মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে দ্রুতগতির মোটরসাইকেলের আঘাতে সালামত মিয়া (৪০) নামের এক ব্যবসায়ীর মৃত্যুু হয়েছে। শনিবার (১৫ জুলাই) সকাল ৯ টায় উপজেলার শমশেরনগর-কমলগঞ্জ সড়কের বড়চেগ গ্রাম এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার প্রতিবাদে প্রায় ২ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী। নিহত সালামত মিয়া বড়চেগ গ্রামের মৃত রমজান মিয়ার ছেলে। সে তিন সন্তানের জনক ও শমশেরনগর বাজারের চাতলাপুর সড়কের একটি ভেরাইটিজ দোকানের মালিক।
প্রত্যক্ষদর্শী ও গ্রামবাসী সুত্রে জানা যায়, শনিবার সকাল ৯ টায় সালামত মিয়া ছোট ছেলেকে মাদ্রাসায় দিয়ে দোকানে আসার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুতগতির একটি মোটরসাইকেলের আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এ সময় মাথায় গুরুতর আঘাতে তার মুখ ও কান দিয়ে প্রচুর পরিমাণে রক্ত ক্ষরণ হয়। এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার সকাল ৯টা থেকে পৌনে ১১টা পর্যন্ত বিক্ষুদ্ধ লোকজন শমশেরনগর-ভানুগাছ সড়ক অবরোধ করে রাখে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
শমশেরনগর বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো: আব্দুল হান্নান মোটরসাইকেলের আঘাতে ব্যবসায়ী সালামতের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেন। এ ঘটনার পর বড়চেগ গ্রামে শোকের মাতম শুরু হয়েছে।
শমশেরনগর পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ শামীম আকঞ্জি দুর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পথচারী রাস্তায় দাড়িয়ে থাকা অবস্থায় দ্রুতগামী একটি মটরসাইকেল এসে ধাক্কা দেয়। পরে স্থানীয়রা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। পুলিশ মোটরসাইকেলটি আটক করেছে, তবে চালক পালিয়ে গেছে। চালককে দ্রুত আটক করা হবে বলে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, দুর্ঘটনার পর স্থানীরা রাস্তা অবরোধ করে রাখে পরে আমরা এসে স্বাভাবিক করে দেই।
মৌলভীবাজারের সীমান্তবর্তী কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগরসহ বিভিন্ন হাটবাজারে মিলছে চোরাই পথে আসা ভারতীয় চিনি। এতে চোরাকারবারীরা রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে। ঠকছেন ভোক্তারা। সীমান্ত এলাকা থেকে প্রতিদিন ট্রাক ও পিকআপ ভর্তি চিনি আসার কারণে সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, কুলাউড়ার ফুলতলা, চাতলাপুরসহ সীমান্তের কয়েকটি স্থান দিয়ে প্রতিদিন আনা হচ্ছে ভারতীয় চিনি। সাধারণত ভোর রাতে অবৈধ চিনি আনা হয়। শমশেরনগরের স্থানীয় চোরাকাবারীসহ কমলগঞ্জ ও কুলাউড়ার একটি প্রভাবশালী মহল অবৈধ চিনি ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত। সীমান্ত অতিক্রম করেই তারা ভারতীয় বস্তা পরিবর্তন করে দেশীয় বস্তা দিয়ে চিনি পরিবহন করে। ফলে প্রশাসন ইচ্ছে করলেও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছে না। সীমান্ত এলাকার নিরীহ সাধারণ লোকদের দৈনিক ভিত্তিতে মজুরি প্রদান করে এই ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বর্তমানে ভারতে প্রতি কেজি চিনির দাম ৪৪ রুপি। ৫০ কেজি বস্তার দাম ২ হাজার ২০০ রুপি। দেশের বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকায়। মোদি দোকানীরাও অবৈধ চিনি কিনে দেশীয় চিনির তুলনায় লাভবান হচ্ছেন। তবে ভোক্তারা ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা দরে এই চিনি কিনছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শমশেরনগর বাজারের দু’জন ব্যবসায়ী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় চিনি কিনে বিক্রি করছি। শমশেরনগর ভেতর বাজারের এক ব্যবসায়ীর দোকান থেকে তুলনামূলক কম দামে ভারতীয় চিনি পাওয়া যাচ্ছে। তিনি যদি একবার অকশনের মাল ক্রয় করেন পরে পুরো মাস অবৈধভাবে আসা চিনি সরবরাহ করেন।
পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের একটি সূত্র জানায়, কিছুদিন আগে মৌলভীবাজারে ১৬০ বস্তা চিনিসহ ট্রাক র্যাবের গোয়েন্দা আটক করে। পরে উচ্চ মহল থেকে ফোন আসার কারণে ছেড়ে দিতে হয়েছে। দেশীয় চিনি দাম অধিক থাকায় আর তুলনামূলক ভারতীয় চিনির দাম কম থাকায় চোরাকারবারীরা কৌশলে অবৈধ চিনি কিনে আনছে।
এ ব্যাপারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার এর সহকারী পরিচালক মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, আসলে এই বিষয়টি পুলিশ দেখলে ভালো হয়। সেখানে মামলার বিষয়ও সম্পৃক্ত। তারপরও অভিযানে আসলে তা খতিয়ে দেখা হবে।
এ বিষয়ে কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, বিষয়টি আমাদের নলেজে রয়েছে এবং আমরা লোক লাগিয়ে রেখেছি। পাওয়া গেলেই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে। এতে কালীপ্রসাদ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সত্যেন্দ্র কুমার পাল (নান্টু) সভাপতি ও কমলগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। শনিবার (১৫ জুলাই) দুপুর ১২টায় কমলগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় হল রুমে আয়োজিত ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জুয়েল আহমেদ।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক ভান্ডারীগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. খুরশেদ আলীর সভাপতিত্বে ও শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সালাহউদ্দিন এর সঞ্চালনায় এ সময় উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে ৩৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষনা করা হয়। কমিটির অন্যান্য পদে নির্বাচিতরা হলেন- সহ সভাপতি মিহির ধর চৌধুরী, মো. খুরশেদ আলী, মো. আব্দুস সোবহান, পদ্ম মোহন সিংহ, মিছবাহুর রহমান চৌধুরী, মো. সাজ্জাদুর রহমান, নূরে আলম সিদ্দিক, ফয়েজ আহমেদ, আব্দুল মুমিন, মো. সালাহউদ্দিন, সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে সহকারী শিক্ষক হোসনে আরা আক্তার, তমিজুর রহমান, জমসেদ আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক হলেন, প্রমোদ রঞ্জন দেবনাথ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান বাপ্পি, কোষাধ্যক্ষ ধীরেন্দ্র কুমার সিংহ, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক দিপ্তি সিনহা, সহ- সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মমতাজ হেনা জবা, শ্যামল কুমার সিংহ, প্রচার সম্পাদক শাহিন আহমদ, সহ-প্রচার সম্পাদক দেবাশিষ রঞ্জন দেব, শাহানুর আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক হলেন ফরিদ আহমদ, সহ-দপ্তর সম্পাদক সামাদ আলী, ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক বিকাশ সিংহ, সহ-ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক নিরোদ রঞ্জন দেবনাথ।
এছাড়া কার্যকারী সদস্যরা হলেন- শিক্ষক মানিক প্রসাদ পাল, ননী গোপাল পাল, অজিত কুমার সিংহ, হারুনুর রশীদ, রুনা বেগম, হালিমা আক্তার, মিনারা বেগম. চম্পা আচার্য্য ও মাওলানা জোবায়ের আহমদ।