মুক্তকথা।। এক মসজিদ কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা। বড় বড় অক্ষরে কাঠের তৈরী ফলকে কোন একটি দেয়ালের সাথে ঠেস দিয়ে রাখা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা ফলকটি ঠেস দিয়ে রাখার নমুনায় অনুমান হয় যে, অস্থায়ীভাবে রাখা হয়েছে। সে স্থায়ী হোক আর অস্থায়ী হোক, আমাদের বলার বিষয় এই নিষেধ ফলকটি যারা বসিয়েছেন বা ঝুলিয়েছেন তারা কোন দেশের কোন বিদ্যায়তনের শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠেছেন? আমাদের জানার খুব ইচ্ছে হয়।
দুনিয়ার কোন মতবাদ বা নীতিমালায়, সে ধর্মভাবের হোক বা রাষ্ট্র পরিচালনার ভাবেরই হোক, এমন ধরনের কোন নিষেধাজ্ঞা কোথায়ও নেই। যদি কোথায়ও কেউ, কোন আমলে লিখে থাকেন তিনি দুনিয়ার সবচেয়ে বড় মুর্খ। শুধুই মূর্খ বললে কম বলা হবে। তিনি মানুষ নামের এক কলঙ্ক। মানুষরূপী অসভ্য পশু। যদি উদ্দেশ্যমূলকভাবে কেউ হীন রাজনৈতিক স্বার্থে এমন পরিকল্পনা করে থাকেন তিনি বা তারাও সমভাবে একজন অসভ্য পশু।
গত মঙ্গলবার ৯ই এপ্রিল, এই নিষেধ ফলকটি “সোস্যালিষ্ট পার্টি অব বাংলাদেশ-মার্ক্সিস্ট” এর একজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব জনাব রাজু আহমদ তার ফেইচবুকে তুলে দিয়েছেন। জনাব রাজু উল্লেখ করেননি এ নিষেধ ফলকটি কে, কোথায়, কোন মসজিদে লাগিয়েছে। তার ফেইচবুকে এই সংবাদ তুলে ধরার পর ২২৮ দফায় তা শেয়ার করা হয়েছে এবং ৫২জন মানুষ তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। মন্তব্যকারীদের সকলেই এই নিষেধাজ্ঞাকে সুস্থ মস্তিষ্কের কোন মুসলমানের কাজ হতেই পারে না এমন মন্তব্য করেছেন। অনেকেই তাদের নিজ নিজ অবস্থানের মাপদণ্ড থেকে নানামুখি মন্তব্য করেছেন। একজন আরিফ ইন্নাস একটু ব্যঙ্গ করে বলেছেন-“…চলাচলের রাস্তায় মসজিদ কেনো? রাস্তা দখল করে মসজিদ, নাকি পুরোটাই অবৈধ দখল?”
তার এ মন্তব্য প্রণিধানযোগ্য। কারণ আমাদের সমাজে এমন ধরনের ঘটনা ঘটছে অহরহঃ। ভূমি দখলে রাখার নামে মসজিদের ব্যবহার আমাদের এ উপমহাদেশে নতুন কিছু নয় যেমন ঠিকই তেমনি ধর্মকে এরূপ ব্যবহারের পথে কঠোরভাবে বাধা দেয়া প্রতিটি রাষ্ট্রের দায়ীত্ব বলেই আমরা মনে করি।
এ নিষেধাজ্ঞা ফলকটি সরানো তো হবেই, ভেঙ্গে দেয়াও যায় এমন ধরনের এক চিন্ত-চেতনা থেকে একজন সায়ফুল ইসলাম তার মন্তব্যে লিখেছেন যে, ভেঙ্গে দিলেই কি হবে। ধর্মের লেবাসে আমাদের মনোজগতে যে বণ্যপশুর প্রবৃত্তি স্থান করে নিয়েছে তাকে সরাবে কে? একজনতো জানোয়ার বলে গালিই দিয়েছেন।
আরেকজন গঞ্জালো পেরু, যার নামে, মনে হয় না এটি বাঙ্গালী কোন মানুষের নাম, কিন্ত মন্তব্য লিখেছেন বাংলায়। মনে হয় তিনি বাঙ্গালীই। কোন বিশেষ কারণে সম্ভবতঃ তার নাম গোপন রাখতে চেয়েছেন। তিনি লিখেছেন, এর পরও সরকার মোদদ দেয়।
সরকার সাধারণতঃ রাজনৈতিক দলেরই হয়ে থাকে। তবে সরকার গঠনের পর সরকারীভাবে দলীয় রাজনীতিকে রাষ্ট্রসেবা কর্মে মিলিয়ে দেখা ঠিক নয়। গঠনের পর সরকার হয় সকলের সেবার জন্য। সকল নাগরীকের সেবাদানই এবং সেবাদানই আর কিছু নয়, রাষ্ট্র বা সরকারের শপথবদ্ধ মহান দায়ীত্ব। সচেতন মহলের সকলেই আশা করেন যে সরকারের পুলিশ বিভাগ, সমাজে সকল নাগরীকের সমানভাবে নিরাপদ ও শান্তিতে বসবাসের সেবাদানের তাদের যে শপথ, সে অঙ্গিকারের দায়ীত্বপালনে মানুষের সেবক বন্ধুর হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসবেন।