মুক্তকথা প্রতিবেদন।। মানুষ! মানুষতো মানুষই। সৃষ্টি জগতের সেরা প্রানী। সকল প্রানের সেরা প্রান মানবপ্রান। এ বিশ্বের যা কিছু সৃষ্টি তা সবই মানুষের। আবার এই মানুষেরই মাঝে রয়েছে সৃষ্টিজগতের অপার রহস্যে ঘেরা বোধশক্তি। যে শক্তি মানুষকে চালিত করে। এ শক্তি যেমন মানুষকে মহাবিপর্যয়ের দিকে নিতে পারে আবার স্রষ্টাশক্তির নিকটেও পৌঁছাতে পারে। বহুমূখী গুনের কারণেই বহু মানুষ এই সাধারণ মানুষের কাছে খুবই ঘৃণিত আবার অনেক মানুষ সাধারণ এই মানুষের মাঝেই চিরঞ্জীব অমর অক্ষয় হয়ে আছে সহস্রাব্দের পর সহস্রাব্দ। গুণবান মানুষের অন্তর্ধান দেশ, সমাজ ও মানুষের অপূরণীয় এক ক্ষতি। এমনসব মানুষের বিদায় মানুষকে কাঁদায়, যন্ত্রনা দেয়। তেমনি কিছু মানুষ জাতীয় ও স্থানীয় পরিসরে ইহজগৎ থেকে চিরবিদায় নিয়েছেন। আমাদের কাছ থেকে চিরবিদায় নিয়ে সীমাহীন অজানা অনন্তের পথে চলে গিয়েছেন।
আমাদের কাছ থেকে চিরবিদায় নিয়েছেন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. সা’দত হুসাইন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সৈয়দ মফচ্ছিল আলী, বাংলাদেশ সোসাইটি, যুক্তরাষ্ট্র’র সভাপতি কামাল আহমেদ, সাবেক সংসদ সদস্য হোসনে আরা ওয়াহিদ ও সাবেক ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ। তাদের এ মহাপ্রয়ান আমাদের কাঁদিয়েছে। বর্ণাঢ্য কর্মমুখরজীবনের অধিকারী এসব মানুষের অন্তর্ধানে আমাদের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। মন্ত্রী তার শোকবার্তায় মরহুমদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছেন ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন। মন্ত্রীর সাথে আমরাও কামনা করি অনন্তের পথে তাদের চলা অসীম শান্তিময় হোক। শ্রষ্টার কাছে আমাদের প্রার্থনাও তাই।
উল্লেখ্য যে, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. সাদত হুসাইন ৭৩বছর বয়সে বিগত বুধবার রাত আনুমানিক ১০:৪৯ টায় রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। ড. সা’দত মৃত্যুকালে এক ছেলে ও দুই মেয়ে সন্তান রেখে গেছেন।
মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি, জেলা শ্রমিকলীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সৈয়দ মফচ্ছিল আলী বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে যে অবদান রেখেছেন, জেলা আওয়ামী পরিবার তা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। তার মৃত্যুতে জেলা আওয়ামী লীগ পরিবারের শুন্যতা কোনদিন পূরণ হবে না। সৈয়দ মফচ্ছিল আলী ৫৮বছর বয়সে বিগত ১৩এপ্রিল সোমবার বিকাল ৬ ঘটিকায় ঢাকার একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন(ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ১ ছেলে, অসংখ্য আত্মীয় স্বজন ও গুনগ্রাহী রেখে মারা যান।
কামাল আহমেদ ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীদের সর্ববৃহৎ সামাজিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ সোসাইটি’র সভাপতি। তিনি জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতিও ছিলেন। তার মহাপ্রয়ানে দেশ এক বিশিষ্ট সমাজসেবক ও সংগঠককে হারালো।
উল্লেখ্য, ‘বাংলাদেশ সোসাইটি’র সভাপতি কামাল আহমেদ(৬৬) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গতকাল নিউইয়র্কের এলমহার্স্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে-সহ অসংখ্য আত্মীয় ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর দেশের বাড়ি সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলায়।
জাতীয় সংসদের মৌলভীবাজার-হবিগঞ্জ সংসদীয় এলাকার সাবেক সংসদ সদস্য হোসনে আরা ওয়াহিদ ছিলেন মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ক্রান্তিকালের সুহৃদ। বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে মরহুমা হোসনে আরা ওয়াহিদের অবদান আওয়ামী পরিবার আজীবন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। তার মৃত্যুতে জেলা আওয়ামী লীগ পরিবারের শুন্যতা কোনদিন পূরণ হবে না।
উল্লেখ্য, বিগত ৬এপ্রিল সোমবার দুপুর দুই ঘটিকার সময় মৌলভীবাজার ২৫০শয্যা হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হোসনে আরা ওয়াহিদ(৬৫) ইন্তেকাল করেন(ইন্না— রাজিউন)।
মৃত্যুকালে তিনি স্বামী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহিদ, দুই ছেলে, দুই মেয়ে-সহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
বাংলাদেশ মহান জাতীয় সংসদ-এর সাবেক সদস্য হোসনে আরা ওয়াহিদ পেশাগত জীবনে পাথফাইন্ডার নামের একটি আন্তর্জাতিক এনজিওতে প্রকল্প ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করেন। এছাড়াও তিনি মৌলভীবাজার জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির আজীবন সদস্য, মৌলভীবাজার প্রেস ক্লাব সহ আরো অনেক সংগঠনের সম্মানিত সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন।
সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ভাষাসৈনিক শামসুর রহমান শরীফের মৃত্যুতে বাংলাদেশ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদকে হারালো। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন এবং আধুনিক ভূমি ব্যবস্থাপনায় তাঁর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
উল্লেখ্য, বিগত বৃহস্পতিবার, ২ এপ্রিল ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তিনি স্ত্রী, ৪ ছেলে ও ৫ মেয়ে রেখে গেছেন। শামসুর রহমান শরীফ ডিলু পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পরপর পাঁচবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন।
সূত্র: প্রেস বিজ্ঞপ্তি, দীপংকর বর, সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়