প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ, কমলগঞ্জ।। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ন্যাশনাল টি কোম্পানী (এনটিসি) এর মালিকানাধীন মদন মোহনপুর চা বাগানে চার দফা দাবিতে শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করেছে। সোমবার সকাল ৯ টা থেকে চা বাগান শ্রমিকরা এ কর্মবিরতি পালন করেন।
কর্মবিরতি পালনকারী শ্রমিকরা জানান, চা বাগানে শ্রমিকরা দীর্ঘদিন ধরে গাড়ি চালক, সর্দার, দৈনিক মজুরি ভিত্তিক শ্রমিক ও মিস্ত্রিদের পদোন্নতি প্রদান করা, বাগানের অস্থায়ী শ্রমিকদের মধ্য থেকে ১০ জন শ্রমিককে স্থায়ীকরা, সম্প্রতি সময়ে চা শ্রমিক প্রদীপ তাহার ও জয়দীপ তাহারকে অযৌক্তিকভাবে দেয়া অভিযোগপত্র প্রত্যাহার এবং পার্শ্ববর্তী মাধবপুর চা বাগানের এক বাবুর নির্দেশে মদন মোহনপুর বাগানের প্লান্টেশন থেকে চুরি করে পাতি উত্তোলন করে নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদে ও দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে এই কর্মবিরতি পালন করা হয়। তবে চা শ্রমিক ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টায় সমঝোতা বৈঠকের পর বাগান কর্তৃপক্ষ দাবিগুলো মেনে নেয়ার আশ্বাস দিলে কর্মবিরতি প্রত্যাহার হয়।
মদন মোহনপুর চা বাগান ব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম কর্মবিরতির কথা স্বীকার করে বলেন, চা বাগান শ্রমিকরা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে তাদের দাবি তোলে ধরেছেন। তাদের এই দাবি নিয়ে চা শ্রমিক ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দসহ তাদের প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করা হয়েছে।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। ৫ম শ্রেণির এক ছাত্রীর অভিভাবক কমলগঞ্জ থানায় এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে রোববার রাতে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ দপ্তরীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ধর্মপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া ওই শিক্ষার্থী গত শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল পৌনে ৯টায় বিদ্যালয়ে আসলে দপ্তরী কাম নৈশপ্রহরী অজিত দেবনাথ (২৭) কৌশলে ওই ছাত্রীকে যৌন হয়রানী করে। শিক্ষার্থী বিষয়টি বাড়িতে গিয়ে অভিভাবককে জানালে এ ঘটনায় কমলগঞ্জ থানায় রোববার একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে কমলগঞ্জ থানার এএসআই আব্দুল হামিদ ও এএসআই আয়াজ মাহমুদ রোববার রাতেই অভিযান চালিয়ে ধর্মপুর গ্রাম থেকে দপ্তরী অজিত দেবনাথকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।
ধর্মপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পংকজ ভট্টাচার্য্য ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ওই দিন আমি সকাল ৯টা ১০ মিনিটে বিদ্যালয়ে গিয়েছি। সকাল সাড়ে ৮টায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি জানান।
কমলগঞ্জ থানার এএসআই আব্দুল হামিদ বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দপ্তরী যৌন হয়রানির কথা স্বীকার করেছে।
কমলগঞ্জ থানার ওসি আরিফুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, থানায় লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে স্কুলের দপ্তরীকে আটক করে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বন্ধুর দেওয়া কোমল পানীয় স্পিড পান করে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চারজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ নিয়ে কমলগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১টায় উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের কুরমাঘাট এলাকায় সরজমিন খোঁজ নিয়ে ও লিখিত অভিযোগের সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ সেপ্টেম্বর শনিবার রাত নয়টায় কুরমাঘাট আওয়ামীলীগ অফিসে একই ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের শাহিন মিয়া, ভান্ডারীগাঁও গ্রামের মোঃ আফজল মিয়া, নবাব মিয়া, কালাম মিয়া ও নেছার মিয়াকে ফোন করে ডেকে নিয়ে আসে। সেখানে বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ আলোচনার এক পর্যায়ে শাহিন পার্শ্ববর্তী দোকান থেকে ছিপি খোলা অবস্থায় ৩টি কোমল পানীয় স্পিড পান করার জন্য দেয়। স্পিড পান করার সময় বিষাক্ত গন্ধ পেলে শাহীনকে এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে সে দৌড়াইয়া ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। স্পিড পানের পরপর আফজলসহ তার বন্ধুরা ছটফট করে এবং বমি করে। এ সময় স্থানীয়রা আহতদের দ্রুত কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কালাম মিয়া ও নেছার মিয়াকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং আফজল মিয়া ও নবাব মিয়াকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। অভিযোগকারী আহত আফজল মিয়া বলেন, তাদের প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে শাহিন পূর্বপরিকল্পিতভাবে সকলের অগোচরে স্পিডের মধ্যে বিষ মিশিয়ে দেয়।
অভিযুক্ত শাহিন মিয়ার সাথে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বন্ধুদেরকে স্পিড খাওয়ানোর কথা স্বীকার করে বলেন, আমি নিয়মিত কুরমাঘাটে বসে চা পান খেয়ে আড্ডা দেই। স্পিড খেয়ে তারা অসুস্থ হয়ে বমি করার পর আমি তাদের হাসপাতালে পাঠানোর উদ্দেশ্যে সিএনজি অটোরিক্সায় তুলে দেই। কিন্তু বিষ মিশিয়ে স্পিড খাওয়ানোর অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে তিনি মনে করেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোস্তফা কামাল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। তবে ইসলামপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হান্নান বলেন, কোমল পানীয় স্পিডে বিষ মেশানো নয় বরং অন্য কোন কারণে ফুড পয়জনিং হতে পারে।
কমলগঞ্জ থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক সবুজ মিয়া জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তদন্তক্রমে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।