অর্ডার। চায়ের দোকানীরা একদিকে ফ্রিতে শুনতে পারছেন আলোচনা, সমালোচনা ও পর্যালোচনা। অপরদিকে ব্যবসাও হচ্ছে জমজমাট।
চলছে নির্বাচনে কোন প্রার্থী বিজয়ী হলে বেশি উন্নয়ন হবে। কার চেয়ে কে বেশি ইউপি’র উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে অবদান রাখতে সক্ষম হবেন। এভাবেই যোগ্যতার বিচারে সরগরম ফুলতলা ইউপি’র হাট-বাজার ও ভোটাররা। বর্তমানে ভোটারদের আলোচনায় রয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী মাসুক আহমদ(নৌকা প্রতীক), ফুলতলা ইউপি আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী ফয়াজ আলী(ঘোড়া প্রতীক) এবং বিএনপি মনোনীত প্রার্থী বাবুল আহমদ(ধানের শীষ)’এর নাম।
ভোটারদের ধারণা এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাসুক আহমদ ও আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী ফয়াজ আলীর হাড্ডাহাড্ডি ভোট লড়াই হবে। এদিকে, বিএনপির প্রার্থী বাবুল আহমদের ব্যক্তিগত ও দলীয় ভোট ব্যাংক থাকায় ত্রিমুখী ভোট লড়াইয়ে তাঁর নামও রয়েছে ভোটারদের আলোচনায়। কারণ, ওই ইউপিতে জনপ্রিয়তা ও ভোটারদের সাথে ৩ জনেরই সুসম্পর্ক রয়েছে।
এলাকা ঘুরে দেখা যায়, তুমুল প্রচার-প্রচারণা চলছে। বিজয়ী হতে এ ৩প্রার্থীরা মরিয়া হয়ে উঠেছেন। ভোট যুদ্ধে কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। নিজের ভোট বাক্সে ভোট চাইতে, যে যার মতোই চেষ্টা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে, মাসুক আহমদকে নৌকা প্রতীকে বিজয়ী করতে মাঠে কোমর বেঁধে নেমেছেন আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা। চলছে বিভিন্ন ওয়ার্ডে শেষ দফার গণসংযোগ ও উঠান বৈঠক। অপরদিকে বসে নেই সদ্য আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত ফুলতলা ইউপি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ফয়াজ আলী ও তাঁর সমর্থকরা। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন তিনি ও সমর্থকরা। প্রার্থনা করছেন ভোট। ফয়াজ আলীর সমর্থকরা জানান, ২৮ ডিসেম্বর ফয়াজ আলীর গলায় বিজয়ের মালা পরাতে সকল প্রকার বাঁধা উপেক্ষা করে মাঠে কাজ করবে তারা।
অন্যদিকে সুযোগের অপেক্ষায় বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী বাবুল আহমদ-এর ‘ধানের শীষ’। আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীর ভোট ভাগাভাগির সুযোগে বিজয়ী হওয়ার প্রচেষ্টায় কাজ করছেন তিনি। ভোটারদের মন জয় করে দলীয় প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচনী মাঠে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। ভোটারগন বলছেন, এবারের নির্বাচন বিগত নির্বাচনগুলোর চেয়ে আমেজ ও প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ হবে। প্রার্থীদের গতি, অগ্রগতি ও প্রতিশ্রুতি বিবেচনা করে যোগ্য প্রার্থীকেই নির্বাচিত করবেন তারা।