মুক্তকথা সংবাদকক্ষ।। বিগত শত বছর ধরে বিরল এক জাতের সোনা দিয়ে আংটি বানানো হয় বৃটেনের রাজপরিবারের। এ সোনা পরিচিত ‘ওয়েলশ গোল্ড’ হিসেবে। ওয়েলশ-এর একটি খনি থেকে তোলা হতো এ সোনা। তাও বন্ধ হয়ে গেছে বিশ বছর আগে। রানীর কাছে যে সোনা গচ্ছিত আছে তা দিয়ে এখনও রাজপরিবারের বিয়ের আংটি বানানো হচ্ছে। রানীর কাছে গচ্ছিত সোনা শেষ হয়ে গেলে কি করা হবে এমন চিন্তা থেকে ওয়েলশ গোল্ড-এর ওই খনি থেকে আবারও সোনা তুলতে চান এক খনি ব্যবসায়ী।
ওয়েলশ-এর বনটো’র নিউটন পাহাড়ে লুকানো আছে বৃটিশ রাজপরিবারের বিয়ের ঐতিহ্য বহন করে এমন এক সম্পদ। যার নাম ওয়েলশ গোল্ড। এটি বিরল জাতের সোনা। গত একশত বছর ধরে রাজপরিবারের বিয়ের আংটি তৈরী হয়ে আসছে ওই সোনা দিয়ে। আলভা মিনারেল রিজোর্সের মালিক হাওয়ার্ড বেকার বলেন কোন খনি থেকে বৃটিশ রাজপরিবারের পছন্দের সোনা তোলা হতো।
ওয়েলস গোল্ডের ঐতিহ্যবাহী ব্যবহার শুরু হয় রানীর মেয়ের বিয়ের মাধ্যমে। এর পর তা অনুসরন করা হয় রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের বিয়েতে। এর পর প্রিন্স চার্লস ও প্রিন্সেস ডায়ানার বিয়েতে ওয়েলশ গোল্ড ব্যবহার করে আংটি বানানো হয়। এমনকি ডাসেস অব কেমব্রিজ কেইট মিডিলটনের মত আধুনিক সময়ের বধুর জন্য এই ওয়েলশ গোল্ডের সোনা দিয়ে আংটি বানানো হয়। শেষ ডাসেস অব সাসেক্স মেগান মার্কেলের বিয়ের আংটিও ওয়েলশ গোল্ড দিয়ে বানানো।
ধারনা করা হয় তাম্রযুগে ক্লোগাও খনিতে প্রথম এ সোনা আবিষ্কার করা হয়। তবে আঠারো শ’ শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্ত খনি থেকে এ সোনা বানিজ্যিকভাবে তোলা হয়নি। ১৯৯০এর দশকে খনিটি বন্ধ করে দেয়ার আগ পর্যন্ত সেখান থেকে মাত্র ৩টনের মত সোনা তোলা হয়েছিল।
বর্তমানে ওয়েলশ গোল্ড খনির কিয়দংশকে যাদুঘরে পরিনত করেছে বেধানি ফ্যানের ন্যাশনেল ট্রাষ্ট।
বৃটেনের রাজপরিবার কেনো এই সোনার প্রেমে মজে আছে তা খুঁজতে গিয়ে জানা যায় সহজে পাওয়া যায়না এ সোনা।
বিধ্যানি ফ্যান জানান রাণী তার ৬০তম জন্মদিনে ১কেজি ওজনের এ সোনা উপহার হিসেবে পান। রাজপরিবারের বিয়ের আংটি বানাতে সেখান থেকে তিনি একটু একটু করে সোনা দিয়ে থাকেন। বাজারে থাকা সকল ওয়েলশ গোল্ড হয়তো কিনে নিতে পারে রাজপরিবার। তবে রানীর কাছে আর কি পরিমাণ ওয়েলশ গোল্ড আছে তা কেউ জানে না।
ব্যবসায়ী হাওয়ার্ড বেকারের ধারনা রাজপরিবারের কাছে সবশেষ ওয়েলশ গোল্ড আছে। তিনি খনিটি পুনঃ চালু করে রাজপরিবারের জন্য সোনা তুলে আনতে চান। এতে করে বহু মানুষের কাজেরও একটি সুযোগ হবে আর খনি শিল্পটিও পুনরোজ্জীবীত হবে।