হারুনূর রশীদ।।
লন্ডন: তিনি পেশায় কূটনীতিক। বৃটেনে জন্মগ্রহন না করেও বৃটেনের পক্ষে বড় বড় কূটনৈতিক দায়ীত্ব পালন করে আসছেন। বর্তমানে তিনি পেরুতে বৃটেনের রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। ২০১৩ সালে এ নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। এবার তাকেই পছন্দ করা হয়েছে বৃটেনের “কেমেন দ্বীপপুঞ্জ”এর নতুন গভর্নর হিসেবে।
মানচিত্রে এই কেমেন দ্বীপপুঞ্জের অবস্থান বায়ে গুয়াতেমালা, হন্ডুরাস ও নিকারাগুয়া ডানে উত্তর দিক নিয়ে কিউবা ও ডমিনিকান রিপাব্লিক। সরাসরি উত্তরে কিউবা ও দক্ষিনে কেরিবিয়ান সাগর। অতএব ভৌগলিক অবস্থানের দিক থেকে দ্বীপদেশটির কদর আছে। তবে মৎস্য আহরণই এখানের মূল ব্যবসা। বিনোদনের জলকেলি সহ কিছু সাগর গবেষণারও কাজ চলে এখানে।
বর্তমানে এই দ্বীপপুঞ্জের গভর্নর হিসেবে কাজ করছেন এমএস কিল পেট্রিক। তার চুক্তিভিত্তিক চাকুরীর মেয়াদ শেষ হবে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। তারই স্থলাভিসিক্ত হবেন নতুন এই বাংগালী গভর্নর। হ্যাঁ, এই গুরুত্বপূর্ণ দ্বীপপুঞ্জের গভর্নর হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে সেই পেশাজীবী কূটনীতিককে আর তিনিই হলেন স্বনামখ্যাত বাংগালী মিঃ আনোয়ার চৌধুরী। জনাব চৌধুরী গর্ব নিয়েই বলেন তিনি সিলেটের সন্তান। যতদূর জানা গেছে জনাব চৌধুরী ২০১৮ সালের মার্চ মাসে দায়ীত্ব গ্রহন করবেন।
আনোয়ার চৌধুরী বর্তমান বাংলাদেশের জগন্নাথপুরে ১৯৫৯ সালে জন্মগ্রহন করেন। স্ত্রী মোমেনা চৌধুরী ও তাঁর পূর্ব স্ত্রীর তরপের সন্তানসহ ৩ সন্তান রয়েছে।
প্রায় এক দশক আগে পেরুতে রাষ্ট্রদূতের দায়ীত্ব নেয়ারও আগে আনোয়ার চৌধুরী “ডিপ্লমেটিক এক্সেলেন্স” এর বৈদেশিক কার্যালয়ের পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। বৃটেনের “আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষনকেন্দ্র”এর পরিচালক হিসেবেও তিনি কাজ করেছেন। এরও আগে তিনি ২০০৪ থেকে ২০০৮সাল অবদি বাংলাদেশের ঢাকায় বৃটিশ রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করেন। ওই সময়ই তিনি ধর্মীয় মৌলবাদীদের লক্ষ্যে পরিণত হন এবং বাংলাদেশের সিলেটে শাহজালালের মাজারে এক ভয়ানক গ্রেনেড আক্রমনের শিকার হন। ওই বোমা হামলায় সে সময় একজন পুলিশ অফিসার সহ ৩জন নিহত হয়েছিলেন। মিঃ চৌধুরী জখম হয়েছিলেন। বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ হওয়ার পরপরই এ বোমা হামলা হয়েছিল। তার সেই মামলায় বাংলাদেশে ৩জনকে ফাঁসী দেয়া হয়। তাঁকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সর্বপ্রথম জ্যৈষ্ঠ হাই কমিশনার হিসেবে ওই দায়ীত্বে নিয়োগ দেয়া হয়। রাজকীয় বিমান বাহিনী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ে কাজ করার সুযোগে তিনি বৃটিশ সেনাবাহিনী বিষয়ে ভাল অভিজ্ঞতা রাখেন।
তার এই পদোন্নতিতে আনন্দে অবগাহন করছে বৃটেনের বাংগালী সম্প্রদায়।