লণ্ডন।। একটি ছোট নদীখাড়ী থেকে এক রোহিঙ্গা কিশোরের কাটাচেরা লাশ উদ্ধার। গত সোমবার ২৪শে সেপ্টেম্বর ভোরের দিকে বুথিডং শহরের নিকটস্ত ‘কিয়াউক পিউ তং’ গ্রামের কাছে ছোট্ট একটি নদীতে রোহিঙ্গা কিশোরের এই লাশ পাওয়া যায়।
ওই গ্রামেরই ১৮বছর বয়সী কিশোর মোহাম্মদ হোসেনের এ লাশ বলে সনাক্ত করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে মোহাম্মদ হোসেনকে দুই বৌদ্ধ রাখাইন হত্যা করেছে। এদের সাথে মোহাম্মদ হোসেন একটি কারিগরী ‘ওয়ার্কসপ’এ গিয়েছিল রাতের প্রথম দিকে।
২৩শে সেপ্টেম্বর রাত অনুমান সোয়া ৯টায় দুই রাখাইন যুবক ‘কিয়াউক পিউ তং’ গ্রামে ব্যাংগ কাকড়া শিকারে বের হয়েছিল। পরে তারা মোহাম্মদ হোসেনের ছোট্ট ভূষিমালের দোকানে আসে। এখান থেকে প্রায়ই তারা খরচ-পাতি কেনে। মোহাম্মদ হোসেনের বাবার নাম আব্দুর রহমান নাগু। দোকান থেকে পান-সিগারেট কিনে মটর সাইকেল নিয়ে ফিরে যাবার পথে তাদের সাইকেল খারাপ হয়ে যায়। এ পর্যায়ে তারা তাদের সাইকেল মেরামতের জন্য গ্রামে কারিগরী ‘ওয়ার্কসপ’ খুঁজে বের করতে মোহাম্মদ হোসেনের কাছে সাহায্য চায়। মোহাম্মদ হোসেন বাবা ও ছোট ভাইয়ের কাছে দোকান সমঝে দিয়ে তাদের সাথে বের হয়ে যায়। গভীর রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরও সে ফিরে না আসায় বাবা ও ছোট ভাই দোকান বন্ধ করে বাড়ী চলে যায়। তাদের ধারণা ছিল, একটু দেরী হলেও মোহাম্মদ হোসেন অবশ্যই বাড়ী ফিরে আসবে।
পরের দিন ২৪শে সেপ্টেম্বর ভোর ৫টার দিকে ওই দুই রাখাইন যুবক গ্রাম প্রশাসনে খবর দেয় যে পাশের নদীখাঁড়ীতে তারা একটি লাশ দেখতে পেয়েছে। গ্রাম প্রশাসনের ও গ্রামের লোকজন সরেজমিনে গিয়ে যে লাশ দেখতে পান সে আর কেউ নয়, গত রাতে ওই দুই বৌদ্ধ রাখাইনের সাথে কারখানার খোঁজে বেরিয়ে যাওয়া মোহাম্মদ হোসেনের। খবর আরবি নিউজের
লাশ পাওয়ার পর গ্রাম প্রশাসনের লোকজন স্থানীয় মিলিটারী ব্যাটেলিয়ন ৩৭৮-এ খবর দেয়। ৩৭৮ মিলিটারী ব্যাটেলিয়ন উত্তর বুথিদাউং শহরের অধীন তাউং বাজারের বর্ডার গার্ড পুলিশকে খবর দেয়। বর্ডার গার্ড মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করে। পরে বিকাল অনুমান সাড়ে চারটার দিকে মোহাম্মদ হোসেনে লাশ দাফন করা হয়।
দুই বৌদ্ধ রাখাইনকে মায়ানমার সীমান্তরক্ষীরা আটক করেছে তদন্তের জন্য।
আরবিনিউজ থেকে জানা যায়, বুথিদাউং শহরের কোয়ার্টার ৪ ও ৫ এর রাখাইন বৌদ্ধ অধিবাসীগন প্রায়ই গভীর রাতে ব্যাঙ ধরার নামে নিকটস্ত রোহিঙ্গা গ্রামে মানুষের বাড়ী ঘরে ঢুকে পড়ে এবং সুযোগমত ঘরের জিনিষপত্র চুরি করে নিয়ে যায়।
এরা লিথাল অস্ত্র নিয়ে ঘুরে। ডেগার তলোয়ার ও তীরও তাদের সাথে থাকে। গভীর রাতে সামরিক বাহিনীর ‘কারফিউ’ নিষেধাজ্ঞার মাঝেই এরা কেমনভাবে গ্রামে ঢুকে যায়। স্থানীয় সামরিক কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে যথেষ্ট জানেন কিন্তু কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়না। সংবাদ সূত্র: আরবিনিউজ