হারুনূর রশীদ।।
লন্ডন: দুনিয়ার শক্তিধর বড় বড়(অর্থনৈতিক দিক থেকে) দেশগুলো সুদীর্ঘকাল ধরে মুসলমান অধ্যুষিত দেশগুলোতে ঝগড়া ফ্যাসাদ লাগিয়েই রেখেছে। একটু শান্ত হয়ে আসলেই, কোন না কোন ছলছূঁতো, কিতাব খুঁজে বের করে, নতুন করে ফ্যাসাদে জড়িয়ে নেয়। হয়তো অনেকেই বলবেন, এটা কোন কথা হল নাকি! অন্যরা ঝগড়া বাঁধিয়ে রাখতে চায়, তা ওরা ঝগড়া করতে যায় কেনো? ওরা ঠিক থাকলেইতো হয়। খুবই খাঁটী কথা। ওরা ঠিক থাকলেইতো আর ঝগড়া আসতে পারে না। কিন্তু ওই যে কথায় আছে না, প্রকৃতির দানকে আমরা আশীর্বাদ বলে থাকি। মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলোর প্রধান দোষ তারা বনজ আর খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ। প্রকৃতি তাদেরে উজাড় করে সেরা সব সম্পদ দিয়ে আশীর্বাদ দিয়েছে। আর সমস্যা হয়েছে ওখানেই। বিনা ব্যয়-পরিশ্রমে পাওয়া ওই সম্পদের উপর গা ভাসিয়ে, মানুষকে ভুলে- প্রাচুর্য্যে অবগাহন করতে গেলে স্রষ্টার আশীর্বাদ হয়ে উঠে অভিশাপ! সম্পদ যেখানে আশীর্বাদ হবার কথা, মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলোর কপালে সেই সম্পদ আশীর্বাদের বদলে অভিশাপ হয়ে লেপ্টে আছে। এই বনজ ও খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধি তাদের কাল হয়ে দাড়িয়েছে। বহু দেশ সেই অভিশাপে নিপতিত হয়েছে।
এটা খুবই সহজে বুঝার বিষয় যে বিশাল বিস্তীর্ণ সম্পদ রাশি যেখানে, সম্পদলিপ্সু মানুষেরা সেখানে নজর দেবেই। সেই রোম সাম্রাজ্য ও সভ্যতার পতনের পর থেকেই শুরু হয়েছিল এক অবিমিশ্র যুদ্ধ মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলের মানুষের উপর। যা আজও সমানতালে চলে আসছে। এরই পথ ধরে সর্বশেষ ঢিলটি মেরেছেন ভারতের উন্নাওয়ের বিজেপি সাংসদ সাক্ষী মহারাজ।
তিনি বলেছেন, দেশে আর জমি নেই অতএব কবর স্থানের জন্য জমি দেয়া যাবে না। তিনি আরো একধাপ এগিয়ে গিয়ে বলেছেন আইন করে দিয়ে কবরস্থান তৈরী বন্ধ করে দিতে হবে। নিজের নির্বাচনী এলাকায় এক সভায় তিনি এ মন্তব্য করেছেন। অবশ্য তার জবাবে কংগ্রেস নেতা সন্দীপ দীক্ষিত বলেছেন- “যদি কবরস্থানের প্রয়োজন হয়, কবরস্থান তৈরি হবে। একই ভাবে যদি শ্মশানঘাটের প্রয়োজন হয় শ্মশানঘাটও হবে। কোনও নেতা বা সাধুর প্ররোচনামূলক বিবৃতিতে কিছু যায় আসে না।”
সপা সাংসদ নরেশ অগ্রবাল বলেছেন, “এই মন্তব্য থেকেই বিজেপির হতাশা স্পষ্ট। আলোচনা করার মতো কোনও ইস্যুই তাদের হাতে নেই।” উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনে ভরাডুবি নিশ্চিত জেনে বিজেপি এখন হিন্দু এবং মুসলমানদের মধ্যে দূরত্ব বাড়িয়ে তোলার চেষ্টা করছে। নরেশ অগ্রবালের কথার সাথে সুর মিলিয়ে আর একটু বলতে চাই, সাধু সন্ত মানুষ সাক্ষী মহারাজ আর কিছু পেলেন না, শুধু দেখলেন মুসলমানের কবর! অথচ সৌধ নির্মাণের জায়গা তার চাই-ই। সারা ভারত সৌধে সৌধে ভরে গেল তার আপত্তি নেই; আপত্তি শুধু কবর স্থানে! স্বাভাবিকভাবে মনে কি প্রশ্ন আসে না, সাধু-সন্ত হয়েও মানুষগুলো এমন কেনো?