মুক্তকথা: লন্ডন, সোমবার ৭ই নভেম্বর ২০১৬।। উনিশশো ছিয়াত্তরের এই দিনটি ছিল একজন স্বদেশীর রক্তে রঞ্জিত দিন। দিনটি ছিল আজকের এই ৭ই নভেম্বর। ১৯৭৬ এর এই দিনে একজন দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধাকে গোপনে কারান্তরালে বে-আইনীভাবে ষঢ়যন্ত্রমূলক পথে বিচারের নামে খুন করা হয়। এর পনেরো মাস আগে, দেশ ও মানুষের শত্রু, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধ শক্তি ধর্মীয় মৌলবাদী ঘাতকদের প্রত্যক্ষ দোসর বাঙ্গালী নামের কলঙ্ক, মৌলবাদী পাক-সামরিক চক্রের বাংলাদেশী দালালদের প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় ১৯৭৫এর ১৫ই আগষ্ট জাতির স্থপতিকে পরিবার-পরিজনসহ প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। পরে, সাড়ে তিন মাসের মাথায়, তাদেরই প্রত্যক্ষ ইংগিতে ১৯৭৫ এর ৩রা নভেম্বর জেলখানায় হত্যা করা হয় স্বাধীনতার স্থপতীদের চারজনকে। স্বাধীনতা বিরুধী চক্রের পাশবিকাতায় দেশ তখন খুব এক অস্থির সময় পাড় করছিলো। কর্ণেল তাহের বিক্ষুব্ধ অস্থির সেই সময়ের এক বিপ্লবী প্রতিনিধি। সাংবাদিক জনাব মোজাম্মেল হোসেন সমকাল অনলাইনে সে কাহিনীর কিছুটা সরস আলোকপাত করেছেন। যদিও তিনি তার নিবন্ধের এক জায়গায় লিখেছেন-“কর্নেল তাহের এই হত্যাকাণ্ড সমর্থন করেন এবং তার ‘বিপ্লবের’ সুযোগ এসেছে বলে মনে করেন।” জনাব মোজাম্মেলের এই কথাটিকে আমরা সমর্থন করিনা। কর্ণেল তাহের কোন কারণেই কোন হত্যাকান্ডকে সমর্থন করতে পারেন না। তার বিপ্লবের সময় এসেছে এমন ভাবনা তাহের করতেই পারেন। স্বাধীনতার নায়ককে হত্যার পর একজন সমাজ সচেতন বিপ্লবী যদি এ ধরনের ভাবনা ভেবে থাকেন তাতে আশ্চর্য্য হবার কিছু নেই। কিন্তু ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকে তাহের সমর্থন করেন’, এই ভাষ্যটি সম্পূর্ণ তার নিজস্ব ধারনা। কিভাবে তার এ ধারনার জন্ম হল সে বিষয়ে একমাত্র তিনিই ভাল বলতে পারেন। সাংবাদিক মোজাম্মেল হোসেনের কাছে আমরা জানতে চাই কোথায় কোন পুস্তকে বা পত্রে তিনি এমন কথা পেয়েছেন বা দেখেছেন যা থেকে তিনি এ মন্তব্য করলেন! এর পরও অনেকের কাছেই তার লেখাটি সুখপাঠ্য হবে বলে আমাদের অনুমান। আর সেই অভিপ্রায় থেকে তার সেই কথামালা হুবহু এখানে আমরা পত্রস্ত করলাম।
-প্রধান সম্পাদক
মোজাম্মেল হোসেন।।
সাংবাদিক
কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ‘দেয়াল’ উপন্যাসের একটি অংশ হাইকোর্টের রায়ে উল্লেখ হয়েছে। উদ্ধৃতিটি এ রকম :প্রহসনের এক বিচার শুরু হলো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। মামলার নাম রাষ্ট্র বনাম মেজর জলিল গং। কর্নেল তাহেরসহ অভিযুক্ত মোট ৩৩ জন। মামলার প্রধান বিচারকের নাম কর্নেল ইউসুফ হায়দার। মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়টা এই বাঙালি অফিসার বাংলাদেশেই ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে যোগদান না করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর খেদমত করে গেছেন। মামলা চলাকালীন এক পর্যায়ে কর্নেল তাহের প্রধান বিচারকের দিকে তাকিয়ে আঙ্গুল উঁচিয়ে বিস্ময়ের সঙ্গে বলেন, ‘আমি আমার জীবনে অনেক ক্ষুদ্র মানুষ দেখেছি, আপনার মতো ক্ষুদ্র মানুষ দেখিনি।’
বাংলাদেশের একটি বিশেষ সময়ের রাজনৈতিক ঘটনাবলি উপন্যাসটিতে এসেছে হুমায়ূনীয় রচনাশৈলীর আদলেই। ‘ইতিহাসভিত্তিক উপন্যাস’ বা এমন কোনো তকমা ছাড়াই অনুপম পাঠযোগ্য বইটি এক নিঃশ্বাসে পড়া যাবে, যেমন এই লেখকের সব বই-ই পড়া যায়। আর জজ সাহেবরা যে মামলার বিচার করে পূর্ণাঙ্গ রায়ের শেষভাগে এই গদ্যাংশ উল্লেখ করেছেন সেই মামলাটি কর্নেল তাহের নামে খ্যাত এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ১৯৭৬ সালে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে জেলখানার ভেতরে সামরিক ট্রাইব্যুনাল বসিয়ে বিচারের নামে দ্রুত ফাঁসিতে লটকিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে ৩৪ বছর পরে ওই প্রহসনের বিচার চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের। হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়, কর্নেল তাহেরের ফাঁসি ছিল ঠাণ্ডা মাথায় খুন। ট্রাইব্যুনালটি ছিল অবৈধ। কোর্টটির ওই বিচারের এখতিয়ার ছিল না। ওই অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডেরও বিধান ছিল না। মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পরে আইনে সে বিধান সংযুক্ত করা হয়। রায়ে বলা হয়, ক্ষমতাসীন জেনারেল জিয়াউর রহমান আগেই তাহেরকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছিলেন।
এই কথাটি বাংলাদেশের একজন স্বনামখ্যাত রাজনীতিবিদ, আইনজীবী ও গবেষক ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ তার এক গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। জিয়া ট্রাইব্যুনালে বিচারের অনেক আগেই তাহেরকে ফাঁসির মঞ্চে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছিলেন। হাইকোর্ট বেঞ্চ সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদের কাছে যাচাই করেছেন যে বইটি তার রচিত এবং জিয়ার সিদ্ধান্তের কথা জিয়ার কাছেই নিজে শুনেছেন। মামলার রায়ে তা উল্লেখ আছে।
সেটি বাংলাদেশের এমন এক সময় যখন সংঘটিত অনেক ঘটনাই বিস্ময়কর মনে হতে পারে। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর দেশের পুনর্গঠন ও সংহতকরণের কঠিন সময়ে মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় দেশের প্রতিষ্ঠাতা জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হন। দেশে শুরু হয় এক জটিল ও দুর্বোধ্য সময়, যখন ক্যু-পাল্টা ক্যু, রক্তপাত, ক্ষমতার দ্রুত হাতবদল, জেলখানায় জাতীয় নেতাদের হত্যা, অজ্ঞাতসংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা সামরিক অফিসারের গোপন বিচার ও ফাঁসি ইত্যাদি বহু ঘটনা ঘটেছে। ওই সময়ের ঘটনাবলি নিয়ে তর্ক-বিতর্ক, গবেষণা, ইতিবাচক-নেতিবাচক মন্তব্য ও পরস্পরবিরোধী মূল্যায়ন অব্যাহতভাবে চলছে। সে সময়েরই এক প্রতিভূ কর্নেল আবু তাহের। আজ ২১ জুলাই, চলি্লশ বছর আগে ১৯৭৬ সালের এই দিনে কর্নেল তাহেরকে ফাঁসি দেওয়া হয়। ১৭ জুলাই ট্রাইব্যুনালে রায় দিয়ে তিন দিনের মধ্যেই গোপনে কার্যকর করা হয়। পরিবারকে জানানো হয়নি। সাধারণত ফাঁসির যোগ্য অপরাধে কোনো পঙ্গু ব্যক্তিকেও ফাঁসি দেওয়া হয় না। তদুপরি তিনি মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য বীরোত্তম খেতাবে ভূষিত। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর সময় তাহের পাকিস্তানে ছিলেন। কয়েকজন সহকর্মী নিয়ে তিনি অ্যাবোটাবাদ দিয়ে ভারতে ঢোকেন। ভারতীয় গোয়েন্দারা তাদের সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে মুজিবনগর সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেন। তাহের মুক্তিযুদ্ধে ১১ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার থাকাকালে জামালপুর জেলার কামালপুর রণাঙ্গনে পায়ে পাকিস্তানি মর্টারের আঘাত পান। সেদিন ছিল ১৯৭১-এর ২ নভেম্বর। তিনি ভারতের পুনায় চিকিৎসা নিয়ে ১৯৭২-এর ফেব্রুয়ারিতে দেশে ফেরেন। চিকিৎসায় তার এক পা কেটে ফেলতে (অ্যাম্পুট) হয়। বঙ্গবন্ধুর সরকার তাকে খেতাব দিয়ে সেনাবাহিনীতে বহাল রাখে। তার ক্র্যাচ নিয়ে হাঁটার ছবিটিই দেশবাসীর চোখে অক্ষয় হয়ে আছে।
আরেক কথাশিল্পী শাহাদুজ্জামান ‘ক্র্যাচের কর্নেল’ নামে একটি উপন্যাস লিখে সাহিত্যে তাহেরকে অমর করে রেখেছেন। তাহের মুক্তিযোদ্ধা। তাহের দেশপ্রেমিক। তাহের বীর। তাহের বিপ্লবী। তাহের স্বপ্নদ্রষ্টা। কিন্তু তাহের শুধু সৈনিক নন, পরবর্তী সময়ে তিনি রাজনীতিবিদ। যখন তার সামরিক ট্রাইব্যুনালে বিচার হয় ও ফাঁসি হয় তখন তিনি রাজনৈতিক নেতা। রাজনীতি ও মতাদর্শ বিতর্কের ঊধর্ে্ব হতে পারে না। আর সে সময়টি ছিল তুমুলভাবেই বিতর্কিত। যে দল তাহের গঠন করেছিলেন সেই জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ তখনও প্রবলভাবে বিতর্কিত, আজ বহুধা বিভক্ত হয়েও বিতর্কিত। জাসদ এখন আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে ক্ষমতায় অংশ নিয়ে আছে। তা সত্ত্বেও মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে আওয়ামী লীগের নেতারা ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পটভূমি তৈরি করেছিল জাসদ’ বলে অভিযোগ তুলে বিতর্ক উস্কে দেন। কর্নেল তাহের ও তার দল যে ‘বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের’ স্লোগান তুলে স্বাধীনতার পর পরই ছাত্রলীগকে বিভক্ত করে বঙ্গবন্ধুর সরকারকে উৎখাতের ডাক দিয়েছিল এবং অনেক তরুণকে মোহাবিষ্ট করে অতিবিপ্লবী পথে ঠেলে দিয়েছিল তা-ও বিতর্কিত। কর্নেল তাহের ছিলেন জাসদ গঠিত ‘গণবাহিনী’র প্রধান। সে সময় এ রকম বেআইনি সশস্ত্র কার্যকলাপে বহু হত্যাকাণ্ড রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার একটি বড় উৎস ছিল। তাহের ছিলেন নিয়মিত সেনাবাহিনীর পরিবর্তে পিপলস আর্মির প্রবক্তা। তিনি নিজেই চাকরি ছেড়ে রাজনৈতিক দল করেন।
ছাত্রাবস্থায় তাহেরের রাজনৈতিক চিন্তা কীভাবে গড়ে উঠেছিল তা বোঝার জন্য ‘ক্র্যাচের কর্নেল’ থেকে একটি প্যারা ধার নেওয়া যাক : ‘তাহের সমাজতন্ত্রের ব্যাপারে আকৃষ্ট হন তখনকার অনেক তরুণের মতোই। তবে এর সঙ্গে যুক্ত হয় ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র সংগ্রামের ব্যাপারে তার কৈশোরিক আকর্ষণ। ফলে মার্ক্সবাদের সামরিক দিকটির ব্যাপারে তাহের বিশেষভাবে মনোযোগ দেন। কমিউনিজম প্রতিষ্ঠা করতে হলে চাই যুদ্ধ, চাই অস্ত্র এই ধারণা তাহেরকে উদ্বুদ্ধ করে বেশি। কমিউনিজমের সঙ্গে যুদ্ধর সম্পর্ক নিয়ে মার্ক্স, এঙ্গেলস উভয়ের লেখাগুলোই খুঁটিয়ে পড়েন তিনি। পান পলিটিকো-মিলিটারি লিডারশিপের কথা।’
