মুক্তকথা সংবাদকক্ষ॥ গল্প নয় সত্য খবর এটি। গত ৩ জানুয়ারী ‘দি বিজনেস ষ্ট্যাণ্ডার্ড’এর সূত্র দিয়ে বাংলাট্রিবিউন মজাদার এ সংবাদটি প্রকাশ করেছে। খবরটি সেই দূর দেশ মেক্সিকো শহরের। সেই শহরেরই দুই প্রেমিক-প্রেমিকা। একজন পামেলা, তিনি বিয়ে করে সংসার করছেন। স্বামী চাকুরে। তার ভালবাসার মানুষ এন্তোনিও। তিনিও বিবাহিত এবং কাজ করেন। ভিন্ন এ দুই পরিবারের একজনের স্বামীর সাথে অন্য জনের স্ত্রী’র এমন ভাব-ভালবাসা খুব একটা সচরাচর পাওয়া যায় না। নিজে বিবাহিত হয়েও অন্য এক বিবাহিত নারীর সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা আসলে খুবই কম। কিন্তু মেক্সিকো শহরে এন্তোনিও ও পামেলার মধ্যে সে ঘটনাই ঘটলো। তারা দু’জন দু’জনকে ভীষণ ভালবাসেন। কিন্তু একজন আরেক জনের কাছে যাবেন কি করে। দু’জন থাকেন পাশাপাশি হলেও দুই শহরে আর ভিন্ন দু’টি সংসার। অথচ একজন আরেকজনকে ভালবাসেন আলিফ-লায়লার মত।
এন্তোনিয়-পামেলা দু’জন মিলে ঠিক করলেন সময়ে সুযোগে দু’বাড়ীর মধ্যে সুড়ঙ্গ কেটে আসা যাওয়ার পথ তৈরী করবেন। পরামর্শমত এন্তোনিয় তাই করলেন। নিজের বাড়ি থেকে পামেলার বাড়ি পর্যন্ত মাটির নিচ দিয়ে এক সুড়ঙ্গ তৈরি করেন। সেই সুড়ঙ্গ গিয়ে উঠেছে একেবারে পামেলার শোবার ঘরে।
মেক্সিকো শহরে গোপন নেটওয়ার্ক স্থাপনের জন্য সুড়ঙ্গ খোঁড়া খুব ঝামেলার কিংবা নতুন কিছু নয়। অবৈধ মাদক চোরাচালান কিংবা দামি জিনিস কালোবাজারে পাচার করা ইত্যাদি কাজে প্রায়ই সুড়ঙ্গ ব্যবহার করা হয় সেখানে। ফলে মেক্সিকো সিটির ভিলা দি প্রাডোর বাসিন্দা আন্তোনিও নিজের গোপন প্রণয় টিকিয়ে রাখতে এই সুড়ঙ্গ-কৌশলের আশ্রয় নেন। পার্শ্ববর্তী শহর টিজুয়ানার বাসিন্দা তার প্রেমিকা পামেলার সঙ্গে গড়ে উঠা প্রেমের সম্পর্ক রাখতে তিনিও তৈরী করে নেন একটি লম্বা সুড়ঙ্গ। বিবাহিতা পামেলার সাথে নিজের বাড়ি থেকে পামেলার বাড়ি পর্যন্ত মাটির নিচ দিয়ে ওই সুড়ঙ্গ পথে যোগাযোগ স্থাপন করেন আন্তোনিও। তার সেই সুড়ঙ্গ গিয়ে পৌঁছেছিল পামেলার শোবার ঘরে। কিন্তু বিধি যদি বাম হয় তা’ হলে যা ঘটতে পারে, তাদের বেলায়ও কিছু দিন পরে হলেও তাই ঘটেছিল! এক দিবসে প্রেমিকার ‘বেরসিক’ স্বামীর হাতে ধরা পড়ে আন্তোনিওর ওই গোপন প্রণয়ের ঘটে যবনিকা।
প্রতিদিন পামেলার স্বামী জর্জ যখন কাজে বেরিয়ে যেতেন, তখন ওই সুড়ঙ্গ দিয়ে প্রেমিকার সঙ্গে মিলিত হতেন আন্তোনিও। কিন্তু একটি কাজ করতে তারা ভুলে গিয়েছিলেন। পামেলার স্বামী যদি কখনো আগেভাগেই বাড়ি ফিরে আসেন, তখন কী করণীয়, তা ঠিক করে রাখেননি। তাই একদিন যখন দুজনেই নিজেদের ভালোবাসায় মত্ত, সেই মুহূর্তে বাড়িতে প্রবেশ করেন পামেলার স্বামী জর্জ। আন্তোনিও যদিও তাদের ‘লাভ টানেলে’র মধ্যে ঢুকে গিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা চালান, কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। জর্জ সারা ঘর খুঁজে এক সময় খাটের নিচে সেই সুড়ঙ্গ আবিষ্কার করেন।
বিস্ময়ে হতবাক হয়ে জর্জ সেই সুড়ঙ্গ ধরে এগোতে থাকেন এবং এক সময় গিয়ে পোঁছান আন্তোনিও’র বাড়িতে। আন্তোনিও তার কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চাইতে থাকেন কোনো হই-হল্লা না করতে; কারণ, পাশের ঘরে থাকা আন্তোনিওর স্ত্রী ও জানতেন না তার এই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কথা। কিন্তু তাতে কি আর দমবার পাত্র জর্জ? বরং এই কথায় তিনি আরও রেগে যান এবং দুজনে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। অচেনা একজন পুরুষের হাতে স্বামীকে মার খেতে দেখে আন্তোনিওর স্ত্রী পুলিশে ফোন করেন। অবশেষে নিরুপায় হয়ে পুলিশের কাছে সবকিছু স্বীকার করেন আন্তোনিও। আন্তোনিও-পামেলার এই ‘লাভ টানেলে’র ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে এবং বাজার সয়লাভ হয়ে যায়।সূত্র: অডিটি সেন্ট্রাল থেকে দি বিজনেস ষ্টেণ্ডার্ড।
|