লন্ডন: শুক্রবার ৩০শে অগ্রহায়ণ ১৪২৩।। রাখাইন রাজ্যে নতুন করে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের উপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছে “ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ” আইসিজি।
সংস্থাটি বলছে, রাখাইনে চলমান সহিংসতার জন্ম হয়েছ গত অক্টোবর ও নভেম্বরে সৌদি আরব সমর্থিত হরকাত আল-ইয়াকিন নামে একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর সুসংগঠিত আক্রমণের মধ্য দিয়ে। এই সংগঠনটির বিদ্রোহী কর্মকাণ্ড অন্য সন্ত্রাসী বা আন্তঃদেশীয় জঙ্গি সংগঠনগুলোর চেয়ে আলাদা। তারা অন্য ধর্মাবলম্বী ও বেসামরিক নাগরিকদের হামলা করছে না। বরং মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে রোহিঙ্গাদের স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্য অর্জনে নিরাপত্তা বাহিনীর উপর হামলা চালানোর সহিংস উপায় বেছে নিয়েছে এই “আল-ইয়াকিন”।
এই অবস্থাতে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনা বাহিনীর দমনমূলক অভিযানের বিরুদ্ধে সতর্ক করে দিয়েছে আইসিজি।
তাদের মতে, দুই দফা হামলার পর হরকাত আল-ইয়াকিন আরও হামলা চালাতে পারে। অন্যদিকে সন্ত্রাস দমনের নামে সেনা অভিযানের ফলে পুরো সংখ্যালঘু মুসলিমদের সশস্ত্র হয়ে উঠার ঝুঁকিও রয়েছে।
এ অবস্থায় পরিস্থিতি এমন দিকে মোড় নিতে পারে, যার সুযোগ নিয়ে আন্তঃদেশীয় জিহাদীরা মিয়ানমারে তাদের নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করতে পারে।
আইসিজের এশিয়া প্রোগ্রামের দুই পরিচালক টিম জনস্টন এবং অনাঘা নিলাকান্তন এক প্রতিবেদনে এ সতর্কতার কথা জানান। মিয়ানমার সরকারকে অদক্ষভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলার ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছে ব্রাসেলস ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা এই আইসিজি। তারা বলছে, সরকারি বাহিনীর মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগ রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র গোষ্ঠী হরকাত আল-ইয়াকিনের সমর্থনের দিকে ঠেলে দেবে, যা একের পর এক সহিংসতার জন্ম দেবে। এর ফলে চরমপন্থার পরিস্থিতি তৈরি হবে যাকে ব্যবহার করে আন্তঃদেশীয় জিহাদী গোষ্ঠীগুলো মিয়ানমারে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করতে পারে। সন্ত্রাসী হামলা মিয়ানমারজুড়ে ধর্মীয় উত্তেজনা তৈরি করতে পারে, যা বড় ধরনের বিপর্যয়কর পরিস্থিতির জন্ম দিতে পারে।
যদি মিয়ানারের সেনাবাহিনীর লাগাম টেনে ধরা যায় এবং রোহিঙ্গাদের একটি সুন্দর রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আশাবাদী করা যায় তাহলে বিপজ্জনক পরিস্থিতি এড়ানো যাবে বলে মত দিয়েছে আইসিজি।
সংস্থাটি এ অঞ্চলের দেশগুলোকে, ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা এবং গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের উপর গুরুত্বারোপ করেছে। একই সঙ্গে পরিস্থিতি শোচনীয় পর্যায়ে না যাওয়া রোধ করতে অংসান সুচিকে শক্তিশালী ভূমিকা রাখার আহবান জানিয়েছে।