লণ্ডন।। মাস তিনেক আগে গত এপ্রিল মাসে শ্রমিক দল নেতা জেরেমি করবিন বলেছিলেন যেসব কাউন্সিলে বাস সার্ভিস সরকারী মালিকানায় আছে সেসব কাউন্সিলের ২৫বছর বয়সের কম যুবক-যবতিদের স্থানীয়ভাবে নিখরচায় বাসে চলাচলের ব্যবস্থা করে দেবে শ্রমিক দল, ক্ষমতায় গেলে।
শ্রমিক দলের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা ছিল যে এ খাতে যে অর্থ ব্যয় হবে তা আসবে যানবাহনের আবগারি শুল্ক থেকে। আর ওই খরচের হিসাব সর্বসাকুল্যে ১.৪ বিলিয়ন। তারা দেখিয়েছিলেন এর ফলে দেশের ১৩ মিলিয়ন অর্থাৎ ১কোটি ৩০লাখ ছেলে-মেয়ের বছরে ১হাজার পাউণ্ড খরচ কমবে মানে সাশ্রয় হবে।
করবিন তার বক্তব্যে দেখিয়েছিলেন ২৫নিম্ন বয়সের কিশোর-কিশোরীদের আয় খুব কম। তাদের কাজেরও নিরাপত্তা খুবই কম। এর উপরে এরা তাদের আয়ের একটি বিরাট অংশ ব্যয় করে ভ্রমণ বা যাতায়াতের উপর। এদের নিখরচায় বাসে চলাচলের সুবিধা দিলে তাদের জীবন প্রবাহে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে।
করবিনের সুরে সুর মিলিয়ে তখন ছায়া মন্ত্রীসভার যানবাহন সচিব এন্ডি ম্যাকডোনাল্ড বলেছিলেন আমরা অতীতের মিউনিসিপাল বাস কোম্পানী ব্যবস্থাকে ফিরিয়ে আনবো ক্ষমতায় গেলে। তিনি আরও বলেছিলেন আমরা স্থানীয় সরকারগুলোকে উৎসাহিত করবো তাদের নিজ নিজ এলাকার বাস সেবাকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়ার জন্য। এতে করে তারা তাদের কিশোর-কিশোরী এমনকি বয়স্কদেরও আরো বেশী নিরাপদ সেবা দিতে সক্ষম হবেন।
বিপরীতে সরকারী দল রক্ষনশীলদের(টোরি) পক্ষ থেকে একটু ব্যাঙ্গ করে বলা হয়েছিল, শ্রমিক দল নতুন করে আরেকটি প্রতিশ্রুতির কথা শুনালো যা করার তাদের কোন ক্ষমতাই নেই। টোরিদের ভাষায়- অনেক কাউন্সিল বাস যোগাযোগ সেবাকে বহু আগেই ‘ফ্রেন্সাইজ’ করে বিশেষ সুবিধায় ছেড়ে দিয়েছে।
ইংল্যাণ্ডে বাসভাড়া প্রতি বছরই গড়ে ২.৯% হারে বাড়ে। ২০১৭ সালে, বছর শেষের হিসেবে দেখা গিয়েছিল আগের একবছরের তুলনায় মানুষের যাতায়াত গড়ে ১.৫% যার পরিমাণ ৭কোটি কমে গিয়েছে। আর এখান থেকেই এই আলাপের সূত্রপাত হয়েছিল।
ক্ষমতায় গেলে কে কি দিতে পারবেন এমন কথার প্রতিযোগীতায় সেদিন রক্ষণশীলদের পক্ষ থেকে তাদের যানবাহন মন্ত্রী নূসরাত ঘানী শ্রমিকদলকে লক্ষ্য করে ব্যঙ্গোক্তি করেছিলেন- গেল নির্বাচনে শ্রমিক দল অনুরূপ একটি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছিল তারা ক্ষমতায় গেলে ছাত্র-ছাত্রীদের সকল ঋণ তারা দিয়ে দেবে। শেষে তারাই বলেছিল এটি করতে অনেক কিছু ঘাটাঘাটি করতে হয়, খরচও অনেক। আর এখন নতুন করে আমাদের যুবক-যুবতীদের একটি ফাঁকা প্রতিশ্রুতির ঘুষ দিচ্ছে।
এখানে লক্ষ্যনীয় বিষয় হলো, ক্ষমতাশীনগন অনুন্নত দেশের রাজনৈতিক নেতাদের মত বিরুধীদের শুধু বিরুধীতাই করে গেলেন। কিন্তু ক্ষমতায় থেকেও তারা এ বিষয়ে কি করবেন তার কিছুই উল্লেখ করেননি!