1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
বেরিলেক অতীত ও বর্তমান - মুক্তকথা
শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৩৪ পূর্বাহ্ন

বেরিলেক অতীত ও বর্তমান

বিশেষ প্রতিবেদক॥
  • প্রকাশকাল : বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০২৪
  • ১৫ পড়া হয়েছে

 

সবচেয়ে কম মূল্য ধরে দেখলে- দখল করা হয়েছে ১১কোটি টাকার জমি
দৃষ্টিনন্দন বেরিলেক অবৈধ দখলে

 

সদর জেলা শহরের একমাত্র দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক জলাধার “বেরি লেইক” দিনের পর দিন দখলদারদের লুলুপ দৃষ্টিতে পড়ে সীমানা হারিয়ে বর্তমানে এক বর্জময় দীঘির আকার ধারণ করেছে। নিবিড় কোলাহলমুক্ত প্রাকৃতিক পরিবেশের এই মনোরম আভয়জলাধারটি বছরের পর বছর সৎনজরদারী ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নিজের অস্থিত্ব হারিয়ে বর্তমানে কোলাহল মুখর নিরানন্দ সকলের বর্জ্য ফেলার অভয়ালয়ে পরিণত হয়ে টিকে থেকে জানান দিচ্ছে তার অতীত সৌন্দর্য্য আর মনমোহিনী গৌরবের। পৌরসভার এক হিসেবের মতে লেকের মোট ১১২৬.৩ শতক জমির মধ্যে শুধু জলসীমা ছাড়া সবই দখলদারদের কবলে চলে গেছে। একাত্তুরের স্বাধীনতার আগে মনু থেকে তৈরী অনেকটা প্রাকৃতিক এ জলাধারটি শহরের সৌন্দর্য্য ও নান্দনিকতার প্রতীক ছিল। জলাধারের চারদিক ছিল মুক্তবাতাসে নিশ্বাস নেয়ার উন্মুক্ত স্থান। বেরিলেইকের উত্তরে ছিল ধানচাষের খোলা ভূমি, দক্ষিণে শাহ মোস্তাফা বাগদাদীর কবর সংলগ্ন বড় সড়ক। পশ্চিমে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও পশ্চিমে ধানী ক্ষেতের জমির পর পায়েহাটা পৌরসড়ক। এখন চারিদিকে কেবল দখল আর দখল। নানা নমুনায় কাগজ তৈরী করে দখল। উত্তরের ধানী জমির আইনী-বেআইনী ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে বেসুমার। দখল করা হয়েছে শতশত লাখ টাকার জমি।

মৌলভীবাজার পৌরসভা কার্যালয় জানায়, জেলা প্রশাসনের মালিকানাধীন ১নং খতিয়ানের পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত মৌলভীবাজার বেরি লেকটি মানুষের বিনোদনের জায়গা হিসাবে গড়ে তুলতে ভোগ দখলের দ্বায়িত্ব দেওয়া হয় মৌলভীবাজার পৌরসভাকে। ১১২৬.৩ শতক জায়গা নিয়ে বেরি লেক অবস্থিত। এর মধ্যে জলসীমা ৯৭৪ দশমিক ৪ শতক, লেকের উত্তর পাড়ে স্থলসীমা ৪৪ দশমিক ৯৮ শতক, লেকের দক্ষিণে স্থলসীমায় ৪৩ দশমিক ২৮ শতক, লেকের পশ্চিম দক্ষিণে পতিত জমি ৫৭ শতক ও কবরস্থানের আরও ৭ শতক জমি মিলে সর্বমোট জায়গার পরিমান হয় ১১২৬ দশমিক ৩ শতক। স্থানীয়দের হিসেবে লেকে জবরদখলকৃত জমির পরিমান প্রায় ১৪৫ শতক। প্রতি শতক জমির দাম সর্বনিম্ন ৭ লাখ টাকা ধরা হলে ১৪৫ শতক জমির দাম পড়ে ১১ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

 

এ প্রতিবেদক জলাধারটি দেখতে গেলে জলসীমা ছাড়া লেকের চার পাশে অবশিষ্ট কোন জায়গাই দেখতে পাননি। চারিদিকে শুধু বাসা-বাড়ি, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, ছাগলের হাট ও ভ্রাম্যমান দোকান-পাট দৃশ্যমান হয়।

