৪১ বছর কাটিয়েছেন জঙ্গলে। সভ্য জগতের সাথে কোন যোগাযোগতো দূরের কথা, সভ্য জগৎ বলতে কিছু আছে সে রকম কোন বোধই তার জন্ম নিতে পারেনি। আরো বিশেষ করে পুরুষের পাশাপাশি নারী বলতে কিছু আছে তা তিনি জানেনই না। হু ভ্যান ল্যাং, ভিয়েৎনামের সন্তান। ১৯৭২ সালে আমেরিকার সাথে ভিয়েতনামের যুদ্ধের সময় তাদের বাবা প্রানে বাঁচতে দু’সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে গিয়ে জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেই থেকে টানা ৪১ বছর জঙ্গল বাস। কখনই জঙ্গল থেকে বাইরে আসেননি। এমনই এক চমকপ্রদ খবর প্রকাশ করেছে শীর্ঘখ্যাতির আনন্দবাজার পত্রিকা। ইউটিউব থেকে ছবি নিয়ে সংবাদ সংস্থার বরাতে গত ২৭ জুন এ খবরটি প্রকাশ করে। ২০১৩ সালের এক সময়ে নিঃশব্দে উদ্ধার করা হয় ল্যাংকে। স্থানীয় একটি গ্রামে এনে রাখা হয়। তারপর থেকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক মানবজীবনের সঙ্গে পরিচয় হতে থাকে ল্যাংয়ের। এতদিন পর তাও কিছুটা মানবসভ্যতার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পেরেছেন তিনি। আর তার পরই প্রকাশ্যে আনা হয়েছে তাঁর গল্পটি। ভিয়েতনাম যুদ্ধে ল্যাংয়ের মা ও এক ভাইয়ের মৃত্যু হয়। অপর দুই সন্তানকে নিয়ে জঙ্গলে পালিয়ে যান ল্যাংয়ের বাবা। তারপর থেকে শিকার করে খাবার জোগাড় করতে, বাদুড়, ইঁদুর খেতে শিখেছেন ল্যাং। এই গোটা বনবাসের মধ্যে কোনওদিন যৌনতা বা মহিলাদের নিয়ে বাবা একটিও কথা বলেননি ল্যাংকে। ল্যাংও কোনওদিন যৌন চাহিদা বোধ করেননি। এমনকী পরে যখন ল্যাংয়ের বাবাকে উদ্ধারের চেষ্টা করা হয়, তখনও তিনি আসতে চাননি, কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন, ভিয়েতনামের যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি। ২০১৫ সালে এই অদ্ভুত পরিবারের কথা প্রথম জানতে পারেন একজন চিত্রগ্রাহক। তিনি যখন ছবি তুলতে যান, তখন তাঁকে দেখে ভয়ে, আতঙ্কে পালিয়ে গিয়েছিলেন ল্যাংরা। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। কিন্তু ল্যাংয়েদের কথা সঙ্গে সঙ্গে প্রকাশ্যে আনলে পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার আগেই সংবাদমাধ্যমের ভিড় জমতে শুরু করত। তাতে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়তেন তাঁরা। সেই কারণেই এতদিন বাদে প্রকাশ্যে আনা হয়েছে পুরো কাহিনী। সংগ্রহ: আনন্দবাজার |