মুক্তকথা: শনিবার, ৩রা সেপ্টেম্বর ২০১৬।। মোঃ জয়নুল আবেদীন রুজ গত ১লা সেপ্টেম্বর তার ফেইচবুকে লিখেছিলেন চমৎকৃত হবার মত এই খবরটি। কথায় আছে না “if there is will, there is way” যার অপূর্ব বঙ্গানুবাদ হল- “ইচ্ছা থাকিলে উপায় হয়”। মানুষ কি-না করতে পারে। মানুষই সব পারে আর এ দুনিয়ায় যা কিছুই হচ্ছে কিংবা হবে মানুষই তো সব করছে এবং করবে। মানুষই গড়ছে আবার মানুষই ভাঙ্গছে। মানুষ! সব কিছুতেই এই মানুষ। স্বর্গ কিংবা নরক থেকে কেউ আসেনা, আসেনা কেউ ভিন গ্রহ থেকে। সবই এই মানুষের অঙ্গিকার। রোজের ফেইচবুকে খবরটি দেখে মুগ্ধ নয়নে ছবির দিকে তাকিয়ে ছিলাম বেশ কয়েকমূহুর্ত। ছবিটি তেমন আকর্ষণীয় ছিল না সত্য কিন্তু আমার চোখে খুব তেজোদ্বীপ্ত ছিল চেহারাটি। আমার মনে হয়েছে মানুষটি মনের দিক থেকে এতোই ক্ষমতাবান যে তার সেই সংকল্প থেকে কোন কিছুই তাকে সরিয়ে আনতে পারবে না। দিব্য চক্ষে,ওই চেহারায় গড়িয়ে পড়তে দেখেছি তীব্র এক অঙ্গিকারের দৃঢ়তা।
জয়নুল আবেদীন রুজ তো আর সাংবাদিক নন কিংবা তিনি মনে হয় লিখা-লিখির সাথে খুব একটি সম্পৃক্তও নন। তাই অত্যন্ত সংক্ষেপে বিষয়টি তার ফেইচবুকে লিখে দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন দৃঢ়চেতা ওই যুবকটির মনের জোর অবলোকন করে, নিজের মনের দিক থেকে খুশীতে আত্মহারা হয়ে। না হলে, নাম দিতে ভুল করতেন না। তবে নিজের নাম ফলাতে আমরা যে বাহাদূর তা আবারো তিনি জাহির করেছেন, খুবই সগৌরবে নন্দিত ওই মানুষটির ছবির পাশে নিজের ছবিটিকে বড় করে ফেইচবুকে দিয়ে। বড় করে নিজের ছবি দিতে ভুল তিনি করেননি!
রোজ তার ফেইচ বুকে লিখেছেন- “ছবিটির কেন্দ্রবিন্দুতে যিনি আছেন তিনি একজন রিকশাচালক। বাড়ি সিরাজগঞ্জ। তবে অন্য রিকশাচালক থেকে তার পার্থক্য হল তিনি ঢাকা এসেছেন জীবিকার্জন এর জন্য নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য। ভর্তি ফরমের টাকা যোগাড়ের জন্য চালাচ্ছেন রিকশা।
রিকশা চালানোর জায়গা হিসাবে বেছে নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেই। তিনি কারো কাছে সাহায্য চান না, চান একটু দোয়া যেন মেধাতালিকায় তার স্থান হয়। সালাম জানাই এমন আলোকিত মানুষকে।”
রোজের সাথে কন্ঠ মিলিয়ে আমিও দেশের আগামীর এই সাহসী সন্তানকে জানাই শত কন্ঠে আওয়াজ তুলে অভিনন্দন! অভিনন্দন হে নবপ্রজন্ম! দেশ তোমাদেরই অপেক্ষায়। তোমরাই পারবে কবির কথার সেই অদ্ভুত উটের পিঠ থেকে দেশকে টেনে নামিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে।