আব্দুল ওয়াদুদ, মৌলভীবাজার থেকে।। রাজনগর থানা পুলিশ ও মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, রাজনগর সাব- জোনাল অফিসের সমন্বয়ে রাজনগরে ট্রান্সফরমার চুরি প্রতিরোধ বিষয়ক মতবিনিময় সভা হয়ে গেল। সোমবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে অনুষ্টিত হয় এই সভা। এসভায় বিভিন্ন স্থরের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। ট্রান্সফরমার চুরি রোধ বিষয় নিয়ে উন্মুক্ত কথা রাখেন রাজনগর উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়ছল আহমদ, রাজনগর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ জিলাল উদ্দিন, মৌলানা মোফাজ্জল হোসেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ ইকবাল, মনসুরনগর ইউপি চেয়ারম্যান মিলন বখ্ত, টেংরা ইউপি চেয়ারম্যান টিপু খান, পাঁচগাও ইউপি চেয়ারম্যান শামছুন্নুর আহমদ আজাদ, ফতেপুর ইউপি চেয়ারম্যান নকুল চন্দ্র দাশ, সাংবাদিক আহমদুর রহমান ইমরান।
চুরি প্রতিরোধ সভায় বক্তারা বলেন, রাজনগরের বিশেষ করে মনসুরনগর ও কামারচাক ইউনিয়ন থেকে এ পর্যন্ত ২৯টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। স্থানীয় আ’লীগ নেতা ফরজান আহমদ বলেন, ইলেকট্রোশিয়ানরা জানে কোথায় কিভাবে ট্রান্সফরমার স্থাপন করা হয়। আর তাই সুযোগ বুঝে পল্লী বিদ্যুৎ ও ইলেকট্রিশিয়ানরা এটা চুরি করে। ট্রান্সফরমার চুরি রোধে পল্লী বিদুতের লোকজনকে প্রয়োজনে উপরের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে একটি সুরাহা আনার কথা বলা হয়।
মনসুরনগর ইউপি চেয়ারম্যান মিলন বখ্ত বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ যেহারে আমাদের কাছ থেকে অর্থ নেয় সে অনুপাতে সুযোগ সুবিধা দিচেছনা। রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শ্যামল বনিক বলেন, ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনায় জানুয়ারী থেকে এ পর্যন্ত ৪টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৩টির চার্জশীট দিয়েছি। সম্প্রতি গোবিন্দ্রবাটি থেকে একটি পিক-আপ ভ্যানসহ দুজনকে আটক করেছি। ট্রান্সফরমার চুরির প্রস্তুতি নিচিছল এমন খবর পেয়ে ২০/২৫জন পুলিশ ও এলাকাবাসীর সমন্বয়ে চুরির সরঞ্জামসহ এদের আটক করা হয়। চুরির বিষয়ে এদের কাছ থেকে তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে। এর পরও আমরা থেমে নেই।
তিনি আরো বলেন, ট্রান্সফরমারগুলো হাওর এলাকা থেকে সরিয়ে গ্রাহকদের বাড়িতে প্রতিস্থাপন করতে পারলে চুরি রোধ হতে পারে। এছাড়াও লাইনমেনরা চুরিতে জড়িত আছে কিনা সেটা যাচাইবাছই করতে তাদের তালিকা পুলিশকে প্রদানে বিদ্যুত সমিতির প্রতি অনুরোধ করেন। রাজনগর উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা তৌওহিদুজ্জামান পাবেল বলেন, শীতকাল এলে ট্রান্সফরমার চুরি বেড়ে যায়। কুয়াশার কারণে চুরেরা চুরি করতে আরো উৎসাহী হয়। প্রতিটি ইউনিয়নে চুরি রোধে একটি টিম তৈরি করতে চেয়ারম্যানদের প্রতি আহবান জানান। পল্লী বিদ্যুতের এজিএম ওবায়দুল হক বলেন, রাজনগর উপজেলায় ২হাজার ট্রান্সফরমার স্থাপন করা আছে। চুরি রোধে গ্রাহকদের আরো সচেতন হওয়া প্রয়োজন। প্রথমবার চুরি হলে গ্রহকদের ৫০ শতাংশ ফি দিতে হয়। আবার দ্বিতীয় বার চুরি হলে ১শ ভাগ ট্রান্সফরমার খরছ বহন করতে হবে গ্রাহকদের। মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম মোঃ জাকির হোসেন বলেন, আমরা ট্রান্সফরমার আগে বাহিরে বসিয়েছি। যখন থেকে চুরি হওয়া শুরু হয়েছে তখন আমরা গ্রাহকদের উঠানে বসাচ্ছি।
সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন, মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, রাজনগর সাব-জোনাল অফিসের এজিএম ওবায়দুল হক। এসময় সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার আনোয়ারুল হক, রাজনগর উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা তৌওহিদুজ্জামান পাবেল, রাজনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আছকির খান, রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শ্যামল বনিক, মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম মোঃ জাকির হোসেন।
উপস্থিত ছিলেন, রাজনগর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ, উত্তরভাগ ইউপি চেয়ারম্যান শাহ শাহিদুজ্জামান ছালিক, রাজনগর প্রেসক্লাব সভাপতি আউয়াল কালাম বেগ,সহ সভাপতি আব্দুল আজিজ, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ প্রমূখ।