জুড়ী থেকে লিখেছেন আব্দুর রহমান শাহীন।। মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার মাঠে মাঠে চলছে বোরো ফসলের জমি প্রস্তুতির কাজ। জমি প্রস্তুত ও চারা রোপনের উপযুক্ত সময় হলেই শুরু হবে আগাম রোপন। বিগত সময়ে উপর্যুপরী বন্যার কারণে ফলনের ঘাটতি মেটাতে এ আগাম রোপন।
গেল বোরো মৌসুমে হাকালুকি হাওর পাড়ে জায়ফরনগর, পশ্চিমজুড়ী, পূর্বজুড়ী ও সাগরনাল ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের কৃষকের ৪হাজার ৫শ ৭০হেক্টর ফসলী জমির পোয়াতি ও আধাপাঁকা বোরো ধান বানের পানিতে বিলীন হয়ে যায়। ধান আধাপাঁকা ও পোয়াতি থাকাকালীণ সময়ে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের সৃষ্ট অকাল বন্যায় নিমজ্জিত হয়ে পানির সাথে মিশে যায়। কৃষকরা গোলায় একমুঠো ধান তুলতে পারেননি। যার ফলে, কৃষক পরিবারে দেখা দেয় অভাব, অনটন ও খাদ্য সংকট। কৃষকরা গুণতে থাকেন হতাশা ও দুশ্চিন্তার প্রহর। এতে অনেক কৃষক হতাশ হলেও
বোরো ধান চাষাবাদের নেশা পরিবর্তন হয়নি। তাই এবারেও কৃষকরা সাধ্যানুযায়ী বোরো ধান চাষাবাদ করতে মাঠে মাঠে জমি প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
উপজেলার জায়ফরনগর, পশ্চিমজুড়ী ও পূর্বজুড়ী ইউপির বিভিন্ন গ্রামের বোরো ফসলী মাঠ ঘুরে দেখা যায়, মাঠে মাঠে চলছে বীজতলা ও ফসলী জমি প্রস্তুতির কাজ। জমিতে জমিতে শীতের সকাল থেকে পড়ন্ত বিকেল পর্যন্ত হাল-চাষ, জমির বাঁধ নির্মাণ, জমিতে পানি সেঁচ ও বেড়া দেয়ার কাজে ব্যস্ত সময় কাটছে নিম্নাঞ্চলের কৃষকদের। আগাম জমি প্রস্তুত করে কে কার আগে ধানের চারা রোপন করবেন, এমন প্রতিযোগীতা কৃষকদের মধ্যে শুরু হয়েছে।
কেউবা জমিতে সার ও গোবর দিচ্ছেন, কেউ শ্রমিকদের তদারকি করছেন, কেউ বীজতলা তৈরী করে বীজ ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিচ্ছেন আবার কেউ কেউ আগাছা বাছাই করে জমির কোনে একেক স্তুপ করে রাখছেন। এমন দৃশ্য হাওরাঞ্চলের সর্বত্র। পশ্চিম বড় ধামাই গ্রামের কৃষক ফারুক মিয়া(৫৫) জানান, গত বছরতো ধান ঘরে তুলা হয়নি। এজন্য এবার আগাম জমি প্রস্তুত করে ধান রোপনের চেষ্টা করছি, যাতে আগাম ধান ঘরে তুলতে পারি। তিনি বলেন, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সার ও বীজ পেয়েছি। এবারে আমি ১২ কিয়ার জমিতে বোরো চাষ করবো। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবল সরকার প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে জানান, গত বছর আগাম বন্যায় কৃষকের ঘরে বোরো ধান উঠেনি। তাই এবারে বোরো চাষে তাদের আগ্রহ যাতে নষ্ট না হয়, সে জন্য সরকারিভাবে সার ও বীজ দেয়া হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারে লক্ষমাত্রার চেয়ে বেশি ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।