আজ ২৩শে জুন গণভোট।
বৃটেনের ইতিহাসে এটি দ্বিতীয় গণভোট। আজকের ভোট ও ভোটের ফলাফল বৃটেনের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক মাইলফলক হয়ে থাকবে। আজ নির্ধারিত হতে যাচ্ছে ইউরোপীয়ান ইউনিয়নে বৃটেন থাকবে কি না।
এই গণভোটকে কেন্দ্র করে বৃটেনের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলি দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়ে অনেক আগেই। বিশেষ করে রক্ষণশীল দলীয় প্রধানমন্ত্রী কেমেরুণ ইউনিয়নে না থাকার পক্ষ ছেড়ে থাকার পক্ষে চলে আসার পর দলটিতে বড় আকারের বিভক্তি দেখা দেয়। শ্রমিক দল ও তাদের নেতা করবিন আগ থেকেই ইউনিয়নে থাকার পক্ষে কাজ করে আসছেন। পক্ষান্তরে রক্ষণশীলদের পক্ষে নেতৃত্বে্ আছেন প্রাক্তন লন্ডন মেয়র বরিস জনসন, মাইকেল গোব ও
অন্যান্যরা। শ্রমিক দলের মতে, যা গত সোমবারের টিভি বিতর্কে করবিন তার শেষ বক্তব্যে বলেছেন যে আমাদের ৩০ লক্ষ বৃটিশ চাকুরী যা ইউরোপের সাথে ব্যবসায় জড়িত, সেগুলো রক্ষা করতেই হবে। শুধু তাই নয় আমাদের নিশ্চিত রক্ষা করতে হবে পিতৃছুটি এবং সর্বনিম্ন সবেতন ছুটি যা ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন নিশ্চিত করে। এবং এ জন্য আমাদের প্রানপণ চেষ্টা চালাতে হবে ইউনিয়নে থাকার পক্ষে।
অন্যদিকে ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে আসার পক্ষে যারা তাদের বক্তব্য হলো, আমরা আমাদের ভবিষ্যত দেখবো। ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন কেনো আমাদের ভাগ্য নির্ধারণ করবে।
আমরা বছরে ১৮ বিলিয়ন পাউন্ড চাঁদা দেই শুধু ইউনিয়নে থাকার জন্য। ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে আসলে এই টাকা আমরা আমাদের চাহিদামত প্রয়োজনীয় খাতে ব্যবহার করতে পারবো। যারা ইউনিয়নে থাকতে চান তাদের নিজেদের দেশ পরিচালনার উপর ভরসা নেই তাই তারা ইউনিয়নে থাকতে চান।
এই আগাম বজ্রবৃষ্টি কোন ভোটের বাক্সকে জিতাবে এখন বলা মুশ্কিল।
আজকের এই গণভোটের দিনে প্রকৃতি বিপরীত হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত রাত থেকেই থেমে থেমে মৃদু বৃষ্টি আর ঠান্ডা হাওয়া, মানুষের ঘর থেকে বের হয়ে বাইরে যাবার মন মুড বসিয়ে দিয়েছে। রাতের বৃষ্টিতে ভোর হতেই দেখা যায় লন্ডনসহ দেশের দক্ষিন পূর্ব ইংল্যান্ড পানিতে সয়লাভ।
এমন খবরই দিয়েছে বিবিসি গণমাধ্যম। সুন্দর একখানা ছবিও তারা প্রকাশ করেছে। বিবিসি’র ওই খবরে জানা যায় গত রাত থেকে আজ ভোর পর্যন্ত কম হলেও ৪০০টি জরুরী সাহায্যের ফোন পেয়েছে দমকল বাহিনী। লন্ডন শহর এলাকায় বিকাল ৩টা থেকে রাত ১১টা অবদি বৃষ্টির আশংকা জানিয়ে নগর পুলিশ নাগরীকদের হুশিয়ার আর প্রস্তুত থাকার সংকেত জারী করেছে।
আবহাওয়া দপ্তর ৩৯টি বন্যা সতর্কবার্তা আর ৭টি হুশিয়ারী সংকেত জানিয়ে দিয়েছে। এসবই বিবিসি’র খবর।
এই আগাম বজ্রবৃষ্টি কোন ভোটের বাক্সকে জিতাবে এখন বলা মুশ্কিল। তবে চলাচলে যে প্রভুত বিঘ্ন ঘটিয়েছে তা নিশ্চিত। বহু জায়গায় রেল ও সড়কপথে চলাচল বন্ধ করা হয়েছে।
কিছু কিছু ভোট কেন্দ্রে বন্যার পানি ঢুকে ভোটে বিঘ্ন ঘটিয়েছে। ইউকে পাওয়ার নেটওয়ার্ক তাদের টুইটারে বজ্রপাতের কারণে বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্নের কথা জানিয়ে একটি দুর্লভ ছবি ছাপিয়েছে। ছবি খানা গেল রাত ৩.৩৯মিনিটে টুইটারে দেওয়া হয়।
বিবিসি রেডিও সলেন্ট, তাদের টুইটারে বটলি’র উইনচেষ্টার রোডের একখানা এমন ছবি দিয়েছে যা দেখলেই বুঝা যায় ঝড় বৃষ্টি যাতায়াতে কেমন বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে। মোটকথা, প্রকৃতি পরিবেশ যেনো ভোটের পক্ষে নয়। প্রকৃতিও মনে হয় চায় না বৃটেন ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে আসুক।