1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
সুন্দর আলীর ‘সুন্দর মন,’ সন্তানদের মাঝেও সেই প্রভাব - মুক্তকথা
শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৮ পূর্বাহ্ন

সুন্দর আলীর ‘সুন্দর মন,’ সন্তানদের মাঝেও সেই প্রভাব

রাজন আহমদ
  • প্রকাশকাল : শনিবার, ৩০ জুলাই, ২০২২
  • ২৩১৪ পড়া হয়েছে

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শ্যামেরকোনা বাজার সংলগ্ন মরহুম হাজী সুন্দর আলীর বসতবাড়ি ইতিমধ্যেই পাখি বাড়ি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। প্রতিদিন হাজারো পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয় বাড়িটি। গ্রাম্য সরদার থাকায় বিভিন্ন বিচার-সালিশ এবং জনহিতকর অনেক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থাকায় মরহুম সুন্দর আলীর নামটি একসময় নিজ এলাকা ছাড়িয়ে শহর অবধি পৌঁছে যায়। উদারনৈতিক ও মানবিক গুণাবলি সম্পন্ন সুন্দর আলীর হৃদয়ে ছিল পাখিদের প্রতি অকৃত্রিম মমত্ববোধ ও ভালবাসা।

পুরাতন বাড়ি বিক্রি করে নতুন বাড়িতে তিনি যখন গাছ-গাছালি লাগান, এর কয়েক বছর পর থেকেই বিভিন্ন প্রজাতির পাখি তাঁর বাড়িতে আসতে শুরু করে। সুন্দর আলীও তাঁর সুন্দর মনের পরিচয় দিয়ে পরম মমতায় পাখিগুলোকে আগলে রাখতেন। প্রথম দিকে পাখির সংখ্যা অল্প হলেও বছর বছর পাখির সংখ্যা বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখিদের আসা শুরু হলে কিছুটা বিড়ম্বনা দেখা দেয়। স্থায়ীভাবে বসবাসে পাখির বিষ্ঠার কারণে বাড়ির বিভিন্ন ফলজ বৃক্ষ এবং পুকুরের মাছের ক্ষতি হতে শুরু হয়। এমতাবস্থায় কিছুটা বিরক্তি আসলেও, ততদিনে তিনি পাখির মায়ায় পড়ে গেছেন। যার ফলে পাখির এই মায়ার কাছে সেই বিরক্তি ম্লান হয়ে যায়। এমন কি বাহিরের লোকজন পাখি শিকারের চেষ্টা করলে, তিনি তখন খুব রেগে যেতেন এবং বাধা দিতেন। এরপর থেকে আর কোন শিকারি বাড়ির আশপাশে আসার সাহস করেনি। তিনি বলতেন, এতো জায়গা থাকতে পাখিগুলো যখন আমার বাড়িটিকেই নিরাপদ ভেবে আশ্রয় নিয়েছে, তখন পাখিগুলোকে রক্ষা করা-ও আমার নৈতিক দায়িত্ব।

গত সপ্তাহে সরেজমিনে বাড়িটিতে গিয়ে দেখা গেছে সন্ধ্যা হওয়ার আগে থেকেই পাখির কিচিরমিচির ও কলকাকলীতে মুখরিত হয় বাড়িটি। ঝাঁকে ঝাঁকে আসা পাখিদের মধ্যে সাদা বকের সংখ্যাই বেশি। এছাড়া রয়েছে কিছু বুলবুলি, শালিক ও বাবুইপাখিও। পাখিগুলো বাড়িটির উপর উড়ছে, কোথাও কোন নড়াচড়া দেখলে এক গাছ থেকে উড়াল দিয়ে আরেক গাছে গিয়ে বসছে। কিছু পাখি কিছুটা খুঁনসুটিতেও ব্যস্ত। সারা দিন খাবারের সন্ধানে থাকা পাখিগুলো আবার নিজেদের নীড়ে ফিরে আসায় তাদের আনন্দের যেন আর শেষ নেই!

২০১৪ সালের ২২ জানুয়ারি সুন্দর আলী মৃত্যু বরণ করলেও এখনো তাঁর বাড়িতে এসে বসতি গড়া পাখিগুলো নিরাপদেই আছে। সুন্দর আলীর স্ত্রী এবং সন্তানরা সবাই-ই পাখি প্রেমী। দুই ছেলে এবং এক মেয়ে যুক্তরাজ্য প্রবাসী। বাকি দুই মেয়ে দেশেই আছেন। বাবার মত তাঁরাও পাখিগুলোর প্রতি যথেষ্ট আন্তরিক। গত ১৫-১৬ বছর ধরে বন্ধু হয়ে পাখিগুলোকে আগলে রাখছেন। সব ক্ষতিকে হাসি মুখে মেনে নিয়েছেন। সুন্দর আলীর মেজ মেয়ে ফাহিমা আক্তার লিপি’র ভাষায়- ‘এক সাথে থাকতে থাকতে পাখির বিষ্ঠার গন্ধ এখন আর তেমন টের পাইনা। তবে সুপারি গাছে ফল হয় না। বাঁশ ঝাড় মরে যায়। আম গাছেও ফল কম আসে। যা আসে, তা-ও পাখির বিষ্ঠার কারণে খাওয়া যায় না। পুকুরের পানি ব্যবহার করতে পারি না। মাছ খাইতে পারি না। সব আমরা মেনেই নিয়েছি। পাখি তো, কিছু করার নাই। তারার(পাখির) ইচ্ছায় আসে, তারার ইচ্ছায় যায়।’
নিরীহ পাখি কূলের প্রতি সুন্দর আলী এবং তাঁর বংশ পরস্পরাদের এই ভালবাসা যে কারো মনোজগতে ঢেউ তুলতে বাধ্য। এমন দায় আর দায়িত্ববোধের জয় হোক।

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT