মুক্তকথা: শুক্রবার ২৮শে অক্টোবর ২০১৬।।
ভেড়ামারা উপজেলার ৫৮৪ জন জেলে ভাতা পায়নি
পদ্মায় ইলিশ ধরা থামছে না। ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা হচ্ছে ইলিশ। বিক্রিও হচ্ছে দেদারছে।
মাছ ধরা ঠেকাতে প্রশাসনও রয়েছে নদীতে বেশ তৎপর। কিন্তু মাছ ধরা থামছে না। পুলিশের ভয়ে, জেলেরা গভীর রাতে পদ্মা নদীতে মাছ ধরতে নামে। এ চিত্র কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রীজের কাছ থেকে, ঐদিকে তালবাড়িয়া, এদিকে রায়টা পাথর ঘাট পর্যন্ত।
একা প্রশাসনের পক্ষে মাছ ধরা বন্ধ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন, ভেড়ামারা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার গোলাম সরোয়ার।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় রয়েছে প্রায় ৪০ কিলোমিটার পদ্মা নদী। তালিকাভুক্ত জেলে রয়েছে ৯’শ ৭২ জন। এরমধ্যে ইলিশ মাছ ধরার কাজে সম্পৃক্ত মোট ৫৮৪ জন জেলে। মা ইলিশ রক্ষায় সরকার ১২ অক্টোবর থেকে ২রা নভেম্বর ইলিশ মাছ ধরা, ক্রয়-বিক্রয়, সংরক্ষন নিষিদ্ধ করেন।
এ সময়ে পদ্মায় প্রচুর ইলিশ পাওয়া যায় বলে এক শ্রেনীর অসাধু চক্রের সহযোগিতায় কিছু জেলেরা ইলিশ মাছ ধরার মহাৎসব শুরু করে। নিষিদ্ধ ১১ দিনেই শতশত মন ইলিশ ধরেছে জেলেরা। এ যেন ইলিশ ধরার মহাৎসব। নদী উপকুল এলাকায় সব সময় পাওয়া যাচ্ছে প্রচুর ইলিশ। দামও সস্তা। যে কারনে জেলেদের সাথে ক্রেতারাও বেসামাল।
ভেড়ামারা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার গোলাম সরোয়ার জানিয়েছেন, মা ইলিশ রক্ষায় উপজেলা প্রশাসন ব্যাপক তৎপরতা চালাচেছ। একা প্রশাসনের পক্ষে মাছ ধরা বন্ধ করা সম্ভব নয়। যে কারনে চেয়ারম্যান, মেম্বার সহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিদের নিয়ে ২টি সচেতনতা মুলক সভা, ১৫’শ লিফলেট, ব্যানার, মাইকিং করা হয়েছে।
এ তৎপরতা কোন কাজেই আসেনি। স্থানীয়দের সহযোগিতা পাচ্ছি না। যে কারনে পদ্মায় মাছ ধরা থামছে না। ১১দিনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শান্তিমনি চাকমা, উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি শিহাব রায়হান, ভেড়ামারা সার্কেলের এএসপি কামরুল হাসান সহ দিনে ও রাতে ৪৬টি অভিযান চালিয়ে মাত্র ৫০ কেজি ইলিশ জব্দ করা হয়েছে। জেল দেওয়া হয়েছে ৪ জন জেলেকে। ৪৬ হাজার মিটার জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। জেলেদের জরিমানা করে ৩৯ হাজার টাকা আদায়ও করা হয়েছে এ সময়ে। কিন্তু বন্ধ হয়নি ইলিশ ধরা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ভেড়ামারা ৪০ কিলোমিটার পদ্মা নদীতে যেন ইলিশ মাছ ধরার মহাৎসব চলছে। পদ্মায় প্রচুর নৌকা ইলিশ মাছ ধরায় ব্যস্ত। প্রশাসন অভিযান চালিয়েও নিয়ন্ত্রন নিতে পারছেনা। মোকারিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ’এর সাবেক মেম্বার বাবুল আক্তার জানিয়েছেন, জেলেরা সমাজের হতদরিদ্র শ্রেনীর অংশ। ২২দিন মাছ ধরা বন্ধ করলে জেলেদের না খেয়ে জীবন যাপন করতে হবে। সরকারের ঘোষিত ভাতা এ অঞ্চলের কোন জেলেই পায়নি। অথচ উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় ৫৪ উপজেলার জেলেরা ২০ কেজি করে চাউলের সুবিধা পেয়েছে। ভেড়ামারা উপজেলার ৫৮৪ জন জেলে ভাতা পায়নি। ফলে বাধ্য হয়েই জীবন জীবিকার তাগিদে জেলেরা পদ্মা নদীতে নিয়ম উপেক্ষা করে মাছ ধরতে নেমেছে। এ ক্ষেত্রে নিষেধ করেও কাজ হচ্ছে না।(মোহাম্মদ হাসানুজ্জামানের ফেইচবুক থেকে সংগৃহীত)