জেল হাজতে মারা গেলেন ‘কুমীর চাষের ডায়রী’ লেখক মোস্তাক আহমদ। মোস্তাক, গেল বছরের মে মাস থেকে জেলে ছিলেন। সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা খবর প্রকাশের অপরাধে ডিজিটেল নিরাপত্ত্বা আইনে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার উচ্চ নিরাপত্ত্বার কাশিমপুর জেল খানায় তিনি মারা যান। তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল যেখানে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। জেষ্ঠ্য কারাগার তত্ত্বাবাধায়ক সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য দেন। খবর প্রকাশ করেছে ঢাকা ট্রিবিউন।
সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা গেছে, মৃত্যুর দিন মোস্তাক তার জেল কামরায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল যেখানে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতালের জরুরী বিভাগের মোহাম্মদ শরিফ নামের একজন ডাক্তার বলেন যে মোস্তাককে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়।
‘রেপিড একশন বেটেলিয়ান’ এর একটি মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর মোস্তাক বিগত বছরের মে মাস থেকে কারাগারে ছিলেন এবং ৬দফা তার জামিন আবেদন প্রত্যাখাত হয়। গত ২৩ ফেব্রুয়ারী শেষ দফা মোস্তাকের জামিন আবেদন আদালত প্রত্যাখ্যান করে এবং আরো গভীর অনুসন্ধান চালিয়ে তদন্ত বর্ণনা দাখিল করতে নির্দেশ দেয়া হয়।
মোস্তাক তার বৃদ্ধ মা-বাবাসহ স্ত্রী লিপা আক্তারকে নিয়ে রাজধানী ঢাকার লালমাটিয়ায় বাস করতেন। ‘মাইকেল কুমীর ঠাকুর’ ছদ্মনামে মোস্তাক লিখতেন। ২৯৪ দিনের কারাবাসের পর অবশেষে মৃত্যুই তাকে জেল থেকে মুক্তি দিল।
‘স্বৈরতন্ত্র ও রাজতন্ত্র বিরোধী জাতীয় কমিটি’র সভাপতি আকমল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক হাসিবুর রহমান, জেলহাজতে মোস্তাকের এ মৃত্যুতে গত শনিবার গভীর উষ্মা প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন। কারাগারে আটক লেখক মোস্তাকের এ মৃত্যুকে তারা বাকস্বাধীনতার উপর রাষ্ট্রের আক্রমণ উল্লেখ করে অবিলম্বে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, বিশ্বস্ত মানবাধিকার সংগঠন ও কর্মী এবং আইনজীবী সমন্বয়ে একটি স্বাধীন ও বহুমাত্রিক তদন্ত কমিটি গঠন করে মোস্তাকের মৃত্যুর কারণ প্রকাশ করার দাবী জানিয়েছেন।
এমন অবস্থাকে তারা মৌলিক নাগরীক অধিকারের বিরুদ্ধে এক ভয়াবহ অবস্থা উল্লেখ করে তারা আটক ‘কার্টুন’ আঁকিয়ে আহমদ কবীর কিশোরসহ সকল বিনাবিচারে আটক বন্ধীদের মুক্ত করে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সূত্র: ঢাকা ট্রিবিউন
|