কুলাউড়ার আলোচিত রুমি হত্যাকান্ডের দেড় মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত উদঘাটন হয়নি হত্যকান্ডের মূল রহস্য। পুলিশ ও স্থানীয়রা ঘটনার সাথে স্বজনদের জড়িত থাকার ধারনা করলেও পুলিশ এখনও পর্যন্ত কোন ক্লো উদঘাটন বা এর সাথে জড়িত কাউকেও গ্রেফতার করতে পারেনি। এ নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে জনমনে। লিখছেন কুলাউড়া থেকে আব্দুল আহাদ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ মে রাতে রুমি বেগমকে দুইজন যুবক কোলে করে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে। এসময় কর্তব্যরত ডাক্তার একজন আগুনে পুড়ে যাওয়া রোগীর চিকিৎসায় ব্যস্ত ছিলেন। চিকিৎসক কিছু বুঝার আগেই ওই যুবকরা মেয়েটিকে হাসপাতালের বেডে রেখে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে চিকিৎসক মেয়েটিকে মৃত হিসেবে নিশ্চিত হয়ে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। ময়নাতদন্ত শেষে তার স্বজনরা লাশ না নেয়ায় বেওয়ারিশ হিসেবে মৌলভীবাজার পৌরসভার গোরস্তানে তাকে দাফন করা হয়। ঘটনার পর পুলিশ পৌরসভার পরীনগর ওয়ার্ডে রুমির পরিবারের ভাড়াটিয়া বাসায় গিয়ে তাদের ঘরটি তালাবদ্ধ দেখতে পায়। এরপর থেকে পরিবারের কোন স্বজনদের খোঁজ পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর প্রায় দেড় মাস অতিবাহিত হলেও স্বজনদের কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ফলে ঘটনার মূল রহস্য এখনও উদঘাটন হয়নি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই কানাই লাল জানান, রুমির ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এখনও আমাদের হাতে পৌঁছায়নি, রিপোর্ট পেলে কিভাবে হত্যা করা হয়েছে তা জানা যাবে। আর আমরা ধারনা করছি রুমি হত্যাকান্ডের সাথে তার স্বজনরা জড়িত। কারণ ঘটনার পর পরই রুমির স্বজনরা কুলাউড়া পৌরশহরের তাদের ভাড়াটিয়া বাসাটি তালা দিয়ে লাপাত্তা রয়েছে। রুমির পিতা রহিম মিয়া, তাদের মূল বাড়ী হবিগঞ্জ পৌরসভার উমেদনগর গ্রামে পরিচয় দিয়ে বাসাটি বাড়া নেয়। রুমির হত্যাকান্ডের পর আমরা সেখানেও খোজ নিয়ে তাদের কোন বসত-ভিটা পাইনি।
কুলাউড়া, মৌলভীবাজার।। কুলাউড়ায় ভিজিএফের চাল চুরির মামলায় গ্রেফতার এড়াতে গত ১৫ দিন থেকে পলাতক রয়েছেন সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নার্গিস আক্তার বুবলি। চেয়ারম্যান না থাকায় নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সদর ইউনিয়নের মানুষ। প্রতিদিন অনেক মানুষ জরুরী প্রয়োজনে ইউনিয়নে এসে চেয়ারম্যানকে না পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়ী ফিরে যাচ্ছেন। অনেকে আবার ইউনিয়ন সার্টিফিকেট, জন্মনিবন্ধন সনদে স্বাক্ষর করাতে না পেরে পড়ছেন বিপাকে।
সূত্রে জানা যায়, ২৫ জুন কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের দু’টি দোকান থেকে দু’দফা অভিযান চালিয়ে ১০ বস্তা ভিজিএফ চাল ও ১৩ টি খালি বস্তা উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার ৪ দিন পর ২৯ জুন রাতে পুলিশের কাছে, সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নার্গিস আক্তার বুবলিকে প্রধান আসামী করে ৪ জনের নামে মামলা দায়ের করেন কুলাউড়া প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শিমুল আলী। রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার তালিকাভুক্ত ৩ আসামীকে আটক করে। এরপর থেকে গ্রেফতার আতংকে চেয়ারম্যান নার্গিস আক্তার বুবলি গা ঢাকা দেন। ফলে নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সদর ইউনিয়নের মানুষ। প্রতিদিন অনেক মানুষ জরুরি প্রয়োজনে ইউনিয়নে এসে চেয়ারম্যানকে না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। অনেকে আবার ইউনিয়ন সার্টিফিকেট, জন্মনিবন্ধন সনদে স্বাক্ষর করাতে না পেরে পড়ছেন বিপাকে।
সরেজমিন ইউনিয়ন অফিস গেলে ৮ নং ওয়ার্ডের রায়হান আহমদ ও সালমান আহমদ ও আখলাছ মিয়ার অভিযোগ, প্রবাসে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট করা জরুরি। কিন্তু ইউনিয়নে এসে সার্টিফিকেট ও জন্মসনদ পাচ্ছেন না চেয়ারম্যান না থাকায়। এখন কি করবেন ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না।
এব্যাপারে ইউপি সচিব ও ইউপি সদস্য ছালিক আহমদ জানান, চেয়ারম্যান একটি সমস্যার কারণে কয়েক দিন থেকে ইউনিয়নে আসছেন না। তবে তিনি বলেছেন আগামী দু’একদিনের মধ্যে ইউনিয়নে আসবেন। যদি না আসেন তাহলে আমরা সভা করে প্যানেল চেয়ারম্যানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেবো।
ইউপি চেয়ারম্যান নার্গিস আক্তার বুবলির ব্যক্তিগত ফোন নাম্বার বন্ধ থাকায় এ ঘটনায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে একাধিক সুত্র জানায়, উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিতে তিনি বর্তমানে ঢাকায় রয়েছেন।
কুলাউড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু ইউছুফ জানান, চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সম্ভাব্য স্থানগুলোতে পুলিশ একাধিকবার অভিযান চালিয়েছে, তবে তাকে পাওয়া যায়নি।
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌধুরী মো. গোলাম রাব্বী জানান, চেয়ারম্যান যদি ইউনিয়নে না আসেন তাহলে প্যানেল চেয়ারম্যানকে ভারপাপ্ত চেয়ারম্যান দেয়া হবে। কোন মানুষ নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হবে না।