1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
আজ ছিল নায়ক রাজ রাজ্জাকের জন্মদিন - মুক্তকথা
বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৯ পূর্বাহ্ন

আজ ছিল নায়ক রাজ রাজ্জাকের জন্মদিন

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : রবিবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০২১
  • ৭০৩ পড়া হয়েছে

-কাজী সালমা সুলতানা

ষাটের দশকের সেরা নায়ক রাজ্জাকের দুর্দান্ত অভিনয় আজো আমার মতো দর্শকদের মন ছুঁয়ে আছে। সেই সাথে ‘তুমি যে আমার কবিতা’, ‘মাগো মা, ওগো মা, আমারে বানাইলি তুই দেওয়ানা’, ‘আমাকে পোড়াতে যদি এত লাগে ভালো’, ‘তুমি এমনই জাল পেতেছ সংসারে’, ‘এই পৃথিবীর পরে কতো ফুল ফোটে আর ঝরে’ (যদিও গানটি ছিল নায়িকা ববিতার লিপে), ‘আউল বাউল লালনের দেশে’, ‘অনেক সাধের ময়না আমার’, ‘মাস্টারসাব আমি নাম দস্তখত শিখতে চাই’, ‘বন্ধু তোর বরাত নিয়ে আমি যাবো’সহ বহু গান নায়ক রাজ্জাকে মনে করায়।
নায়ক রাজ্জাক ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। ওখানেই তার বেড়ে ওঠা। ছোটবেলা থেকে অভিনয়ের প্রতি প্রবল টান ছিল তার। কলকাতার খানপুর স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় শিক্ষক তাকে ‘বিদ্রোহী’ নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ দেন। তখন চলছিল পূজা উৎসব। ছোট ছেলেটার অভিনয় দেখে সবার সে কী হাততালি! অভিনয়ের পাশাপাশি ফুটবল খেলার প্রতিও ছিল তার দারুণ নেশা। কিন্তু সেটা অভিনয়ের নেশাকে ছাড়িয়ে যেতে পারেনি। এ অভিনয়-পাগল ছেলে ১৯৬৪ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসেন। প্রথম দিকে পাকিস্তান টেলিভিশনে ‘ঘরোয়া’ নামের ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করে সবার নজর কাড়েন। পরবর্তী সময়ে তিনি আব্দুল জব্বার খানের সঙ্গে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার সুযোগ পান। সালাউদ্দিন প্রোডাকশন্সের ‘তেরো নাম্বার ফেকু ওস্তাগড় লেন’ চলচ্চিত্রে ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করে সবার কাছে নিজ মেধার পরিচয় দেন রাজ্জাক। পরবর্তী সময়ে ‘কার বউ’, ‘ডাক বাবু’, ‘আখেরি স্টেশন’সহ কয়েকটি ছবিতে ছোট চরিত্রে অভিনয় করেন। নায়ক হিসেবে রাজ্জাকের প্রথম ছবি জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ (১৯৬৬)। ‘বেহুলা’য় লখিন্দরের ভূমিকায় অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি। আর তার প্রথম নায়িকা সুচন্দা। এর মধ্য দিয়ে বাংলা সিনেমার দর্শক পেল রাজ্জাক-সুচন্দার অসাধারণ জুটি। বাংলাজুড়ে সবখানে এ ছবি নিয়ে আলোচনা। ‘বেহুলা’ ব্যবসাসফল হওয়ায় আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।
কয়েক দশকের অভিনয় জীবনে তিনি প্রায় ৩০০টি বাংলা ও উর্দু সিনেমায় অভিনয় করেছেন। পরিচালনাও করেছেন বেশ কিছু সিনেমা। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের পর ঢাকায় ভারতীয় ছবি আসা বন্ধ হয়ে যায়। বাংলা সিনেমার এখানকার দর্শক সেদিন উত্তম-সুচিত্রা জুটির পর রাজ্জাক-সুচন্দা জুটিকেই সাদরে বরণ করে নিয়েছিল। সুচন্দার সঙ্গে রাজ্জাকের দর্শকনন্দিত সিনেমাÑ‘আনোয়ারা’, ‘দুই ভাই’, ‘সুয়োরানী দুয়োরানী’, ‘কুচবরণ কন্যা’, ‘মনের মত বউ’, ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘যে আগুনে পুড়ি’, ‘সংসার’সহ আরও কিছু সাড়া জাগানো ছবি।

এরপর সুভাষ দত্ত পরিচালিত ‘আবির্ভাব’ সিনেমার মাধ্যমে বাংলা সিনেমায় আবির্ভাব ঘটে রাজ্জাক-কবরী জুটির। এ জুটিও দারুণ সফলতা পায়। একসময় কবরীই হয়ে যায় রাজ্জাকের প্রধান নায়িকা। ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘ময়নামতি’, ‘ক খ গ ঘ ঙ’, ‘ঢেউ এর পরে ঢেউ’ এবং স্বাধীনতার পর ‘রংবাজ’, ‘বেঈমান’সহ সফল ছবি উপহার দেয় এ জুটি। তবে বাংলা চলচ্চিত্রের এ দিকপাল সবচেয়ে বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন শাবানার বিপরীতে। ১৯৭০ সালে ‘মধুমিলন’ সিনেমা দিয়ে রুপালি পর্দায় জুটি বাঁধেন তারা। তারপর ‘অবুঝ মন’, ‘সাধু শয়তান’, ‘মাটির ঘর’, ‘দুই পয়সার আলতা’সহ অনেক সিনেমায় অভিনয় করেছেন তারা। এছাড়া শবনম, ববিতাসহ তখনকার প্রায় সব অভিনেত্রীকে নিয়ে একের পর এক ব্যবসাসফল সিনেমা উপহার দেন ঢালিউডকে।
রাজ্জাক-ববিতা জুটিকে নিঃসন্দেহে বলা চলে ঢাকাই ছবির অন্যতম সেরা রোমান্টিক জুটি। এ জুটির সবচেয়ে আলোচিত সিনেমা ‘অনন্ত প্রেম’। এ সিনেমায় চিত্রায়িত হয়েছিল বাংলাদেশি সিনেমার প্রথম চুম্বন দৃশ্য। সেই সময়ের তুলনায় ছবিটি ছিল দারুণ সাহসী। ছবির শেষ দৃশ্যে নায়ক-নায়িকার সে দৃশ্য ছিল, যা সেই সময়ে হইচই ফেলে দিয়েছিল। তবে ওই দৃশ্য বাদ দিয়েই ছবিটি মুক্তি পায়।
তার প্রযোজনা সংস্থা রাজলক্ষ্মী প্রোডাকশন থেকে তিনি বেশ কিছু সিনেমা নির্মাণ করেছিলেন। সেসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্যÑঅনন্ত প্রেম, পাগলা রাজা, বেঈমান, আপনজন, চাঁপা ডাঙ্গার বৌ, জীনের বাদশা, ঢাকা-৮৬, বাবা কেন চাকর, মরণ নিয়ে খেলা, কোটি টাকার ফকির প্রভৃতি। তার সর্বশেষ অভিনীত ছবি ছেলে বাপ্পারাজ পরিচালিত ‘কার্তুজ’। গুণী এ অভিনেতা অভিনয়ের জন্য পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় পুরস্কারসহ অনেক সম্মাননা। ২০১৩ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আসরে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয় তাকে।
শেষ জীবনে বাংলা সিনেমা নিয়ে আক্ষেপ করেছেন রাজ্জাক। বাংলা সিনেমার সোনালি যুগের নায়ক কেন-ই বা আক্ষেপ করবেন না! কারণ সিনেমার ভগ্নসেতু শেষ জীবনে দেখে গেছেন তিনি। অভিমান করে কাজও কমিয়ে দিয়েছিলেন। নিজের ছেলে বাপ্পারাজকে বলেছিলেন, ‘আমার জন্য গল্প তৈরি করো, আবার কাজ করবো। ঘরে বসে থাকতে ভালো লাগে না।’ কিন্তু গল্প তৈরির সময় আর দেননি তিনি। ততক্ষণে শেষ খেয়া এসে গেছে। বেজে গেছে ছুটির ঘণ্টা।
জীবনের সোনালি অধ্যায় শেষ করে পরপারে চলে গেলেও তিনি আছেন। যুগের লিপি মুছে গেলেও তিনি থাকবেন কোটি বাঙালির হৃদয়ে। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সোনার হরফে লেখা থাকবে তার নাম। রাজ্জাকেরা কালে কালে আসেন না, তাই ফুরিয়েও যান না। অনেক সাধের ময়না বাঁধন কেটে উড়ে গেছে মুক্ত আকাশে। ওই আকাশের সন্ধ্যাতারা হয়ে তিনি সবার মনে জ্বলবেন এখন।
শুভ জন্মদিন নায়ক রাজ রাজ্জাক।

td>

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT