কমলগঞ্জ, মৌলভীবাজার।। নভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জর পৌরসভার ২০টি স্থানে হাত ধোঁয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ ২০টি স্থানে এ ব্যবস্থা করা হয়। বিগত ২৯ মার্চ রোববার সকাল ১০টায় কমলগঞ্জ পৌর মেয়র মো. জুয়েল আহমেদ উপস্থিত থেকে হাত ধৌতকরণ কাজের উদ্ধোধন করেন। এসময় স্ব-স্ব ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও মহিলা কাউন্সিলরবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
কমলগঞ্জ পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডের উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ, ভানুগাছ বাজার চৌমুহনা, ভিতর বাজার, কমলগঞ্জ সরকারি কলেজের সম্মূখে, বড়গাছ, গোপালনগর, রামপাশা, কুমড়াকাপন, নরেন্দ্রপুর, আলেপুরসহ গুরুত্বপূর্ণ ২০টি স্থানে হাত ধৌতের ব্যবস্থা করা হয়।
কমলগঞ্জ পৌর মেয়র মো. জুয়েল আহমেদ বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতেই এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে মানুষকে হাত ধোয়ার বিষয়ে সচেতন করছি। সচেনতার মাধ্যমেই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে আমাদের এই চেষ্টা।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ইউনয়িনের দেওছড়া চা বাগানের শ্রমিক সন্তান বিশ্বজিৎ রবিদাস (২৪) সিলেটের একটি বাসায় গৃহকর্মী ছিল। কয়েকদিন ধরে তার স্বর্দি জ্বর ও কাশি হলে বাসার মালিক তাকে বাড়িতে দেওছড়া চা বাগানে পাঠিয়ে দেয়। বিশ্বজিৎ রবিদাস বাড়িতে আসার পর দেওছড়া চা বাগানে সাধারণ চা শ্রমিকদের মাঝে গত রোববার রাত থেকে করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এ বিষয়টি জানাজানি হলে সোমবার দুপুরে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে একটি মেডিক্যাল টিম দেওছড়া চা বাগানে এসে বিশ্বজিৎসহ তার পরিবার সদস্যদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দিয়ে যায়।
শমশেরনগর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য চা শ্রমিক নেতা সীতারাম বীন বলেন, বিশ্বজিৎ রবিদাস দেওছড়া চা বাগানের চা শ্রমিক রাধে শ্যাম রবিদাসের ছেলে। সে সিলেট শহরের একটি বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতো। কয়েক দিন ধরে তার স্বর্দি-জ্বর ও কাশি হলে বাসার মালিক তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এ খবরটি শুনে সাধারণ চা শ্রমিকদের মাঝে কিছুটা আতঙ্ক বিরাজ করছিল। অবশেষে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে বিশ্বজিৎসহ তার পরিবার সদস্যদের ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম, মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সন্দেহজনক বলে ও সে যেহেতু অন্য শহর থেকে এসেছে এখন প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থা দিয়ে তাকে পরিবারসদস্যসহ ১৪ দিনের জন্য নিজ ঘরে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দশনা দেওয়া হয়েছে। উপজেলার স্বাস্থ্যকর্মীরা এ পরিবারের দিকে নজরদারিও করবে।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর বাজার ও চা বাগান এলাকায় স্থানীয় সাংবাদিক আসহাবুর ইসলাম শাওনের উদ্যোগে স্থানীয় যুবকদের সাথে নিয়ে প্রায় দুই কি:মি: এলাকায় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে জীবানুনাশক স্প্রে করেন। মাধবপুর ইউপি চেয়ারম্যনে পুস্প কুমার কানুর সহযোগিতায় সোমবার সকাল ১০ টা থেকে দুপুর পর্যন্ত মাধবপুর বাজার ও চা বাগান এলাকার মসজিদ, মন্দিরসহ বিভিন্ন জায়গাকে জীবাণুমুক্ত করার জন্য সাংবাদিক আসহাবুর ইসলাম শাওনের নেতৃত্বে এলাকার যুবকদের সাথে নিয়ে ২০টি স্প্রে মেশিন দিয়ে জীবাণুনাশক পানি মাধবপুর বাজার সহ চা বাগানের অলিগলিতে স্প্রে করা হয়। এসময় তিনি নিজ কাঁধেও একটি স্প্রে মেশিন নিয়ে জীবানুনাশক মিশ্রিত পানি স্প্রে করেন।
এ সময় উপস্থিত থেকে এ ধরণের মহতী কাজকে উৎসাহ প্রদান করেন মাধবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানু, মাধবপুর চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক ইউসুফ খান, স্বাস্থ্য কর্মী রিপন শীল, মাধবপুর চা বাগানের টিলা ক্লার্ক রনজিত পাল, লক্ষিনারায়ন কৈরী, মাধবপুর চা শ্রমিক ছাত্র পরিষদের নেতা বাবুচাঁন বীন, শুভ রজক, স্বপন ভর, আকাশ নুনিয়া প্রমুখ। এ মহতী কাজের জন্য সাংবাদিক আসহাবুর ইসলাম শাওন এর প্রতি এলাকার চা শ্রমিকসহ সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশনা মেনে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ২০০ সিএনজি অটোরিক্সা ও রিক্সাচালকদের মাঝে নগদ অর্থ বিতরণ করেন সাবেক চিফ হুইপ, অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি, মুক্তিযোদ্ধা উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপি। শুক্রবার সকাল ১১টায় কমলগঞ্জ উপজেলার সিংরাউলী খেলার মাঠে প্রায় ২০০ জন সিএনজি অটোরিক্সা চালক ও রিক্সা চালকের মাঝে নগদ ৫০০ টাকা করে বিতরণ করেন উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপি। এ সময় তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় এসব অটোরিক্সাচালক ও রিক্সা চালকরা দুর্ভোগের শিকার। তিনি ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ২০০ জনের মাঝে ৫০০ টাকা করে মোট ১ লক্ষ টাকা বিতরণ করেন।
দুপুর ১২টায় কমলগঞ্জের সীমান্তবর্তী ইসলামপুর ইউনিয়নে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নানের উদ্যোগে অসহায় খেটে খাওয়া ২০০ পরিবারে খাদ্য বিতরণ করেন উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপি। এসময় উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সার্কেল) মো. আশরাফুজ্জামান, কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুর রহমান, শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক (তদন্ত) অরুপ কুমার চৌধুরী, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক নেতা আব্দুল মালিক বাবলুসহ আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ।
এদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমন প্রতিরোধে “ঘরে থাকুন, নিরাপদ থাকুন” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে গত বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) বেলা দেড়টায় কমলগঞ্জ পৌরসভার আয়োজনে পৌরসভা মিলনায়তনে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে কর্মহীন ১৪০জনের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপি। বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আলীনগর ইউনিয়নের কামুদপুরে দিশারী আশ্রায়নে ও রহিমপুর ইউনিয়নের সিদ্ধেশ্বরপুর গ্রামে কর্মহীন মানুষের বাড়িতে গিয়ে চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, লবন মিলিয়ে একটি করে প্যাকেট পৌছে দেন সাংসদ।