1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
দিল্লিতে ধুঁকছেন বাঙালি তরুণী - মুক্তকথা
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৯ অপরাহ্ন

দিল্লিতে ধুঁকছেন বাঙালি তরুণী

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৬
  • ৩৮২ পড়া হয়েছে

লন্ডন: সোমবার, ১০ই পৌষ ১৪২৩।। ভারতে বিশেষ করে দিল্লীতে নারী পাচার ও নির্যাতনের এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে আনন্দবাজার পত্রিকা।  ডায়মন্ড হারবারের স্কুলছাত্রী আয়েশাকে এক বছর ধরে বিভিন্ন রাজ্যে ঘুরিয়ে, লাগাতার গণধর্ষণ করে গত ডিসেম্বরে দিল্লির গুরু তেগবাহাদুর হাসপাতালে ফেলে গিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। মালদহের তরুণী অনামিকাকে একই রকম পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় শুক্রবার।

‘নির্যাতনের সালতামামি, দিল্লি থেকে উদ্ধার অন্য আয়েশা’ শিরোণামে দীক্ষা ভুঁইয়ার লেখা ভয়ঙ্করই শুধু নয় রীতিমত লোমহর্ষক আর হৃদয়বিদারক! অত্যাচারের নমুনা শুনলে গা শিউরে উঠার মত। এরা মানুষ না জন্তু জানোয়ার, এমন প্রশ্ন আনলে মনে হয় খুব একটা ভুল করা হবেনা।
দীক্ষা ভুঁইয়া লিখেছেন-” হাতে আর পায়ে অজস্র কালশিটে। চোখেমুখেও অসংখ্য নির্মম আঘাতের ক্ষতচিহ্ন। নড়াচড়ার ক্ষমতাটুকুও হারিয়ে ফেলেছেন বছর চব্বিশের বাঙালি তরুণীটি। দিল্লির রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালের এই ছবি চলতি ডিসেম্বরের। শরীরের নিম্নাংশ সম্পূর্ণ অসাড়। পুরোটাতেই ব্যান্ডেজ বাঁধা। বাঙালি কিশোরীটির যৌনাঙ্গের ক্ষতস্থানে সংক্রমণ হয়ে গিয়েছে। দুর্গন্ধে কাছে ঘেঁষছে না কেউ। এই ছবি দিল্লির গুরু তেগবাহাদুর হাসপাতালের, ঠিক এক বছর আগের ডিসেম্বরের।

২০১৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৬-র ডিসেম্বর। পাচার চক্রের ফাঁদে পড়ে যাওয়া বাঙালি মেয়েদের দুর্দশা আর যন্ত্রণার এক বৃত্ত যেন! ডায়মন্ড হারবার থেকে পাচার হয়ে যাওয়া কিশোরী আয়েশা (ছদ্মনাম) এবং মালদহ থেকে পাচার হওয়া তরুণী অনামিকা (নাম বদল)-কে এ ভাবেই মিলিয়ে দিল ডিসেম্বর। মিলিয়ে দিল রাজধানী দিল্লি।

মিলটা ধরা পড়ছে দিল্লির মহিলা কমিশনের সদস্যাদের চোখেও। কারণ, তাঁদের তত্ত্বাবধানেই গত ডিসেম্বরে জীবন্মৃত আয়েশা চিকিৎসা পেয়ে আজ অনেকটা সুস্থ। আবার ওই কমিশনের তৎপরতাতেই শুক্রবার রাতে চিকিৎসা শুরু হয়েছে অনামিকার। রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে তরুণীর নিরাপত্তার খাতিরে রবিবার ওই তরুণীকে দিল্লিরই এক বেসরকারি হাসপাতালে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

একটি ফোনের সূত্রে খবর পেয়ে দিল্লির মহিলা কমিশন ওই রাতেই তরুণীর চিকিৎসার দায়িত্ব নেয় এবং পুলিশে খবর দেয়। হাসপাতালে শয্যাশায়ী ওই তরুণী পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান, কাজের লোভ দেখিয়ে তাঁকে মালদহ থেকে নিয়ে গিয়েছিল এক ব্যক্তি। পরে সে দিল্লির এক ‘প্লেসমেন্ট এজেন্সি’র হাতে তুলে দেয় তাঁকে। প্রথম দিকে বিভিন্ন পরিবারে তাঁকে কাজ দেওয়া হচ্ছিল। পরে তাঁকে দিল্লির মুখার্জিনগরে অন্য এক প্লেসমেন্ট এজেন্সির হাতে তুলে দেয় প্রথম সংস্থাটি। সেই সংস্থা তাঁকে পরিচারিকার কাজ করতে পাঠিয়েছিল একটি হিন্দিভাষী পরিবারে।

সেই পরিবারেই তাঁর নরকযন্ত্রণা শুরু হয় বলে ওই তরুণীর অভিযোগ। তিনি পুলিশকে জানান, উদয়াস্ত কাজ করা সত্ত্বেও গত দু’বছরে বেতন হিসেবে তাঁকে একটা টাকাও দেওয়া হয়নি। বেতনের বদলে জুটত বেত। পান থেকে চুন খসলেই গৃহকর্তা ও তাঁর স্ত্রী লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করতেন। চোখেমুখেও নানা ভাবে আঘাত করতেন ওই দম্পতি। শেষ দিকে খাবারও দেওয়া হতো না। মারধরে গুরুতর আহত ওই তরুণী যখন আর কোনও কাজই করতে পারছিলেন না, তখনই নিয়োগকারী সংস্থার লোকেদের ডেকে পাঠান ওই দম্পতি। সেখানে গিয়ে তরুণীর শারীরিক অবস্থা খারাপ দেখে ওই সংস্থাই তাঁকে রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেয়। সেখানে তাঁর সঙ্কটজনক অবস্থা দেখে এক ব্যক্তি ফোন করে মহিলা কমিশনের অফিসে সব জানান।

হাসপাতালে পৌঁছে যান দিল্লির মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন স্বাতী মালিওয়াল। রবিবার তিনি জানান, ওই তরুণীর উপরে এমন ভাবে নির্যাতন চালানো হয়েছে যে, তিনি ভাল ভাবে নড়াচড়াও করতে পারছেন না। ‘‘কাজের টোপ দিয়ে কিংবা বিয়ের লোভ দেখিয়ে মেয়ে পাচারের ঘটনা ঘটেই চলেছে। কিন্তু যে-সব লোক বা সংস্থা এ ভাবে মেয়েদের কাজে লাগাচ্ছে, তাদের কাজকর্মে লাগাম পরানো যাচ্ছে না। আইন করে তাদের নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করতে হবে। নইলে কাজ জুটিয়ে দেওয়ার নামে মেয়ে পাচারের সংখ্যা বাড়বে। বাড়বে অত্যাচার,’’ আশঙ্কা স্বাতীদেবীর।

মানুষ পাচার রোধে রাজ্যের গড়া টাস্ক ফোর্সের অন্যতম সদস্য-সংস্থা ‘শক্তিবাহিনী’-ও চায় আইনি ব্যবস্থা। ওই সংস্থার তরফে ঋষিকান্ত জানান, বাংলা থেকে প্রচুর ছেলেমেয়েকে চাকরির টোপ দিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়। যে-সব সংস্থা এই কাজ করে, তাদের রেজিস্ট্রেশনই নেই। ‘‘সরকারের উচিত এই ধরনের সব সংস্থাকে ‘ডোমেস্টিক প্লেসমেন্ট অ্যাক্ট’-এর অধীনে আনা। নইলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি নেই। ঝাড়খণ্ড সরকার এই ধরনের আইন চালু করে লাভবান হয়েছে,’’ বললেন ঋষিকান্ত।

অনামিকাকে উদ্ধারের পরেই এই বিষয়ে তদন্তের জন্য এক জন অতিরিক্ত ডিএসপি-র নেতৃত্বে কমিটি তৈরি করেছেন দিল্লি পুলিশের ডিসি (উত্তর-পশ্চিম) দুম্বরে মিলিন্দ। সেই তদন্ত কমিটি ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট দুই প্লেসমেন্ট এজেন্সির মালিকদের গ্রেফতার করেছে। খোঁজ চলছে অভিযুক্ত দম্পতির।”

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT