মৌলভীবাজার অফিস: বুধবার ৩রা ফাল্গুন ১৪২৩।। মৌলভীবাজারের রাজনগরে কুশিয়ারা নদী থেকে কোন ধরনের অনুমতি না নিয়েই বালু উত্তোলনের সময় ড্রেজার মিশিন জব্দ ও ড্রেজার চালক কে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে দৈনিক যায়যায়দিন ও দৈনিক জালালাবাদে ও মুক্তকথা অনলাইনে “কুশিয়ারা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এ রিপোর্টের পর থেকে স্থানীয় এলাকাবাসী ও প্রশাসন এসব বালু খেকোর বিরুদ্ধে তৎপর হন। অবৈধ ভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলনের দায়ে সরকারের অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে থানায় মামলা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা জামাল উদ্দীন বাদী হয়ে বুধবার বিকালে রাজনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পুলিশ মো. বাচ্চু মিয়া নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে। মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নে কেশরপাড়া মৌজায় ১ নং খতিয়ানের ১২১৭ দাগে কুশিয়ারা নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে মেসার্স তালুকদার এন্টারপ্রাইজের মালিক আশরাফ উদ্দীন আহমেদ অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করছিলেন।
সম্প্রতি স্থানীয় লোকজন রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম ওই ড্রেজার মেশিন ও ৬শ ফুট প্লাষ্টিকের পাইপ জব্দ করে স্থানীয় ইউপি সদস্যের জিম্মায় রাখেন। এসময় অবৈধ বালু উত্তোলনকারী আশরাফ উদ্দীন আহমদ তার বৈধ কাগজাদি রয়েছে বলে জানালে নির্বাহী অফিসার কাগজ দেখতে চান। পরে তিনি সময় নিয়েও বৈধ কাজপত্র দেখাতে পারেন নি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে ২০১৫ সালের ২৫ আগষ্ট করা একটি চুক্তিপত্র দাখিল করেন। ওই চুক্তিপত্রের বর্ধিত মেয়াদ একটি মেয়াদ ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হয়েছে। পরবর্তীতে তার বৃদ্ধি করা হয়নি। কিন্তু এর পরও তিনি পূর্বানুমতি না নিয়ে কুশিয়ারা নদী থেকে বালু ও পলিমাটি উত্তোলন করে বিক্রি করে আসছিলেন। এসব কাগপত্র যাচাই বাছাই করে সঠিক না হওয়ায় বুধবার ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মো. জামাল উদ্দীন বাদী হয়ে মেসার্স তালুকদার এন্টারপ্রাইজের মালিক সদর উপজেলার উদারাই গ্রামের নূর উদ্দীনের ছেলে আশরাফ উদ্দীন আহমেদ (৫৩), রাজনগর উপজেলার যোগিকোনা গ্রামের সচীন্দ্র দাসের ছেলে সতীষ চন্দ্র দাস (৪০) ও হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার রাধাপুর গ্রামের দুদু মিয়ার ছেলে মো. বাচ্চু মিয়ার (৩৫) নাম উল্লেখসহ ৮জনকে আসামী করে মামলা করেন।
রাজনগর থানার পুলিশ আসামী মো. বাচ্চু মিয়াকে গ্রেফতার করেছে। মামলার বাদী ইউনিয়ন সহকারী কর্মকর্তা মো. জামাল উদ্দীন বলেন, বালু উত্তোলনের দায়ে কুশিয়ারা নদীর পাড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এসব ভাঙন দিয়ে বর্ষা মৌসুমে বন্যা দেখাদিতে পারে। রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলনের দায়ে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের বিরোদ্ধে মামলা করা হয়েছে। একজন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।