স্থানীয়রা জানান, বিভিন্ন পৌর মেয়রের আমলে লোকদেখানো লেকের উন্নয়নে হাত দেওয়া হলেও কাজ শেষ হয়নি কোনদিনই। লেকের চারপাশে যত্রতত্র দোকানপাট, পাঁকা স্থাপনা, আধা পাঁকা স্থাপনা গড়ে উঠায় দূর থেকে লেকটি এখন আর আগের ন্যায় উন্মুক্ত খোলাভাবে দেখা যায়না ফলে হারিয়ে গেছে তার প্রাকৃতিক নান্দনিক সৌন্দর্য্য। স্থানীয় ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ী ও অবৈধভাবে বসবাসকারীরা যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলে রেখেছেন লেকের জলে। এতে দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে প্রতিনিয়ত। অবধৈভাবে জলাধারে’র ভূমি ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করা হচ্ছে। পৌরসভা থেকে একটি মহল চাঁদাও নিয়েছেন ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ীর কাছ থেকে।

 

 

আলাপ কালে লেক পাড়ের এক অবৈধভাবে দখলদার ব্যবসায়ী দরগাহ মহল্লার মাসুদ মিয়া জানান, লেকে প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার ছাগলের হাট বসে। আমি এখানে ছোট একটি কাঁচা ঘর তুলে খাট বানাই। এখানে মানুষ ময়লা ফেলে দিতো। আমি জায়গাটি পরিস্কার করে ব্যবসা শুরু করেছি। তিনি বলেন, শেখ কাজিম উদ্দিন, লেকের ১২ হাল জমি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ছাত্র আন্দোলনের আগে পৌরসভা থেকে আমার কাছে লোকজন আসছিল। তারা আমায় ওই জায়গা ব্যবহার করায় চাঁদা দাবী করেন। আমি বলেছি, পৌরসভার রসিদ দিলে আমি আপানাদের টাকা দেবো। পরে তারা রসিদ না দেওয়ায় আমি আর টাকা দেইনি। আন্দোলনের পর ওদের আর দেখতে পাইনি। এছাড়াও আ’লীগের পরিচয় দিয়ে আমার কাছে চাঁদা দাবী করা হয়েছিল। আমি বলেছি “তোমরা পারলে আমারে কিছু দেও”। তিনি বলেন, লেকে আমার মত আরও ১শ’র উপর ভ্রাম্যমান দোকান রয়েছে। লেকের আরেক বাঁশ ব্যবসায়ী গিয়াসনগর এলাকার মোঃ নওশাদ জানান, দেড় বছর যাবৎ বাঁশ বিক্রি করছি। আমার সাথে এখানে আরও অনেকেই ব্যবসা করছেন।

পৌরসভা কাউন্সিলার আনিছুজ্জামান বায়েছ এ প্রতিবদেককে বলেন, লেক’এর সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য একেনেকে একটি প্রজেক্ট পাস হয়েছিল। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ায় এটি কোন পর্যায়ে আছে তা বলা যাচ্ছেনা। তিনি বলেন, ২০ বছর পূর্বে লেকে একটি শিশু পার্ক ছিল। পরে অনেকে জবরদখল করে ঘর-বাড়ি বানিয়েছেন। তিনি আশা ব্যক্ত করে বলেন, লেকের ম্যাপ দেখে জেলা প্রশাসককে সাথে নিয়ে জবরদখলকৃত জায়গা উদ্ধার করা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, লেকের পাড়ে যে বাস টার্মিনালটি রয়েছে, সেটিও পৌরসভা ভোগ দখল করছে। এখন টার্মিনাল হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

মৌলভীবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র ফয়জুল করীম ময়ুন বলেন, আমি দ্বায়িত্ব ছাড়ার আগে লেক সৌন্দর্য্য বর্ধণের জন্য ১শ কোটি টাকার একটা ফান্ড তৈরি হয়েছিল। ওই খাতে পরবর্তীতে কত টাকা আসছে আমার জানা নাই। ওই লেক নিয়ে একটা মামলাও রয়েছে। মৌলভীবাজার পৌরসভা প্রশাসক মল্লিকা দে বলেন, লেকের জবরদখলের বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে বিষয়টি দেখছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT