মুসলিমদের মধ্যে উলামা বলে একটা শ্রেনী সৃষ্টি হয়েছে। তাঁরা মাদ্রাসায় পড়েছেন এবং একটা বিশেষ লেবাস পরেন। তাঁরা অন্যদের আওআম বা সাধারণ সমাজ বলে উল্লেখ করে থাকেন।
সাহাবা(রা), তাবেঈন, বা তাবেতাবেঈন-দের মধ্যে উলামা বলে চিহ্নিত কোন আলাদা শ্রেনী ছিল না। ইবনে আব্বাস(রা) , ইবনে উমার (রা), ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালিক, ইমাম আহমাদ, ইমাম শাফিয়ী প্রমুখ(র) বড় বড় আলিম কোন বিশেষ শ্রেনীভুক্ত ছিলেন না। তবে তাঁরা জ্ঞানী বলে শ্রদ্ধেয় ব্যাক্তিবর্গ ছিলেন। তখন বর্তমান মাদ্রাসার মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল না। তাঁরা নিজ নিজ ওস্তাদের কাছে দ্বীন শিক্ষা করেছেন।
পরবর্তী কালে ইসলামী জ্ঞান ভাণ্ডার অনেক শাখা প্রশাখায় বিস্তৃত হয়ে গেলে একাধিক ওস্তাদের সমন্বয়ে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন হয়। সম্ভবত হিজরি ৪র্থ শতকে বাগদাদে প্রথম মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য বিষয় এই যে, যারা মাদ্রাসায় পড়েছেন এবং সেই মত আমল করেন তাঁরা অবশ্যই আমাদের কাছে শ্রদ্ধেয়। তবে মাদ্রাসায় পড়েন নাই কিন্তু ওস্তাদের কাছে শিক্ষা নিয়েছেন এবং বিস্তর পড়া শোনা করেছেন এমন ব্যাক্তিও আলিম হতে পারেন। যেমন ডাঃ জাকির নায়েক অবশ্যই একজন বড় আলিম। অনেকে বলেন মেডিকেল কলেজে না পড়লে যে ভাবে ডাক্তার হওয়া যায় না, সে ভাবে মাদ্রাসায় না পড়ে আলিম হওয়া যায় না। কিন্তু এই উপমা বোধহয় সঠিক নয়। আমাদের ধর্মে আছে নামাজের ইমাম হবেন তিনি যিনি উপস্তিত মুসল্লীদের মধ্যে বেশী কোরআন জানেন। বলা হয় নাই তাকে কোন বিশেষ শ্রেনী ভুক্ত হতে হবে।
যারা মাদ্রাসায় পড়েছেন তাদের সনদ অবশ্যই বিবেচিত হবে নির্দিষ্ট পদে নিয়োগ লাভের জন্যে। অন্যথায় বিশেষ শ্রেনী না হয়ে, সমাজে মিশে থাকা কি ভাল নয়? বিশেষ শ্রেনী হয়ে গেলে যে অনেক সমস্যা সৃষ্টি হয়। গরু জবেহ করা, মৃত ব্যাক্তির কাছে কোরআন খতম দেয়া, ঘরের ঈশান দেয়া, ইত্যাদি দৈনন্দিন কাজে মানুষ যখন বলে, “এই, একটা হুজুর নিয়ে আয়।” তখন সেটা ইসলামের নয়, অন্য ধর্মের কথা মনে করিয়ে দেয়।
অন্য দিকে সব মুসলমানেরই উচিৎ ইসলামী জ্ঞান অর্জন করা। বস্তুত ইলিম ছাড়া আমল করা এবং ভাল মুসলিম হওয়া সম্ভব নয়। আমৃত্যু ইলিম অর্জন করতে হবে। আর মাদ্রাসায় ভর্তি না হলে ইলিম অর্জন করা যাবে না, এমন কোন কথা নেই।
আল্লাহ ভাল জানেন।
7 July at 12:27
ফেইচবুক থেকে সংগৃহীত