ইতিহাসে মার্ক্সবাদেরও অনেক রকম ব্যাখ্যা, বিকৃতি হয়েছে এবং মার্ক্সবাদী সাহিত্য অনেকেরই বদহজম হয়েছে। ১৯৭৫-এ বঙ্গবন্ধু নিহত হলে কর্নেল তাহের এই হত্যাকাণ্ড সমর্থন করেন এবং তার ‘বিপ্লবের’ সুযোগ এসেছে বলে মনে করেন। জাসদ অফিসারদের বিরুদ্ধে সৈনিকদের অভ্যুত্থানের পক্ষে গোপনে কাজ করেছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যাকারী ফারুক-রশিদ-ডালিম মেজরচক্রকে নিয়ে মোস্তাক গং যখন সরকার চালায় তখন নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এই বিশ্বাসঘাতক চক্রের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থান ঘটান মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ। তার সঙ্গে লে. কর্নেল এটিএম হায়দার প্রমুখ ছিলেন। তারা অভ্যুত্থান করলেও এক ফোটা রক্তপাত হয়নি। মোস্তাককেও নিয়ন্ত্রণে নেননি। জিয়াকে বন্দি করেন। অবশ্য নিজ বাড়িতেই স্ত্রী-পুত্রসহ, টেলিফোন ব্যবহারের সুযোগসহ থাকতে দেন। তাহের এসে জিয়াকে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করেন। খালেদ মোশাররফ ও হায়দার অস্পষ্ট পরিস্থিতিতে নির্মমভাবে নিহত হন। মোস্তাক ও ফারুক-রশিদ গং বঙ্গভবন থেকে ঘাতক পাঠায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতা নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, মনসুর আলী ও কামরুজ্জামানকে হত্যা করতে। আর মুক্ত হয়ে জিয়া তার মুক্তির সহায়ক তাহেরকেই ফাঁসিতে ঝোলান।
মোস্তাক গং সামরিক আইনের ফরমান বলে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার নিষিদ্ধ করে রাখার ব্যবস্থা করেছিল। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ওই আইন রদ করে বিচারের পথ খুলে দেয়। অনেক বছর দেরিতে হলেও বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে। দণ্ড কার্যকর হচ্ছে। জেল হত্যার বিচার হয়েছে। হত্যাকারীদের বিচার হলেও নেপথ্যের চক্রান্তকারীদের বিচার কার্যত হয়নি। জিয়ার শাসনের সবকিছুর বৈধতা দেওয়া সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল হওয়ার পর তাহেরের প্রহসনমূলক সামরিক বিচারের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার চাওয়ার আইনি সুযোগ তৈরি হয়। তাহেরের স্ত্রী লুৎফা তাহের হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়ে তার স্বামীর মর্যাদা পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হন। রায়ে ওই বিচার-প্রহসনকেই অবৈধ ঘোষণা করা হয় এবং ওই ঠাণ্ডা মাথার খুনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে সরকারকে বলা হয়। আদালত বলেন যে, জিয়ার মৃত্যু হওয়ায় তিনি বিচারের অতীত। অন্য যারা দায়ী তাদের বিচার করতে হবে।
এই বিচারের উদ্যোগ অবশ্য আর নেওয়া হয়নি। খালেদ মোশাররফ ও হায়দারের মতো বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যু সম্পর্কে তদন্তও হয়নি। ১৯৮১ সালে জিয়া হত্যার সময়ের বিদ্রোহের প্রশ্নবিদ্ধ মামলায় ১২ জন মুক্তিযোদ্ধা অফিসারের ফাঁসি হয়েছে। জিয়া হত্যার বিচারের আয়োজন হয়নি। জেনারেল মনজুরকে হত্যার বিচার অতিরিক্ত দীর্ঘসূত্রতার চোরাগলিতে আটকে আছে। চক্রান্তে পরিপূর্ণ ওই রক্তমাখা কুটিল অধ্যায়ের ইতিহাসের সব দায় এখনও মেটেনি।