এক সময় শ্লোগান ছিলো “শিক্ষার আলো ঘরে ঘরে জ্বালো”। তখন অনেকেই প্রশ্ন করতো, যাদের ঘর নেই তাদের জন্য শিক্ষার আলো কীভাবে জ্বলবে। সরকার তখন অনেক বাসস্থানহীনদের বাড়ীঘর তৈরী করে দেয়ার প্রকল্প হাতে নিয়ে অনেককেই বাড়ী-ঘর বানিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু তাতে কি সত্যি শিক্ষার আলো জ্বলতে পারবে? শুধু মাথার উপর চালা থাকলেই কী সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়? আসলে হয় না। শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত মানুষের সংখ্যা এখনও অগুণতি। স্কুল পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী ছাড়া গহীন গ্রামের কত শিশু-কিশোর আর কিশোরী যে স্কুলে আসার ফুরসতই পায় না সে হিসেব কারো কাছে আছে বলে আমরা মনে করি না।সেসকল কিশোর-কিশোরীদের কেউবা আবছা আলোয় বসে আছে। অনেকেই আবার পড়ালেখা করলেও নানা রকম সমস্যায় ভোগে। সব থেকে বড় সমস্যা হলো পড়ালেখার খরচ জোগানো। যার কারণে কম বয়সে শিক্ষার্থীরা কাজ করতে বেরিয়ে পরে। কেউ পড়ালেখার খরচ জোগানোর জন্য, কেউবা পরিবারের খরচ জোগানোর জন্য। |
|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
নাসরিন জাহান শোভা ওদেরই একজন। আজ মঙ্গলবার ১ ফেব্রুয়ারী ২০২২ইং সকালে এই শোভা’র সাথে দেখা হলো। কয়েকজন মহিলা শ্রমিক মাঠে বসে ইট-পাথর ভাঙ্গছিলেন। তাদের সাথেই নাসরিন মাঠে বসে ইট ভাঙতে সহায়তা করছিল। কাছে গিয়ে তার নাম জানতে চাইলাম। প্রথমে একটু বিস্মিত নয়নে চেয়ে থেকে বললো কেনো আমার নাম দিয়ে কি করবেন? ওর সংসারের গভীরের বিষয় জানার জন্য ওর সাথে খুব ভাব জমাবার ঢংগে একটু হেসে বললাম কেনো তোমার কি নাম জানতে নেই? ওর কঁচি মুখে হাসি ফুটে উঠলো। চপল চাহনিতে হেসে বললো তার নাম নাসরিন জাহান শোভা। |
|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বয়স মাত্র ১১ বছর। মৌলভীবাজারের পৌরসভা স্কুলের ৭ম শ্রেনীর ছাত্রী সে। মা-বাবা দুজনই ব্লাড কেন্সারে মারা গেছেন। বাবা মারা গেছেন ৫ বছর আগে আর মা মরার দু’মাস হলো। তারা তিন ভাইবোন। বোন সব বড়। পৌরসভা স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ে। ভাই সব ছোট। মাত্র ৫ বছর বয়স। বর্তমানে তারা নানির কাছে কাজীর গাঁয়ে থাকে। কাজ করতে আসে পড়ার খরচ মেটানোর জন্য নয় বরং পরিবারের খরচ বহন করার জন্য। পড়ার খরচ শহরেরই এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা থেকে পায়। কাজ করতে হয় পেটের জ্বালায়। |