মুক্তকথা, লন্ডন: পুরানো খবর। পাঁচদিন আগের। কিন্তু এর পরও এসব খবর পুরানো হওয়ার নয়। বিশ্বব্যাপী আলোচনার বিষয় হয়ে এখনও চলছে গবেষণা কি করে নিজেদের রক্ষা করা যায় এ সমস্যা থেকে। উন্নত ইউরোপীয়ান দেশগুলির জন্য বিশেষ করে বৃটেনের মত দেশের জন্য এসব কেবল সমস্যা নয় মহাসমস্যা! আর সে হলো ‘সাইবার’ বিভ্রাট। অনেকেই একে আক্রমণ বলে অবিহিত করেছেন। আমরা বিভ্রাটই মনে করি। অবশ্য আশঙ্কা থেকে মুক্ত হওয়ার বিনিময়ে টাকা দাবী করলে এটাকে আক্রমণ বললেও বলা যেতে পারে! মোদ্দা কথা ওই কারিগরী যাদের জানা নেই তাদেরকেতো টাকা দিয়ে উদ্ধার পেতেই হবে। সুতরাং তাদের কাছে বিষয়টি আক্রমণই।
বৃটেনের ‘জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা’ অত্যাধুনিক ‘সাইবার বিভ্রাট’-এর খপ্পরে পড়ে তাল-বেতাল হয়ে পড়েছে। বিষয়টি খুবই নাজুকও বটে। এর বিশাল বিবরণ দিয়ে গার্ডিয়ান খবর দিয়েছিল চার দিন আগে। ১৩ মে ‘গার্ডিয়ান’ লিখেছিল, সাইবার নিরাপত্তা কেন্দ্র দিনভর কাজ করেও আক্রান্ত জায়গায় ঢুকতে পারছেনা। ‘ওয়ান্নাক্রাই’ নামের একটি সন্দেহজনক ‘সফ্টওয়ার’ যা কি-না শুধুই বৃটেনের ‘জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা’র উপর চড়াও হয়নি, স্পেনের টেলিফোনিকা থেকে শুরু করে রুশিয়া, ইউক্রেন, তাইওয়ান এবং আন্তর্জাতিক শিপিং কোম্পানী ফেডেক্স-এর কম্পিউটার সমূহে প্রবেশ করে সংগৃহীত তথ্যউপাত্ত আটক করে রেখেছে। ওইসব তথ্য-উপাত্তে ঢুকা যাচ্ছে না। অনেকটা মুক্তিপণ আদায়ের মত। মুক্তিপণ না দেয়া পর্যন্ত ছাড়বেনা। ইন্টারনেট দুনিয়া সম্মন্ধে যাদের কোন জানা নেই তাদের কাছে হাস্যকর শুনালেও বিষয়টা এরকমই ঘটেছে। এ জাতীয় আক্রমনের ফলে বৃটেনের স্বাস্থ্যসেবাকে অনেক অপারেশন স্থগিত করতে হয়েছে। কম্পিউটারে সঞ্চয় করে রাখা রোগীদের তথ্য-উপাত্তে প্রবেশ করা যাচ্ছেনা। রীতিমত ভয়াবহ এক অবস্থা।
মানুষেরই তৈরী এই সাইবার বিভ্রাট বা আক্রমণ বৃটেনের হাসপাতাল ও জিপি সার্জারী থেকে শুরু করে দুনিয়ার অনুমান ১০০টি দেশের কম্পিউটারে আক্রমণ চালিয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন বাংলাদেশেও হয়েছে আবার বাংলাদেশেরই অনেকে লিখেছেন বাংলাদেশ নিরাপদ আছে। নিরাপদ থাকারই কথা। দেশতো সেই মানের ‘ডিজিটেলাইজ্ড’ হয়নি!
এই সমস্যার সৃষ্টি কোথা থেকে? গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা এজেন্সি থেকে এই কারিগরী চুরি করে এমন বিভ্রাট ঘটানো হয়েছে!
আবারো হাসতে হয় এই ভেবে যে আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা এজেন্সি থেকে চুরি করে কে বা কারা এটা ঘটিয়েছে এমন তথ্য আসলো কোথা থেকে? আমরা যদি বলি আমেরিকার নিরাপত্তা এজেন্সিই একাজ করেছে তা’হলে এর জবাব কি হবে? তর্কের স্বার্থেই যদি ধরে নেই আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা এজেন্সি থেকে কারিগরী চুরি হয়েছে তা’হলে দায়ী কারা? এক্ষেত্রে আমেরিকার কোন দায়ীত্ব কি নেই? সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, আজ ৫দিন অতিক্রান্ত হতে চলেছে এ সাইবার বিভ্রাট থেকে পুরোপুরি উদ্ধার পাওয়া গেছে কি-না তা কোন সংবাদ মাধ্যমে আজও পরিলক্ষিত হয়নি!