আজকাল ওয়েবডেস্ক: যে শক্তি ফ্রান্সকে বিভাজিত করছে, দমন করছে, সেই শক্তির বিরুদ্ধে লড়তে হবে। নিজের প্রথম বক্তৃতায় বললেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত ইম্যানুয়েল ম্যাক্রঁ। এই জয় শুধু তাঁর নয়, সারা ফ্রান্সের। বললেন ৪৮ বছরের বিজয়ী নির্দল প্রার্থী। তাঁর জয় নিয়ে যাঁরা ক্ষোভ এবং সংশয় প্রকাশ করেছিলেন, তাঁদের প্রতি কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি ম্যাক্রঁ। জয়ের জন্য দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বললেন, অনেকে ভেবেছিলেন, তাঁর জয় অসম্ভব, কিন্তু তা সম্ভব করে দেখিয়েছেন ফরাসিরা। একই সঙ্গে মারিন ল্য পেনের সমর্থকদের উদ্দেশ্যে তাঁর বার্তা, ফ্রান্সে চরমপন্থীদের কোনও জায়গা নেই তা বোধ হয়, তাঁরা বুঝতে পেরেছেন। আগামী রবিবার দেশের প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নেবেন ম্যাক্রঁ। ৬৬.১ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী মারিন ল্য পেনকে হারিয়েছেন নেপোলিয়নের পরে কনিষ্ঠতম ফরাসি রাষ্ট্রনায়ক ম্যাক্রঁ।
এদিন জয়ের পর বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া অলাঁদের সঙ্গে শহিদ জওয়ানদের স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য দেন। তারপর অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীদের সঙ্গে করমর্দন করেন বিদায়ী এবং আগামী প্রেসিডেন্ট।
ল্য পেনের বদলে ম্যাক্রঁ জেতায় ইওরোপীয় ইউনিয়নেও স্বস্তির হাওয়া। ইওরোপিয়ান কমিশন প্রধান জেন ক্লড জাঙ্কার ট্যুইট করেছেন, ফ্রান্স ইওরোপের ভবিষ্যৎ নেতাকে নির্বাচিত করায় খুশি। জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল বলেন, ম্যাক্রঁ ফ্রান্সের কয়েক কোটি মানুষের আশাই শুধু নয়, জার্মানিরও অনেক আশা তাঁকে নিয়ে। ভোটের আগে পেনকে সমর্থন করলেও ম্যাক্রঁর বিপুল জয়ে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্যুইট করে জানিয়েছেন, তিনি ম্যাক্রঁর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে আগ্রহী।
নতুন প্রেসিডেন্টের কাছে এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ, আগামী জুনে হতে চলা ফ্রান্সের পার্লামেন্ট নির্বাচন। পার্লামেন্টে তাঁর নতুন দলের প্রতিষ্ঠার জন্য এবার কোমর বাঁধছেন ম্যাক্রঁ। সংখ্যা গরিষ্ঠতা না পেলে অবশ্য জোট গড়তে হবে তাঁকে। এছাড়া নিজের প্রচারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নও ম্যাক্রঁর কাছে অন্যতম চ্যালেঞ্জ। প্রচারে তাঁর প্রতিশ্রুতি ছিল, সরকারি খাতে প্রায় ৬০ বিলিয়ন ইউরো ব্যয় কমানো। প্রায় এক লক্ষ কুড়ি হাজার সরকারি চাকরি কমানো, বেকারত্ব ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৭ শতাংশে আনা। শ্রম আইন শিথিল করা এবং স্বনির্ভরদের নিরাপত্তা দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ম্যাক্রঁ।