দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট বিভাগের ১৯ আসনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে ৯টিতে এসেছে পরিবর্তন। প্রতিটি আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে খোদ দলের ত্যাগী নেতা কর্মীরা বঞ্চিত হলেও কোন কোন আসনে তাদের ডিঙ্গিয়ে মনোনয়ন নিশ্চিত করে চমক সৃষ্টি করেছেন নতুন প্রার্থীরা।
এদিকে সিলেটের বিভিন্ন আসনের প্রভাবশালী অনেক প্রার্থী এমনকি ধারাবাহিক রেকর্ড সংখ্যক নির্বাচনে মনোনয়ন প্রাপ্তি এবং নির্বাচিত হওয়ার পরও এবার বাদ পরার বিষয়টি চাউর হয়ে যায়। সিলেট বিভাগে যাদের নিয়ে এসব গুঞ্জন চাউর হয়েছিল তাদের অনেকেই বীরদর্পে মনোনয়নের বিজয় মালাটি আবারও গলায় তুলে নিয়ে চমক সৃষ্টি করেছেন।
সিলেট বিভাগের ১৯ আসনের মধ্যে ৯টিতে প্রার্থী পরিবর্তন করে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগ।
তাদের মধ্যে সিলেট-২ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী। ২০০৮ সালে এ আসন থেকে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে গত দুটি নির্বাচনে এ আসনে দলীয় প্রার্থী না দিয়ে জোটের শরীক জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ।
সিলেট-৫ আসনে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ মনোনয়ন পেয়েছেন। এ আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় বর্তমান সংসদ সদস্য হাফিজ আহমদ মজুমদার বার্ধক্যজনিত কারণে এবার দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেননি।
মৌলভীবাজার-২ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ ছেড়ে যাওয়া সুলতান মোহাম্মদ মনসুর। গত নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে বিকল্প ধারার প্রার্থী এমএম শাহীন এখানে নির্বাচন করেন।
মৌলভীবাজার-৩ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন জিল্লুর রহমান। বঞ্চিত হয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নেছার আহমদ।
সুনামগঞ্জ-১ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট রঞ্জিত চন্দ্র সরকার, বাদ পড়েছেন বর্তমান এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন।
সুনামগঞ্জ-২ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন পুলিশ প্রধানের ভাই চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। এমপি পদে নির্বাচন করতে তিনি সম্প্রতি শাল্লা উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনের স্ত্রী ড. জয়া সেনগুপ্ত।
সুনামগঞ্জ-৪ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন পিএসসি’র সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ সাদিক। গত দুটি নির্বাচনে মহাজোটের শরীক জাতীয় পার্টির প্রার্থী পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ এমপি নির্বাচিত হন। এই দুই নির্বাচনেই এখানে প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ।
এছাড়া হবিগঞ্জ-১ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন অ্যাডভোকেট ড. মুশফিক হোসেন। বাদ পড়েছেন বর্তমান দলীয় এমপি গাজী মো. শাহনেওয়াজ এবং হবিগঞ্জ-২ আসনে বর্তমান এমপি আব্দুল মজিদ খানের বদলে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে ময়েজ উদ্দিন শরিফ রুহেলকে।
এই ৯ আসনে প্রার্থিতা রদবদল হলেও বাকি ১০ আসনে প্রার্থী অপরিবর্তিত রেখেছে আওয়ামী লীগ। পুনরায় যারা নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন তারা হলেন- সিলেট-১ আসনে ড. এ কে আব্দুল মোমেন, সিলেট-৩ আসনে হাবিবুর রহমান হাবিব, সিলেট-৪ আসনে ইমরান আহমদ, সিলেট-৬ আসনে নুরুল ইসলাম নাহিদ, মৌলভীবাজার-১ আসনে শাহাব উদ্দিন, মৌলভীবাজার-৪ আসনে উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ, সুনামগঞ্জ-৩ আসনে এম এ মান্নান, সুনামগঞ্জ-৫ আসনে মুহিবুর রহমান মানিক, হবিগঞ্জ-৩ আসনে আবু জাহির ও হবিগঞ্জ-৪ আসনে মাহবুব আলী।