মুক্তকথা সংবাদকক্ষ।। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পথিকৃৎ বিশিষ্ট সাংবাদিক কামাল লোহানী আজ ২০ জুন ২০২০ সকাল ১০টা ১০ মিনিটে রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন(ইন্নাহ লিল্লাহি ওয়া…রাজেউন)। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬বছর।
বাংলাদেশের চলমান সাংস্কৃতিক আন্দোলন ও সাংবাদিকতায় কামাল লোহানী শুধু শুধু একটি নামই নয় একটি ইতিহাস একটি প্রতিষ্ঠান। কামাল লোহানী দৈনিক আজাদ, দৈনিক সংবাদ, পূর্বদেশ, বাংলার বাণীসহ বিভিন্ন পত্রিকায় থেকে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করে গেছেন আমৃত্যু। তিনি ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন। ছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও একজন বলিষ্ঠ কন্ঠযোদ্ধা। তিনি, সাংবাদিক অভিনেতা লেখক প্রয়াত ফতেহ লোহানীর ছোট ভাই ছিলেন।
প্রবীণ সাংবাদিক, এই বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, কামাল লোহানীর পুরো নাম ছিল আবু নইম মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল। সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়ায় ১৯৩৪ সালে তার জন্ম হয়েছিল। ষাটের দশকের পর্দাকাঁপানো অভিনেতা সাংবাদিক ফতেহ লোহানী ছিলেন তার চাচাতো ভাই। জীবনভর ছায়ানট, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের মতো প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন।
তিনি ছিলেন বাংলাদেশ বেতার ও শিল্পকলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সাবেক সভাপতি, কর্ণেল তাহের সংসদের সভাপতি, ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের অকুতোভয় সৈনিক। তিনি একুশে পদকেও ভূষিত হয়েছিলেন। সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পাশাপাশি সৎ ও নিষ্ঠার সাথে সাংবাদিকতা করেছেন। আজীবন অসাম্প্রদায়িক ভাবাদর্শে অবিচল ছিলেন কামাল লোহানী।
তাঁর অমর স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। তিনি তার রেখে যাওয়া কাজের মাঝেই অনন্তকাল বেঁচে থাকবেন। সর্বজন শ্রদ্ধেয় মহীরূহসম এই ব্যক্তিত্বের মৃত্যুতে আমরা গভীর শোকাহত এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি জানাই শোক ও সমবেদনা।