জিতু তালুকদার, মৌলভীবাজার।। গত ২৯শে জুন শনিবার দুপুরে মৌলভীবাজারের শ্রী ভৈরব দেবস্থান জবরদখলে নিতে শ্রী ভৈরব দেবতার মূর্তি চুরি করে মন্দির ও মন্দির কমিটির অফিস ভাংচুর করে আধাপাকা মন্দিরগৃহটি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয় একদল দূর্বৃত্ত। তারা মন্দির কমিটির অফিসে প্রবেশ করে পূজার কাজে ব্যবহৃত থালা-বাসন ইত্যাদি লুট করে অফিসগৃহটিও ভেঙ্গে-গুড়িয়ে দিয়ে চলে যায়। ঘটনার আকষ্মিকতায় আশ-পাশ সকলে একটু থমকে যায়। তবে স্থানীয় পুলিশ এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ১জনকে গ্রেফতার করেছে। পলাতক থাকা অপর ১০/১২ জন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিকে গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ষ্পর্শকাতর এ ঘটনায় মৌলভীবাজার মডেল থানায় মামলা(নং- ৩০, জিআর- ১৮৪, তাং- ২৯/০৬/২০১৯ইং) দায়ের করা হয়েছে।
প্রাপ্ত খবরে জানা যায়, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ১২নং গিয়াসনগর ইউনিয়নস্থিত কদুপুর গ্রামের মৌলভীবাজার-শ্রীমঙ্গল সড়ক সংলগ্ন ৩৪শতক ভূমিবিশিষ্ট শ্রী ভৈরব দেবতার মূর্তি ও একটি মন্দির এবং দেবস্থানসহ মন্দির কমিটির অফিসগৃহ ভেঙ্গে চুরমার করে দেয় স্থানীয় একদল দখলদার দূষ্কৃতিকারী। ভূমিখেকো চক্রের প্রধান বলে খ্যাত জনৈক মঈনুল হোসেন বাবর ও তার ১০/১২ জন অজ্ঞাত পরিচয় সহযোগীদের নিয়ে বিভিন্ন প্রজাতীর গাছ-গাছালী সমৃদ্ধ প্রায় শতবর্ষী শ্রী ভৈরব দেবস্থান জবরদখলে নিতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতদায়ক কথাবার্তা উচ্চারণ করে দেবস্থলিতে প্রবেশ করে ও এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সূত্রপাত করে। জানাগেছে ওই মঈনুল হোসেন ৭নং চাঁদনীঘাট ইউনিয়নস্থিত ইসলামপুর গ্রামের হামদু মিয়ার পুত্র। দূষ্কৃতিকারীরা গৃহে প্রবেশ করে পূজার কাজে ব্যবহৃত থালা-বাসনসহ সিমেন্টের তৈরী শ্রী ভৈরব দেবতার মূর্তিটি অজ্ঞাত স্থানে সরিয়ে নিয়ে জবরদখল চেষ্টাকারীরা দেবস্থানে অবস্থান নেয়। এসময় স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বী লোকজন এগিয়ে আসলে জবরদখল চেষ্টাকারীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র প্রদর্শন পূর্বক তাদেরকে খুন করার হুমকী দেয়।
এমতাবস্থায় তারা ঘটনাটি মৌলভীবাজার জেলা পূজা উদযাপণ পরিষদ নেতৃবৃন্দকে অবহিত করলে জেলা পূজা উদযাপণ পরিষদ ঘটনাটি মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপারকে অবহিত করেন। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছলে জবরদখল চেষ্টাকারীরা গা-ঢাকা দেয়। এরপর বিকাল ৫টার দিকে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা, জেলা পূজা উদযাপণ পরিষদ নেতৃবৃন্দ ও মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান এবং স্থানীয় লোকজনের কাছে ঘটনার বিবরণ শোনে জবরদখল চেষ্টাকারী চক্রের প্রধান মঈনুল হোসেন বাবরকে গ্রেফতার করে। পরে রাত ১টার দিকে পুলিশ বাবরকে নিয়ে ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। পরদিন ৩০শে জুন রোববার মৌলভীবাজার পুলিশ ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদনসহ বাবরকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করে। গত ১লা জুলাই সোমবার দুপুরের দিকে স্থানীয় সাংসদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।